শহর জুড়ে যানজট তো আছেই। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হকারদের দৌরাত্ম্য। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরে ঢোকার মুখের প্রধান রাস্তার দু’পাশ দখল করেছে হকারেরা। ফল, সব্জির পাশাপাশি চলছে পান, বিড়ি, আর চায়ের দোকানের বিকিকিনি। আর কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের পাশের ফুটপাথ দখল করে তৈরি হয়েছে সাইকেল-গ্যারাজ, তেলেভাজার দোকান। রাস্তার উপরেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে রিকশা আর ভ্যান রিকশা। রাস্তার অন্য দিকে, রাস্তার উপরেই দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাকও। ফুটপাথ বেদখল হওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধার পাশাপাশি ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে। বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা ক্রেতার নজর কাড়তে এক অভিনব পন্থা নিয়েছেন। দোকানের সামনের ফুটপাথে দোকানের জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখেন তাঁরা।
হকারের হাত থেকে রেহাই নেই হাসপাতাল চত্বরেও। কান্দি মহকুমা হাসপাতালের সামনের রাস্তা জুড়ে শুধু পান-বিড়ির দোকানই নয়, রয়েছে জুতো, ফার্নিচার, সাইকেলের গ্যারাজও। সিডি-ক্যাসেট বিক্রি করতে হকারেরা হাসপাতালের সামনেই দিন রাত গানও বাজাচ্ছেন। হকারদের রমরমা বিমলচন্দ্র শিশু উদ্যানের সামনেও। শহরের এক বাসিন্দা প্রণব সরকার বলেন, “হকারদের জন্য শহরের রাস্তা ঘাটে যানজট বাড়ছে। পুরসভা কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে পার্ক, হকারদের রমরমা সব জায়গাতেই।” |
কান্দি ফল ও সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নুরুল ইসলাম অবশ্য হকারদের জবর দখলে মানুষের সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “প্রচুর বেকার ছেলে হকারি করে সংসার চালায়। যদি তাদের উচ্ছেদ করতেই হয়, তবে বিকল্প ব্যবস্থাও করে দিতে হবে প্রশাসনকে।” কান্দি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারকনাথ প্রামাণিক বলেন, “রাস্তা দখল করে ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে ঠিকই। তবে অনেক বড় ব্যবসায়ীও নিজেদের দোকানের সামনের রাস্তায় অন্য ছোট ব্যবসায়ীকে জিনিসপত্র বিক্রি করার অনুমতি দিচ্ছে। বিনিময়ে টাকা নিচ্ছে। প্রশাসনকে বহুবার জানানো হয়েছে। বৈঠকও করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই তো হয়নি।” কান্দির পুরপ্রধান কংগ্রেসের গৌতম রায় বলেন, “রাস্তা দখল মুক্ত করতে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। কাউন্সিলররাও বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। মহকুমাশাসককে আমি জানিয়েছি। আমরা আমাদের তরফে সব রকম ভাবে সাহায্য করব।” কান্দির মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এক বার ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। চলতি মাসেই বৈঠক করে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তা দখলমুক্ত করা হবে।” |