|
|
|
|
এএসআই অস্ত্রাগার হাতে নিল |
অরিন্দম সাহা • কোচবিহার |
বিজ্ঞপ্তি জারির দশ বছর পরে আগামী ২৪ অগস্ট রাজবাড়ির অস্ত্রাগার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়ার (এএসআই) হাতে তুলে দিতে উদ্যোগী হল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। ওই দিন কোচবিহার জেলা প্রশাসন এবং এএসআইয়ের প্রতিনিধিরা রাজবাড়িতে যাবেন। তাঁদের উপস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা অস্ত্রাগারের দরজা খোলা হবে। সেখানে প্রশাসনের দেওয়া তালিকা দেখে অস্ত্রসম্ভার বুঝে নেবেন এএসআই কর্তৃপক্ষ। কোচবিহারের জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “২০০০ সালে অস্ত্রাগার হস্তান্তরের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কোনও কারণে এতদিন তা কার্যকরী করা সম্ভব হয়নি। আগামী ২৪ অগস্ট এএসআই-র হাতে অস্ত্রাগারটি তুলে দেওয়া হবে।” এএসআই কলকাতা সার্কেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট তপনজ্যোতি বৈদ বলেন, “এক অফিসারের নেতৃত্বে সংস্থার একদল প্রতিনিধি অস্ত্রাগারের দায়িত্ব বুঝে নিতে কোচবিহারে যাবেন।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৮৭ সালে তৈরি কোচবিহার রাজবাড়ি ১৯৮২ সালে এএসআই অধিগ্রহণ করে। বাড়ির একটি ঘরে মজুত অস্ত্রের দায়িত্ব প্রশাসনের হাতে থেকে যায়। ২০০০ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অস্ত্রাগারটি এএসআই-র হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। নিরাপত্তার দায়ভার-সহ বিভিন্ন প্রশ্নে এতদিন তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে কয়েক দফায় আলোচনার পরে সম্প্রতি প্রশাসন এবং এএসআই-র কর্তারা হস্তান্তরের বিষয়ে জটিলতা মিটিয়ে নিতে সফল হন। অস্ত্রাগারের নিরাপত্তার জন্য পুলিশি নজরদারির সিদ্ধান্ত হয়। |
|
ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
কোচবিহার রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ত্রাগারে তলোয়ার, বন্দুক, কার্তুজ, হাত কামান, পিস্তল-সহ রকমারি অস্ত্র রয়েছে। রাজবাড়ির মিউজিয়ামে অস্ত্রগুলি রেখে তা সাধারণের দেখার জন্য ব্যবস্থা করার পরিকাঠামো আছে। কিন্তু হস্তান্তরের সমস্যার কারণে তা এতদিনেও সম্ভব হয়নি। তবে দেরিতে হলেও অস্ত্রাগার হস্তান্তরের খবরে খুশি আবহ তৈরি হয়েছে কোচবিহারে। দাবি উঠেছে মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণের প্রয়াণ শতবর্ষের দিন থেকে অস্ত্রাগারটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হোক। রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ প্রয়াত হন। স্থানীয় পুরাকীর্তি গবেষক দেবব্রত চাকি বলেন, “১৮ সেপ্টেম্বর নৃপেন্দ্রনারায়ণের প্রয়াণ শতবর্ষ পূরণ হচ্ছে। ওই দিন থেকে অস্ত্রাগারটি সাধারণের দেখার জন্য খুলে দিতে অনুরোধ করে এএসআই কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেব।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির কর্তা অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “অস্ত্রাগার হস্তান্তরের জন্য অনেক দিন থেকে দাবি জানানো হয়েছে। দেরিতে হলেও তা হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে।” কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ কোচবিহারের রূপকার। আমরা চাই মহারাজের প্রয়াণ শতবর্ষের দিনে অস্ত্রাগারের দরজা খুলে দেওয়া হোক।” |
|
|
|
|
|