দ্বিতীয় সেতুর জন্য বিশেষ ছাড় চায় রাজ্য
কোলাঘাটে রূপনারায়ণের উপরে দ্বিতীয় সেতুর কাজ যাতে ব্যাহত না-হয় তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবে রাজ্য সরকার। কোলাঘাটে দ্বিতীয় সেতুর প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু তাদের এখনও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়নি। ফলে এখনও সেতুর মূল কাজে হাত দিতে পারেনি ওই সংস্থা। তাদের যাতে দ্রুত ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয় তার জন্যই দিল্লিতে এনএইচএআই-এর চেয়ারম্যানের কাছে আর্জি জানাবে রাজ্য সরকার।
কোলাঘাটে এই দ্বিতীয় সেতুর কাজ বস্তুত সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্পে ডানকুনি থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত মুম্বই রোডকে ছয় লেন করার কর্মসূচির অন্তর্গত। গোটা প্রকল্পের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। ‘বিল্ড, অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার’ (বিওটি) পদ্ধতিতে প্রকল্পটি রূপায়িত হওয়ার কথা। অর্থাৎ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ যে ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের ভার দেবেন, তারাই পুরো টাকা লগ্নি করবে। পরে টোল আদায় করে তারা রাস্তা তৈরির খরচ তুলে নেবে। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা এখনও পুরোদস্তুর কাজে নামতে পারেনি।
সম্প্রতি রাজ্যে জাতীয় সড়কগুলির বেহাল দশা নিয়ে মহাকরণে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছিল রাজ্য সরকার। শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন পূর্তমন্ত্রী সুব্রত বক্সী, যুবকল্যাণ মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, মুখ্যসচিব সমর ঘোষ এবং অন্য পদস্থ আমলারা। রাজ্যের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কের পাশাপাশি কোলাঘাটে রূপনারায়ণের উপর সড়ক-সেতু ঘিরে দীর্ঘ দিনের যে জটিলতা চলছে, তার নিরসনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
—নিজস্ব চিত্র।
বৈঠকে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা জানান, কোলাঘাটে পুরনো সেতুর পাশে প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সেতুর কাজ গত সাত বছর ধরে থমকে রয়েছে। পুরনো সেতুটির উপরে চাপ বাড়ছে। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা মুম্বই রোড দিয়ে যাওয়া গাড়ির ওই সেতু পার হতেই নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা একটি ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রাক-নির্মাণ কাজকর্ম শুরুও হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে তাঁদের ‘আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বোঝাপড়া’ সম্পূর্ণ না-হওয়ায় এখনও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া যায়নি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কী ভাবে তারা প্রকল্পের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা জোগাড় করবে প্রামাণ্য নথিপত্র দিয়ে গোড়াতেই তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়ার কথা ঠিকাদার সংস্থার। একইসঙ্গে ধুলাগড়ি এবং ডেবরায় যে দু’টি টোল প্লাজা রয়েছে সেগুলিও জাতীয় সড়ক সংস্থার পক্ষ থেকে ঠিকাদার সংস্থাকে হস্তান্তর করে দেওয়ার কথা। কারণ, এখান থেকেই ঠিকাদার সংস্থা রাস্তা তৈরির খরচ তুলবে। উভয়পক্ষের এইসব নথিপত্র খতিয়ে দেখে তবেই ‘আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বোঝাপড়া’ করা হবে। কিন্তু উভয়পক্ষের তরফেই সেইসব নথিপত্র জমা দেওয়ার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ঠিকাদার সংস্থার কর্তাদের দাবি, সব কাগজপত্র জমা দিয়ে ‘বোঝাপড়া’ সম্পন্ন করা কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাঁরা বিষয়টি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। একই বক্তব্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষেরও।
এর ফলে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বেরোয়নি। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তা জানান, মুম্বই রোডকে ছয় লেনে পরিণত করার বরাত পাওয়ার পরেই গত জানুয়ারিতে তাঁদের সঙ্গে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রাথমিক কিছু কাজ করা যাচ্ছে। সময় মতো ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বেরিয়ে গেলে ন’মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু বেশি দেরি হলে কাজ ফের ঝুলে যেতে পারে।
এই জট ছাড়াতেই সম্প্রতি মহাকরণের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ‘বোঝাপড়া’ সম্পন্ন হওয়ার আগে ‘বিশেষ ক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচনা করে শুধু মাত্র কোলাঘাট সেতুর জন্য যাতে পৃথক ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বের করা যায় তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানানো হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিব দিল্লিতে সংস্থার চেয়ারম্যানের কাছে এই আর্জি জানাবেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অনুরোধ রাখতে রাজি হন কি না, তার উপরেই আপাতত সেতুর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.