দেহ অন্ধ্রে গেল রাজ্যেরই বন্দোবস্তে
ভুয়ো সংঘর্ষেই খুন, সরব দীপা-ভারভারা
কিষেণজির দেহে ‘পুলিশি অত্যাচারের অজস্র চিহ্ন’ নিয়ে সরব হলেন মানবাধিকার কর্মীরা। শনিবার মেদিনীপুর হাসপাতালের মর্গ থেকে বেরিয়ে কিষেণজির ভাইঝি দীপিকা মুত্তেআলা (দীপা) এবং তাঁদের পারিবারিক বন্ধু তেলুগু কবি ভারভারা রাও এই অভিযোগ করেন। তাঁদের দাবি, “দেহ দেখে যে কেউ বুঝবে পুলিশ মিথ্যে সংঘর্ষের গল্প শোনাচ্ছে।” এ দিন একই অভিযোগ করেছেন কলকাতা থেকে মেদিনীপুরে যাওয়া একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। ফরওয়ার্ড ব্লকও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কিষেণজির মৃত্যুর বিষয়টি মানতে নারাজ।
দিল্লিতে ফব-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের অভিযোগ, “আমরা নিশ্চিত, কিষেণজিকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। কারণ, তাঁকে ধরা হলে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যেত।” স্বাধীন সংস্থাকে দিয়ে এর তদন্তের দাবি জানান তিনি।
রাজ্যের ভূমিকার প্রতিবাদে মেদিনীপুর থেকে কফিন-বন্দি দেহ অন্ধ্রপ্রদেশে নিয়ে যাওয়ার খরচ নিতেও অস্বীকার করেন ভারভারা-দীপারা। বলা হয়, কিষেণজিকে ‘ভুয়ো সংঘর্ষে’ খুন করা হয়েছে বলে মনে করেন, এমন অনেকে মিলে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়ার টাকা জোগাড় করেছেন। সেই মতো সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে কিষেণজির দেহ কলকাতায় আনা হয়। যদিও গোটা রাস্তা ভিআইপি-মর্যাদায় অ্যাম্বুল্যান্সটিকে ‘কভার’ করে হুটার বাজিয়ে কনভয় সাজিয়ে মেদিনীপুর থেকে কলকাতা বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। বিমানে ভারভারা-দীপা ও তাঁদের সঙ্গীদের অন্ধ্রে ফেরা ও দেহ নিয়ে যাওয়ার খরচ রাজ্যই বহন করেছে। যদিও বেশ কয়েক জন মানবাধিকার কর্মীর দাবি, ভারভারা বা দীপার ইচ্ছা নয় রাজ্য সরকারের টাকা নেওয়া। তাই বিমান ভাড়ার টাকা আলাদা তোলা হয়েছে। প্রশাসনের হাতে তা তুলে দেওয়া হবে।
এ দিন দীপাকে দিয়ে তাঁর কাকার দেহ শনাক্তকরণের সময় একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরাও ঢুকেছিলেন মর্গে। তাঁদের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র-ছাত্রীও ছিলেন। ছিলেন ভারভারার পরিচিত অন্ধ্র ও ওড়িশার কয়েক জন মানবাধিকার কর্মীও। দীপা অভিযোগ করেন, “সংঘর্ষ হয়নি। ওঁকে খুন করা হয়েছে। দেহে অজস্র আঘাতের চিহ্ন।” ভারভারা আগে অভিযোগ করেন কিষেণজিকে খুন করার আগে আটক করে অত্যাচার করা হয়েছিল। দেহ দেখার পরে সেই অভিযোগের ব্যাখ্যায় ভারভারা বলেন, “একটা গুলি কিষেণজির চিবুকের নীচে লেগে উপরের দিকে উঠে গিয়েছে। খুব কাছ থেকে গুলি না করলে এটা হয় না। সারা শরীর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পায়ের পাতার মাংস ঝুলে পড়েছে।”
‘শান্তি-স্থাপনে’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সদিচ্ছা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভারভারা। কলকাতা থেকে যাওয়া মানবাধিকার কর্মীরাও কিষেণজির দেহের ছবি তোলেন। বন্দি-মুক্তি কমিটি বা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির মতো কয়েকটি সংগঠন শীঘ্রই কিষেণজিকে ভুয়ো সংঘর্ষে খুনের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামতে চলেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ কিষেণজির দেহ বিমানবন্দরের কার্গো বিভাগে পৌঁছে দিয়ে ভারভারা-দীপারা বিমান ধরতে যান। বিমান ভাড়ার টাকা কোথায় দিতে হবে, খোঁজ-খবর করতে থাকেন মানবাধিকার কর্মীরা। বন্দি-মুক্তি কমিটির সম্পাদক অমিত ভট্টাচাযর্র্ বলেন, “আমরা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের হাতে টাকা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা তখন টাকা নিতে অস্বীকার করেছেন। আমাদের স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.