|
|
|
|
|
|
|
জমজমাট মেলা আর প্রদর্শনী |
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য |
শীতের আমেজ সঙ্গে নিয়ে এ শহরে এখন সারা দেশের হস্তশিল্পীরা। কাশ্মীরি শাল, বালুচরী, কাঁথা শাড়ি, ঢোকরার গয়না, কাঠের মূর্তি-আসবাব, টেরাকোটা, রাজস্থানি চিত্র, বস্তারের লোহার কাজ এমন অজস্র উপকরণ। কেনাকাটা তো আছেই, সঙ্গে সেরাইকেলার ছো, বাংলার বাউল, রণপা নাচ, রাজস্থানের কালবেলিয়া বা পুতুলনাচ এরাও তো নিজস্ব আবেদনে ভরপুর। চোখের সামনে শিল্পীদের কাজ দেখা এবং আচার, পাঁপড় বা গয়নাবড়ি কিনে বাড়ি ফেরা। এ সব নিয়েই বিধাননগরের ২নং ট্যাঙ্কের কাছে বিএসিএ মাঠে শুরু হয়েছে ‘কারিগর হাট’। |
|
ছবি: গোপী দে সরকার |
উদ্যোগ শিল্পীদের উন্নতির জন্য বছরভর ব্যস্ত সংস্থা ‘আর্ট ইলিউমিনেটস ম্যানকাইন্ড’ বা এইমস-এর, সঙ্গে বিধাননগর পুরসভা, ভারতীয় জাদুঘর, পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর। এ মেলায় চারশোর মতো শিল্পী এসেছেন। ওদের কেন্দ্রীয় ভাবনা ছিল কন্যাসন্তান ও লুপ্তপ্রায় হস্তশিল্পকে রক্ষা করা। এই লক্ষ্য সামনে রেখে হস্তশিল্প অভিনয় এবং সামাজিক অবদানের জন্য পাঁচজন কৃতী মহিলাকে সম্মান জানানো হয়। আর বাংলার বাউল নিয়ে ছিলেন জাপানি শিল্পী মাকি কাজুমি। হাট চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত, রোজ ১২-৯টা। এ দিকে পশ্চিমবঙ্গের হস্তশিল্পীদের সেরা মেলাটি শুরু হচ্ছে আগামী কাল, মিলনমেলা প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন জেলার ৪৫টি স্টল এবং তিন হাজার হস্তশিল্পীর উপস্থিতিতে এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে বাংলার প্রাণের স্পন্দন। থাকছে হস্তশিল্প নিয়ে আলোচনা, কর্মশালা এবং সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা। ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ অধিকারের এই মেলা চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ২ টা-সাড়ে ৮টা। সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অন্য দিকে আবার রয়েছে পুরাতত্ত্ব-স্থাপত্য। এমন সব স্থাপত্য নিদর্শনের এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী এখন চলছে বিবাদী বাগের কারেন্সি বিল্ডিং-এ, ১৯-২৫ নভেম্বর, ১০-৬টা। উপলক্ষ বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ, কলকাতা মণ্ডল ও ইনট্যাকের যৌথ উদ্যোগের এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার।
|
রক্তকরবী |
প্রথমে পরিকল্পনা ছিল নাটক, পরে ভাবনাটা বদলে ফেললেন মধুবনী চট্টোপাধ্যায়, নৃত্যনাট্যে মঞ্চস্থ করবেন ‘রক্তকরবী’। শুরু রাজার গল্প দিয়ে, সেই জালবদ্ধ রাজা। কোথাও একটা সেই রাজা-র সঙ্গে নিজের সাম্প্রতিক অতীতের সঙ্কটের মিল খুঁজে পান মধুবনী। সেই সঙ্কট থেকে শিল্পের হাত ধরে উত্তরণের চেষ্টাই ‘রেড ওলিয়েন্ডার্স’। আনন্দ লালের ভাষান্তর, সঙ্গীত পরিচালনায় মনোজ মুরলী নায়ার। গান কিন্তু অনূদিত হয়নি। কারণ শুধু কথায় সীমাবদ্ধ নয় গানগুলির আবেদন, জানাচ্ছেন মধুবনী। চমকে দেওয়া মঞ্চ তৈরি করেছেন সঞ্চয়ন ঘোষ, আলো জয় সেনের। কেন্দ্রীয় সরকারি অনুদানে অভিনয় জি ডি বিড়লা সভাগারে, ২৩ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। আয়োজনে ‘জাহ্নবী’।
|
|
নাট্যমেলা |
সরকারি নাট্যমেলা দশ পেরিয়ে এগারোয় পড়ল। পরিবর্তন কি এতেও, যা মঞ্চস্থ হতে চলেছে ২৩-৩০ নভেম্বর? “পরিবর্তন তো বটেই, এ বার জেলার নাট্যদলের উপর অনেক বেশি জোর। কলকাতা ছাড়া ১৬টি জেলা আসছে,” বলছিলেন নাট্য অ্যাকাডেমির সভাপতি মনোজ মিত্র। এ বার পূর্ণদৈর্ঘ্যের নাটক ৪৮টি, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ২৬টি, পথনাটক ৭টি এবং অন্তরঙ্গ নাটক ৪টি। এ বারই প্রথম অভিনীত হবে কয়েকটি অনুনাটক। থাকছে নাটকপাঠ, আলোচনা, বিতর্ক, নাটকের গানসহ নানা অনুষ্ঠান। প্রদর্শনীর বিষয় বাদল সরকার। ২৩ তারিখ রবীন্দ্রসদনে উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। উদ্বোধনী নাটক মিনার্ভা রেপার্টরি-র ‘দেবী সর্পমস্তা’। কলকাতা পর্যায়ের মেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠান রবীন্দ্রসদনেই। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনীত হবে অন্য থিয়েটারের ‘হ্যামলেট’। প্রকাশিত হবে স্মারকগ্রন্থও। অ্যাকাডেমির সচিব সৌরকুমার বসু জানালেন, দেবতোষ ঘোষের সম্পাদনায় নাট্য আকাদেমি পত্রিকা-র রবীন্দ্রসংখ্যাও প্রকাশিত হবে মেলায়।
|
মানসিক স্বাস্থ্য |
পশ্চিমবঙ্গের মানসিক রোগীরা কেমন আছেন? বিশেষ করে সেই সব রোগী যাঁদের মোটা ফি দিয়ে বড় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সাধ্য নেই? সংবাদ-মাধ্যমে মাঝে মাঝেই যে সব খবর উঠে আসে তার প্রেক্ষিতে এ কথা বলা যায় না যে সাধারণ মানুষ যে মানসিক চিকিৎসা পান তার মান খুব উঁচু। অথচ তিক্ত পরিহাসের ব্যাপার, স্বনামধন্য পাভলভপন্থী মনোরোগ-চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সারা জীবন সাধারণ-অসাধারণ সব মানুষের মনের অসুখের চিকিৎসা সযত্নে করেছেন। জন্মশতবর্ষে সেই ‘ধন্বন্তরি’কে শ্রদ্ধা জানাতে নাগরিক মঞ্চ আর মেন্টাল হেল্থ ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আজ ৫টায় গোর্কি সদনে সভা: ‘পশ্চিমবঙ্গের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা’।
|
বঙ্গবাসী ১২৫ |
মাত্র ছ’জন শিক্ষক আর বারোটি ছাত্র নিয়ে ১৮৮৫তে স্কুল গড়লেন বিলেত থেকে উদ্ভিদবিদ্যার ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষক গিরিশচন্দ্র বসু। ‘বঙ্গবাসী স্কুল’ ১৮৮৭-তে হল ‘বঙ্গবাসী কলেজ’। ১৯০৩-এ ১৯ স্কট লেনে নিজস্ব বাড়ি হল। সেই বছরেই ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে প্রকাশ পেল ‘বঙ্গবাসী কলেজ পত্রিকা’, যা নাকি বাংলায় প্রথম। ছাত্রদের মধ্যে নরেন্দ্রনাথ মিত্র, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সন্তোষকুমার ঘোষ, জগদীশ ভট্টাচার্য, যতীন দাস, মুজফ্ফর আহমেদ, পঙ্কজ মল্লিক, সলিল চৌধুরী, তুলসী লাহিড়ী, শিশির ভাদুড়ী, আরও কতজন। শিক্ষকদের মধ্যে ব্যোমকেশ চক্রবর্তী, ইন্দুমাধব মল্লিক, সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ (লর্ড) প্রমুখ। ২৭ নভেম্বর ১২৫ বছরে পা দেবে বঙ্গবাসী কলেজ। সেই উপলক্ষে ওই দিন সকাল ৯টায় কলেজে অনুষ্ঠান। ১১টায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে শিক্ষাবিদদের বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
|
রাই কৃষ্ণ পদাবলি |
অনুপ্রাণিত হন মধ্যযুগের কবিদের রচনা, বৈষ্ণব পদাবলি এবং ভানুসিংহের পদাবলি পড়ে। তা থেকেই রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-বিরহের কাহিনি নিয়ে লিখলেন ‘রাই কৃষ্ণ পদাবলী’। কবি বাংলাদেশের হাফিজুর রহমান। তাঁর রচনা নিয়েই দুই বাংলাকে মিলিয়ে দিল ‘সাতকাহন’। উপলক্ষ রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষ পূর্তি। তৈরি হল গীতিনাট্য ‘রাই কৃষ্ণ পদাবলী’। রূপায়ণে দুই বাংলার শিল্পীরা। গানে হৈমন্তী শুক্লা (সামগ্রিক তত্ত্বাবধায়কও), অন্তরা চৌধুরী, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ, কণ্ঠে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ ঘোষ, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ এবং নাচের নির্দেশনায় মহুয়া মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি সিডিটি প্রকাশিত হল রাগা মিউজিক থেকে। প্রকাশিত হল সাতকাহনের ওয়েবসাইটও।
|
জীবনী |
বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও ইতিহাসের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিছুদিন আগেই শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে আঞ্চলিক ইতিহাসের সেই বিশিষ্ট গবেষক সুধীরকুমার মিত্রের। ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে নতুন দুটি বই, গিরিশ পরিচয় ও প্রসঙ্গ রবীন্দ্রনাথ। নব কলেবরে মুদ্রিত হয়েছে তারকেশ্বরের ইতিহাস, দক্ষিণের দেবস্থান, বাংলার পাঁচ স্মরণীয় বিপ্লবী প্রভৃতি বই। তাঁর সব থেকে বিখ্যাত কাজ হুগলী জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ-এর পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশের অপেক্ষায়। ইতিমধ্যে বাংলা আকাদেমির ‘জীবনী গ্রন্থমালা’য় প্রকাশিত হচ্ছে সুধীরকুমার মিত্রের জীবনীগ্রন্থ, লিখেছেন আঞ্চলিক ইতিহাসের তন্নিষ্ঠ অনুসন্ধানী সৌমিত্রশংকর সেনগুপ্ত। ২২ নভেম্বর আকাদেমির বঙ্কিম পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এটি প্রকাশিত হবে। জীবনী গ্রন্থমালায় এই প্রথম কোনও আঞ্চলিক ইতিহাসকার ঠাঁই পেলেন।
|
মনের মানুষ |
...লালনকে এক বিস্ময় মনে হয়। সংস্কার আচ্ছন্ন বঙ্গ সমাজে যেন মহাশূন্য থেকে ঝরে পড়া এক ‘নূর’। পরিচালকের কথা-য় লিখেছেন গৌতম ঘোষ। লালনকে নিয়ে তাঁর ছবিটির চিত্রনাট্য প্রকাশ করেছে সিনে সেন্ট্রাল: গৌতম ঘোষের মনের মানুষ চিত্রনাট্য ইত্যাদি (সম্পা: নির্মল ধর)। মুদ্রণে পরিপাটি বইয়ে স্থিরচিত্রও ছাপা হয়েছে চমৎকার। সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও সুধীর চক্রবর্তীর রচনা, পরিচালকের সাক্ষাৎকারের সঙ্গে ছবি ঘিরে নানান লেখা। সংগ্রহযোগ্য সংকলন। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সন্ধিক্ষণে সিনে সেন্ট্রাল-এর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় উদ্বোধন করলেন শচীন ভৌমিক রচনাসমগ্র (দে’জ)। এ ছাড়াও সিনে সেন্ট্রাল-এর উদ্যোগে বেরিয়েছে পুরনো হিন্দি ছবির ছ’টি পিকচার পোস্টকার্ড (দীপক দে-র ডিজাইন)। অন্য দিকে উৎসব উপলক্ষে বেরল চলচ্চিত্র চর্চা-র (সম্পা: বিভাস মুখোপাধ্যায়) ‘শতবর্ষে কুরোসাওয়া’ সংখ্যা।
|
সামাজিক |
সল্টলেকের ছোট্ট এক সংস্থা ‘পরশ’। সদস্য মাত্র আট, সকলেই মহিলা। সমাজের পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত ও প্রতিবন্ধী শিশুদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটাতে চেষ্টা করেন ওঁরা। স্বাস্থ্যশিবির আয়োজন, বৃদ্ধবৃদ্ধাদের একাকীত্ব ভরা জীবনে কিছুটা সাহচর্য দেওয়া, এ সব নিয়েই পরশের ব্যস্ততা। সম্প্রতি সাইমন জাকারিয়া রচিত ও উপমহাদেশীয় সঙ্গীত ও নৃত্য প্রসার কেন্দ্র ‘সাধনা’ প্রযোজিত ওপার বাংলার একটি অপেরাধর্মী নাটক ‘সীতার অগ্নিপরীক্ষা’ মঞ্চস্থ করা হল। প্রধান ভূমিকায় চুমকি হাসান দাপুটে অভিনয় করেন। দর্শকদের মধ্যে ছিলেন ‘আশা নিকেতন’ বৃদ্ধাশ্রমের বরিষ্ঠ সদস্যরা। ‘প্রত্যূষ’ও শুরু হয়েছিল ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার আয়োজনে। ক’দিন পরেই সদস্যরা বুঝলেন, শিশুর মা-দিদিদের পড়াশোনা, তাঁদের প্রতি অবিচার-অত্যাচার রুখে দেওয়া, সবই কাজের পরিধিতে রাখতে হবে। এক দশকেরও বেশি এমন কাজের অভিজ্ঞতা জানালেন সংস্থার কর্ণধার অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী। সম্প্রতি ওদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন এক তরুণ শিল্পী, বৈশালী বাগচি। তবলাশিল্পী সৌমিত্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথক পরিবেশন করলেন ‘পরিক্রমণ’, কলামন্দিরে। বহু যুগ ধরে তালের বিবর্তন ফুটে উঠল অল্প পরিসরে।
|
নাট্য নেশা |
পেশা তাঁদের আলাদা, নেশা একঅভিনয়। নেশার টানেই গড়ে তোলা নাট্যগোষ্ঠী ‘অন্য পেশা নাট্য নেশা’। গত কয়েক বছর ওরা আয়োজন করছে দুই বাংলার নাট্যোৎসব। ওপারে বা এপারে। সম্প্রতি দু’টি পর্বে এ শহরে শুরু হল ‘অঙ্গীকার ২০১১’। প্রথম পর্বে জি ডি বিড়লা সভাঘরে রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বোন’ এবং ‘জন্মসূত্র’ মঞ্চস্থ করল বাংলাদেশের নাট্যদল ‘থিয়েটার ঢাকা’, সঙ্গে ছিল নাট্যগোষ্ঠীর নিজস্ব প্রযোজনায় নাটক ‘ভূশণ্ডির মাঠে’ এবং ‘একটি অবাস্তব গল্প’। নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী জানালেন, ২৫-২৬ নভেম্বর দ্বিতীয় পর্বটি অনুষ্ঠিত হবে সল্টলেকের ইজেডসিসি প্রেক্ষাগৃহে। সহযোগিতায় কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। মঞ্চস্থ হবে সুমন মুখোপাধ্যায়-এর ‘বিসর্জন’, শেখর সমাদ্দার-এর ‘গোরা’, একাঙ্ক ‘জুতা আবিষ্কার’ (দেবকুমার ঘোষ) এবং শ্রুতিনাটক ‘শেষের কবিতা’ (পাঠে চৈতি ঘোষাল, সুজয় চট্টোপাধ্যায়)।
|
উৎখনন নিয়ে |
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের জঙ্গলাকীর্ণ অংশে খুঁজে পাওয়া গেল বহু প্রাচীন এক সমাধিক্ষেত্র। ভূ-স্তরের মাত্র চার ফুট নীচের এই সমাধিটি, ঠিক হল, যেখানে যেমন আছে সে অবস্থায় সংরক্ষিত হবে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উৎখনন হয় ইতিহাস বিভাগের উদ্যোগে, বলছিলেন সেখানকার ইতিহাসের অধ্যাপক কে পি রাও। দেশের সাম্প্রতিক প্রত্ন-উৎখননের এমন অনেক চমকপ্রদ ঘটনা শোনা গেল সেন্টার ফর আর্কিয়োলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিং, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া-র ষোড়শ বার্ষিক অধিবেশনে। হাজির ছিলেন সারা দেশের ১৭ জন আমন্ত্রিত-সহ বিশিষ্ট প্রত্নতাত্ত্বিকরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ভাষণ দেন সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-এর নির্দেশক মিলনকুমার সান্যাল। উপস্থিত ছিলেন সেন্টারের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা বসু এবং ভাইস চেয়ারপার্সন শুভাপ্রসন্ন। বৈশালী, লাঠিয়া, বিদর্ভ, ফরমানা, কচ্ছ ইত্যাদি স্থানের সাম্প্রতিক উৎখনন নিয়ে নানা জন বলেন। বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের অনেক তথ্য তুলে ধরেন সুচিরা রায়চৌধুরি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বলেন এ এস আই-এর ডি জি গৌতম সেনগুপ্ত।
|
পঁচাত্তরে |
ধীরাজ চৌধুরীর
ছবি তুলেছেন
শুভব্রত নন্দী। |
জন্মভূমিটি এখন বিদেশ, এবং কর্মসূত্রে ছিলেন প্রবাসী। কিন্তু, একদা কলকাতায় সরকারি আর্ট কলেজের ছাত্র এবং এখন মহানগরীই তাঁর ঠিকানা। এই শহরেই শুরু হয়েছে তাঁর বিপুল একক প্রদর্শনী। উপলক্ষটি সানন্দ। পঁচাত্তর বছর পূর্তি। প্রশ্ন উঠবেই, বিশেষ কোনও মুহূর্তের কথা মনে পড়ে? উত্তরে তিনি, ধীরাজ চৌধুরী হাসবেন। বলবেন, পাহাড়ে ওঠার সময় শিখরের দিকে তাকাতে হয়। তারপর যখন আরোহণ শুরু হয়, তখন দিগন্তটা চোখের নাগালে ধরা দেয়। কম বয়েসে পাহাড়ে ওঠার চ্যালেঞ্জটা ছিল। সেটা পেরিয়ে আসার পরে দিগন্তের দিকে তাকিয়েছি, নিজেকে বিস্তার করার চিন্তা এসেছে। সন্দেহ নেই, তাঁর দিগন্তটি বিস্তৃত। বিদেশে মিরো এবং দালির সঙ্গে একই প্রদর্শনীতে কাজ দেখানোর বিরল কৃতিত্বই হোক, কিংবা দিল্লি কলেজ অব আর্ট-এ শিক্ষকতাকালে অজস্র শিল্পীর নির্মাণ! ‘মনের বয়েসটা বাড়তে দিইনি। উনিশ থেকে ছাব্বিশ, এই বয়েসের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম কলেজে, তাই হৃদয়ে বলিরেখা পড়েনি’, সহাস্যে জানাচ্ছেন ধীরাজ। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস জুড়ে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁর অনেকগুলি কাজের পাশাপাশি থাকছে এই সময়ের আরও অনেক শিল্পীর কাজ। ধীরাজেরই জন্মদিন উপলক্ষে ‘আর্টস নাইন্টি ওয়ান’ আয়োজিত একটি কর্মশালায় ছবি এঁকেছিলেন তাঁরা। সেই শিল্পভাষ্য নিয়েই মহানগরে সবার সঙ্গে জড়িয়ে তিনি বিরাজমান। |
|
|
|
নাট্যকর্মী |
কাল নিরবধি এবং পৃথ্বী বিপুলা একথা বলতে পারেন লেখক, বলতে পারেন চিত্রকর। কিন্তু আমরা অভিনেতারা তা পারি না। আমাদের জন্য নয় ভাবীকালের স্বীকৃতি।’ শম্ভু মিত্র লিখেছিলেন চতুরঙ্গ পত্রিকায়, ‘নবনাট্য আন্দোলনের ভবিষ্যৎ’ প্রবন্ধে। সেই কথাটিই যেন সত্য হয়ে উঠল আরও এক বার, তারাপদ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। এই শহরের মঞ্চ চার দশকেরও বেশি দেখেছে তাঁকে, ‘বহুরূপী’র নানা নাট্যে। কিন্তু সেই অভিনয় কতটা সংরক্ষিত হয়েছে? সমকালেও বা কতটা তার মূল্যায়ন হয়েছে সে প্রশ্ন আজ আরও বেশি করে উঠতেই। অথচ তারাপদ মুখোপাধ্যায় বাংলা নাট্যের ইতিহাসে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অভিনেতা। ১৯৬৫-তে ‘বহুরূপী’তে যোগ দেওয়ার আগেও, ছাত্রজীবন থেকেই অভিনয়ে সংলগ্ন তিনি। জন্ম ১৯৩৬-এ। কলেজ জীবনেও বেশ কয়েকটি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু যথার্থ প্রকাশ ‘বহুরূপী’র নাট্যেই। শম্ভু মিত্রের নির্দেশনায় ‘রক্তকরবী’, ‘পুতুলখেলা’, ‘রাজা অয়দিপাউস’, ‘রাজা’, ‘বাকি ইতিহাস’, ‘চোপ আদালত চলছে’-তে তাঁর অভিনয় স্মরণীয়। তৃপ্তি মিত্র, কুমার রায়, অমর গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশিত বহু নাট্যেও তিনি অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে ইতিহাস ‘মিস্টার কাকাতুয়া’তে তাঁর অভিনয়। বহুরূপী-র জন্য নির্দেশনা ‘ছাঁচ ভাঙা মূর্তি’, ‘ধৃতবানসি’, ‘পতি-পক্ষ’, ‘আয়না হরিণ’, ‘চৈতন্য’। কিছু টিভি ধারাবাহিকেও তাঁর অভিনয় ধরা আছে। ওঁর স্মরণে ‘বহুরূপী’র আয়োজনে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির তৃপ্তি মিত্র সভাঘরে সভা। বলবেন মনোজ মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, মেঘনাদ ভট্টাচার্য প্রমুখ। |
|
|
|
|
|
|
|