‘জন্মদিন’ গেল শুক্রবার। তবে আসল জন্মদিন নয়, টুইটারে জন্মদিন। গুটি গুটি পায়ে টুইটারে এক বছর পূর্ণ করলেন সুষমা স্বরাজ। নিজের নতুন ওয়েবসাইট নিয়ে খুব শিগগিরই নেট-দুনিয়ায় পা রাখতে চলেছেন তাঁর আরও এক সহকর্মী। অরুণ জেটলি।
টুইটারে সুষমা স্বরাজের এক বছর পূর্ণ হল শুক্রবার। সাত সকালেই টুইটারের পক্ষ থেকে এক বছরের জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা চলে এসেছিল। তাই দেখে ভোর থেকেই টুইটারের পাতায় জন্মদিনের শুভেচ্ছার ঢল। সংসদে যাওয়ার আগে টুইটারে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পেয়ে বিস্মিত সুষমা। বিভ্রান্তি দূর করলেন টুইট করেই। শুভেচ্ছা প্রেরকদের জনে জনে জানালেন, “আজ আমার জন্মদিন নয়। গত বছর ঠিক এই দিনেই আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট শুরু হয়েছিল। তাই টুইটারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে মাত্র।”
গত এক বছরে এই টুইটারের চক্করে কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি সুষমাকে। প্রথম দিকে ভালই চলছিল। সাংবাদিকদের জন্য একটা আলাদা অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন। রোজ হাজারো প্রশ্নের খোলাখুলি জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু বিতর্ক বাধল সিভিসি নিয়োগের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীকে ক্লিনচিট দেওয়াতে। দলের অবস্থান ছিল ঠিক উল্টো কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না প্রধানমন্ত্রীকে। ফলে বিজেপির সভাপতি নিতিন গডকড়ী প্রকাশ্যেই সুষমাকে সংযত হতে বললেন। তার পর থেকে টুইটারে অনেক সতর্ক লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী। আগের মতো ঝুঁকি নেন না। শুধু রোজকার মূল বিষয়গুলি জানিয়ে দেন।
সুষমা তো তা-ও টুইটারে সক্রিয়। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি কিন্তু টুইটার, ফেসবুক থেকে আজ পর্যন্ত সহস্র যোজন দূরেই থেকে এসেছেন। সচেতন ভাবেই। কিন্তু তাতেও নিস্তার নেই। তাঁর নামে টুইটারে নকল অ্যাকাউন্ট খুলে গিয়েছে। কেউ আড়াল থেকে পরিচয় লুকিয়ে জেটলির নামে দেদার মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন। দিল্লি পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছেন জেটলি। আদালতের অনুমতি নিয়ে মার্কিন মুলুক থেকে এখন সন্ধান চলছে, এর পিছনে কে?
ইন্দ্রজিতের মতো মেঘের আড়াল থেকে যিনি এত দিন জেটলির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার লড়াই চালিয়ে আসছিলেন, তিনিই এখন টুইটারে ক্ষমা চাইছেন। মামলা প্রত্যাহারের অনুনয় করছেন। কিন্তু জেটলি গত কালও বলেছেন, “আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। বিজেপির মধ্যেই কেউ এই কাজ করে থাকবে।”
কিন্তু টুইটারের মামলা যখন গুটিয়ে এসেছে, সেই সময় আবার এক বিপত্তি জেটলির দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। ক’দিন আগে ফেসবুকেও আর একটি নকল অ্যাকাউন্ট খুলে গিয়েছে জেটলির। সুতরাং ফেসবুক নিয়েও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু টুইটার-ফেসবুক থেকে দূরে থেকেও যখন ঝামেলা থেকে নিস্তার নেই-ই, তখন নিজেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর বক্তব্য শোনানোর জন্য কিছু একটা করার কথা ভাবছেন জেটলি। বেশ কিছু দিন আগে ‘অরুণ জেটলি ডট কম’ নামের ওয়েবসাইটটি মামলা করে নিজের নামে করেছেন জেটলি। ভাবছেন, সেই ওয়েবসাইটে এ বার নিজের যাবতীয় ভাবনা তুলে ধরবেন। জেটলি মনে করেন, কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে চটজলদি মতামত জানানো রাজনীতিকদের পক্ষে আদর্শ পথ নয়। সব বিষয়ের গভীরে গিয়ে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেই সুচিন্তিত মত জানানো উচিত। টুইটার, ফেসবুকের দুনিয়ায় সেটি সম্ভব নয়। জেটলির কথায়, “মাসে গড়পড়তা দু’তিনটি সাংবাদিক সম্মেলন করি। বিভিন্ন পত্রিকায় লিখি। সেগুলো এমনিতেই বিজেপির ওয়েবসাইটে আসে। এ বারে সেগুলো নিজের ওয়েবসাইটেও দেওয়া যেতে পারে।”
সাদা-কালোয় জেটলির একটি ছবি দিয়ে ওয়েবসাইটটি নতুন রূপে সাজার জন্য তৈরি। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিনেমার আদলে তাতে লেখা, “শীঘ্রই আসছে!” |