শীতের শুরুতেই বিপর্যস্ত পরিষেবা
মিলছে না তথ্য, রেলের অব্যবস্থায় দুর্ভোগে যাত্রীরা
থ্যের অধিকারের যুগে যাত্রীদের ন্যূনতম তথ্য জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছে ভারতীয় রেল।
শীত পড়তে না পড়তেই উত্তর ভারতের কুয়াশায় ভেঙে পড়েছে রেল ব্যবস্থা। বিপর্যস্ত যাত্রী পরিষেবাও। কোন ট্রেন কত দেরিতে চলছে, সেই তথ্যটুকুও যাত্রীদের কাছে পৌঁছতে ব্যর্থ দীনেশ ত্রিবেদীর মন্ত্রক। অথচ, রেলের একাধিক ওয়েবসাইট, ১৩৯ বা মেসেজ পরিষেবা রয়েছে। এগুলির একটিও কিন্তু যাত্রীদের সর্বশেষ তথ্য দিতে পারছে না।
চলতি সপ্তাহে আগ্রা থেকে কানপুর, নয়াদিল্লি থেকে চণ্ডীগড় উত্তর ভারতের প্রায় সব জায়গায় ট্রেন দেরিতে চলছে। কখনও কখনও দেরি হয়েছে ১৬-১৮, এমনকী ২৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। ট্রেন কখন ছাড়বে বা কখন পৌঁছবে সে বিষয়ে কোনও তথ্য মিলছে না। দীর্ঘ অপেক্ষার ফলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছেট্রেন চলাচল নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে যাত্রীদের মোবাইলে মেসেজ পরিষেবার কথা বলেছিল রেল। তার কী হল? যদি তা চালুই থাকে, তবে কেন যাত্রীদের সর্বশেষ তথ্য দেওয়া হচ্ছে না? এক রেল-কর্তার মন্তব্য, “ওই বিষয়ে যত কম বলা যায় ততই ভাল।”
১৩৯ নম্বরে ফোন করলে সর্বশেষ তথ্য না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্টেশনে অনুসন্ধান বিভাগ বা মাইকের সাহায্যে এত দিন যে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হত, তা-ও এখন জানাতে পারছে না রেল। যাত্রীদের একাংশের দাবি, স্টেশনে বসে থাকার চেয়ে কোন ট্রেন কত দেরিতে ছাড়বে, তা জানানো হোক। তাতে অন্তত প্রস্তুত হয়ে আসা যায়।
সম্প্রতি এই রকম অভিজ্ঞতা হয় দিল্লির সুস্মিতা চক্রবর্তীর। শিবগঙ্গা এক্সপ্রেসে করে নয়াদিল্লি থেকে বারাণসী যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় ট্রেন ছাড়ার কথা। রেলের সাইটে তিনি দেখেন ট্রেন ছাড়বে রাত দশটায়। সেই মতো স্টেশন পৌঁছন তিনি। তবে রাত সাড়ে দশটাতেও ট্রেন ছাড়েনি। অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে খোঁজ করেও সর্বশেষ তথ্য পাননি তিনি। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে সুস্মিতাদেবী জানতে পারেন ট্রেন ছাড়বে রাত বারোটায়। রাত সাড়ে বারোটায় বলা হয়, ট্রেন ছাড়বে রাত দু’টোয়। চল্লিশোর্ধ সুস্মিতাদেবী বলেন, “স্টেশন থিকথক করছে মানুষের ভিড়ে। ওয়েটিং রুম ভর্তি। বাধ্য হয়ে মালপত্র নিয়ে ওভারব্রিজের সিঁড়িতে বসে থাকতে হয়।” এখানেই শেষ নয়। রাত দু’টোয় জানানো হয় ট্রেন ছাড়বে সকাল আটটায়। বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। পরের দিন সকালে আটটার ট্রেন ধরতে আসেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ট্রেন ছাড়ে দুপুর বারোটায়।
প্রশ্ন হচ্ছে কোনও ট্রেন যখন এত দেরিতেই ছাড়বে তখন কেন তা প্রথমেই যাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? কেন তাঁদের অনির্দিষ্টকাল অপেক্ষা করতে হবে? রেল-কর্তাদের বক্তব্য, তাঁদের হাত-পা বাঁধা। কোনও ট্রেন কুয়াশার কারণে কত দেরিতে চলবে তা ঠিক হয় স্টেশন থেকে ওই ট্রেনের দূরত্বের সাপেক্ষে। সেই মতো ট্রেনের সময় জানানো হয়। কিন্তু বাকি পথে যদি কুয়াশা থাকে তবে আরও দেরি হয়। ওই ট্রেনের সামনে যদি একাধিক ট্রেন থাকে তা হলেও পৌঁছতে দেরি হয়। কিন্তু ৬ ঘণ্টা বলে ১৬-১৮ ঘণ্টা দেরির ব্যাখ্যা নেই কারও কাছে। তা হলে এ সব ক্ষেত্রে যাত্রীদের হয়রানি রুখতে ট্রেন কেন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে না? এক রেল-কর্তার বক্তব্য, “দীর্ঘ অপেক্ষার পরে ট্রেন বাতিল হলে যাত্রীবিক্ষোভ অনিবার্য।”
তবে শীতের শুরুতেই এই অবস্থা দেখে ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন রুটের ৩০টি ট্রেন (মূলত উত্তর ভারতের) বাতিল করেছে রেল মন্ত্রক। পরিবর্তন করা হয়েছে তুফান এক্সপ্রেসের যাত্রাপথও।
গোটা শীত বাকি। কুয়াশার কারণে এখনই যে ভাবে নাজেহাল হতে হচ্ছে, তাতে সামনে আরও কঠিন পরীক্ষা বলেই মনে করছে রেল মন্ত্রক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.