চাষের দেরি, নভেম্বরেও বাজারে নেই নতুন আলু |
শীত নামছে। বাজারে নতুন ফুলকপি উঠে গিয়েছে। কিন্তু নতুন আলুর দেখা নেই। আলু রসিক উত্তরবঙ্গের বাঙালির তাই মন খারাপ। অকাল বৃষ্টির কারণে এ বার উত্তরবঙ্গে নভেম্বরেও নতুন আলুর দেখা নেই। চাষিদের হিসাব, বাজারে নতুন আলু আসতে ডিসেম্বর গড়িয়ে যাবে। হিমঘরের আলু বেশি মিষ্টি হওয়ায় তা মুখে দিতে রোচে না। নতুন আলু হিসাবে বাজারে ভুটানের আলু এসেছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের নিজস্ব আলুর স্বাদ বাঙালি পাচ্ছেন না ভুটানের আলুতে। ফলে শীত নামলেও আলু বিনা জমছে না উত্তরবঙ্গের বাঙালির।
উত্তরবঙ্গের মধ্যে আলু উপাদনে অন্যতম ফালাকাটা ও ধূপগুড়ি ব্লক। ধূপগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক দেবাশিস সর্দার বলেন, “আলু চাষের জন্য জলীয় পদার্থ বিহীন ঝুরঝুরে মাটি প্রয়োজন হয় শুরুতে। তবে অকাল বৃষ্টির জন্য দু’সপ্তাহের বেশী চাষাবাদ পিছিয়ে যায়। ফলে এবার স্থানীয় নতুন আলুর দেখাটা দেরিতে মিলবে।” ফালাকাটা ব্লক কৃষি আধিকারিক আবু বক্কর সিদ্দিকির মতে, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বাজারে নতুন আলু দেরিতে এলেও তেমন বেশি পরিমাণে এবার মিলবে না বলে তিনি মনে করছেন। তাঁর কথায়, “আগে পাট চাষ করে অনেকে আলু চাষ আরম্ভ করতেন। তবে এবার জমি কোন ভাবে না ফেলে রেখে বেশীর ভাগ চাষি ধান চাষ করেছেন। ফলে আগে যে পরিমাণ আলু বাজারে আসত এবার খুব অল্প পরিমাণ নতুন আলু বাজারে আসবে। কেননা, ধান কাটার পর তাঁরা আলু চাষ করবে।”
ফালাকাটা ব্লকের ময়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত ও ফালাকাটা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিচ্ছিন্ন ভাবে এবার আলু চাষ করছেন অনেকে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত জমিতে জল দাঁড়ায় না সে জমিগুলিতে আগেভাগে আলু চাষ করার রীতি আনেক দিন ধরে চলে আসছে। নতুন আলু বাজারে নিয়ে এলে যে দাম মেলে তাতে লাভের অংশ অনেকটা ভাল পায় কৃষকরা। তবে আলু বোনার জন্য জমি উপযুক্ত করলেও সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টিপাতে পিছিয়ে আসতে হয় কৃষকদের। আলু চাষ ১৫-২০ দিন পিছিয়ে যায়। ফলে নতুন আলুর দেখা মিলবে ডিসেম্বরে বলে মনে করছেন কৃষি আধিকারিকরা।
আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় আলুর দাম যেখানে বাজারে ৬-৭ টাকা সেখানে ভুটান-আলু ২৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। হিমঘর থেকে বাজারে আসায় সে আলুতে মিষ্টতা থেকে যাচ্ছে। ধূপগুড়ি আলু ব্যবসায়ী সমিতি সদস্য স্বপন দত্তের কথায়, “বৃষ্টির কারণে নতুন আলু বাজারে আসতে এ বার দেরি হচ্ছে। সে সময় ভিন দেশের আলু না খেয়ে স্থানীয় কৃষকদের দিকে তাকিয়ে ৫-৬ দিন বাড়িতে রাখার পর তা খেলে ভুটানের মত স্বাদ মিলবে। নতুন আলু বাজারে আসার আগে ক্রেতারা ওই পুরনো আলু খান সেটাই আমরা চাইছি।” |