নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দলীয় কোন্দলের জেরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। প্রায় দেড় মাসের মাথায় রবিবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ফের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা জানালেন নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মঙ্গলি ওঁরাও-সহ ৪ জন। তাঁদের মধ্যে ২ জন মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যও রয়েছেন। ওই মহিলা সদস্য দলে ফেরায় নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে আশাবাদী কংগ্রেস। এ দিন দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সম্পাদকদের অন্যতম তথা কাউন্সিলর সুজয় ঘটকের হাত থেকে দলীয় পতাকা গ্রহণ করে দলে ফেরার কথা জানান তাঁরা। তাতে নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ১৮ টি আসনে কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয়ের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৬ টি করে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এবং সিপিএমের রয়েছে ৩ করে আসন। যদিও পঞ্চায়েত সমিতি বা মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েত উভয় ক্ষেত্রে এখনও বাম বিরোধী জোটের পুরনো বোর্ডই রয়েছে।
মঙ্গলির সঙ্গে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আরও ৩ জন যাঁরা কংগ্রেসে ফিরলেন তাঁরা নকশালবাড়ির মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্য সমীর খেড়ওয়ার এবং অজিত চিকবরাইক। অপর জন লোধিন রায়। লোধিনবাবুর নেতৃত্বেই এ দিন তাঁরা কংগ্রেসে যোগ দেন। |
তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে ফিরলেন নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির
এক সদস্যা-সহ ৪ জন। রবিবার ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
সুজয়বাবু বলেন, “দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ওই সদস্যরা দল ছেড়েছিলেন। পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাঁরা যোগাযোগ করেন। তাঁদের দলে স্বাগত জানানো হয়েছে।” লোধিনবাবু জানান, জেলা নেতৃত্বের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁরা দল ছেড়েছিলেন। তিনি বলেন, “পরে বুঝতে পারি কাজটা ঠিক হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নিজেদের মধ্যেই কোন্দল রয়েছে। সেখানে আমাদের সমস্যার সুরাহা হওয়া মুশকিল। তাই ফের দলে ফিরলাম।”
নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেসের ৯ জন, তৃণমূলের ৩ জন সদস্য ছিলেন। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ৩ জনকে নিয়ে জোটের তরফে বোর্ড তৈরি হয়। বিক্ষুব্ধ ব্লক কংগ্রেস নেতা অমর সিংহের নেতৃত্বে গত ১৬ অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দেন নকশালবাড়ি ব্লক কংগ্রেসের একাংশ নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সরোজা তামাং-সহ ৪ সদস্য। তাতে ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ টি। কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা হয় ৫ টি। পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠ হয়। যদিও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বোর্ড গঠন করতে এখনও উৎসাহ দেখায়নি তৃণমূল। তাতে পুরনো বোর্ডই রয়েছে। এ দিন এক সদস্য ফের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয়ের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৬ জন করে। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি শীঘ্রই আরও এক-দুই জন দলে যোগ দিতে পারে বলে তাঁরা আশাবাদী। বর্তমানে নকশালবাড়ির তৃণমূল নেতা অমরবাবু জানান, পঞ্চায়েত সমিতির ওই সদস্য-সহ ৪ জন কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন বলে তিনি জানতে পারেছেন। তিনি বলেন, “কী কারণে ওই সদস্যরা ফের কংগ্রেসে ফিরেছেন খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬ টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের সদস্য ছিল না। কংগ্রেসের দখলে ছিল ৭ টি। ২ টি করে সদস্য ছিল বিজেপি এবং আদিবাসী বিকাশ পরিষদের। ১টি করে আসন সিপিএম এবং কেপিপি’র। মোর্চার দখলে ছিল ৩টি। কংগ্রেস, মোর্চা, কেপিপি এবং আদিবাসী বিকাশ পরিষদকে নিয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত বাম বিরোধী জোটের দখলে ছিল। ৬ জন সদস্য কংগ্রেস ছেড়ে এবং ২ জন বিজেপি, ১ জন সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হয়। এ ক্ষেত্রেও তৃণমূলকে বাদ দিয়ে বোর্ড গড়তে এগোয়নি। তাতে পুরনো বোর্ডই রয়ে গিয়েছে। এ দিন তৃণমূল ছেড়ে ২ জন সদস্য কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, আদিবাসী বিকাশ বিকাশ পরিষদ এবং মোর্চাকে নিয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করতে চাইলে তারাও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না।
|
এলাকার বিধায়কের সংবর্ধনা সভায় সিপিএম থেকে ১২৫ জন কর্মী সমর্থকেরা কংগ্রেসে যোগ দিলেন। রবিবার আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়কে সংবর্ধনা দেয় ফালাকাটা ব্লক কংগ্রেস। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি স্বপন বসু বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে ওই সিপিএম কর্মীরা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।” পাশাপাশি, এ দিন সিপিএমের তরফে দাবি করা হয়, ওই ওই কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের দলের দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই। |