বন্যার ভ্রূকুটি
উত্তরবঙ্গের দুই জেলায় সতর্কতা
নাগাড়ে বৃষ্টিতে মালদহ ও জলপাইগুড়িতে পরিস্থিতির অবনতি হল। বুধবার মালদহে গঙ্গায় লালসঙ্কেত জারি করা হয়। সেখানে বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। জল বাড়ছে ফুলহার ও মহানন্দায়। জলপাইগুড়িতে তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়িতে পাঙ্গা নদীর কাঠের সেতু উড়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। কোচবিহারে তোর্সা ও রায়ডাক এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার কুলিক, নাগর, সুই আর শ্রীমতী নদীতে জল বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতে তোর্সার তোড়ে সুভাষিনী চা বাগান সংলগ্ন ১৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। টানা বৃষ্টিতে দেওয়াল ধসে মঙ্গলবার রাতে গোয়ালপোখরের দোহাপাড়ায় সাত মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়। মৃতের নাম রোহিত আলম। ওই পরিবারটির তিন জন কমবেশি জখম হন।
বিরকিটি নদীর জলে প্লাবিত এলাকা। বুধবার ফালাকাটার জয়চাঁদপুরে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
এ দিকে মালদহে অবিরাম বৃষ্টিতে গঙ্গায় জলস্ফীতির জেরে বাঙ্গিটোলার সাকুল্লাপুরে ১০০টি, রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্রহ্মোত্তর গ্রামে ১০০টি, উত্তর লক্ষীপুরের সুলতানটোলার প্রায় ২০০টি পরিবার নিরাশ্রয়। জলস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সুব্রত মজুমদার বলেন, “গত ৫ বছরে গঙ্গার জলস্তর এত বাড়েনি। চরম বিপদসীমা অতিক্রম করায় সংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকেত জারি করা হয়েছে।” ফুলহারের জলস্ফীতির ফলে রতুয়ার কাহালার কাছে অস্থায়ী বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকে ১০টি গ্রাম প্লাবিত করেছে। রতুয়ার অসংরক্ষিত এলাকায় ফুলহার উপচে পড়ায় আরও ৫টি গ্রাম প্লাবিত। মরা কোশী, মরা কালিন্দ্রী, ফুলহার ও গঙ্গা একাকার হয়ে যাওয়ায় রতুয়ার মহানন্দাটোলা, বিলাইমারি পঞ্চায়েতে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি হিসাবে হরিশ্চন্দ্রপুর-২, রতুয়া-১, মানিকচক, কালিয়াচক-২, ও ৩ ব্লকের ২০ হাজার মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়েছেন। জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক তরুণ সিংহরায় বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকায় বানভাসিদের জন্য শুকনো খাবার দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। বিডিওদের সর্তক করা হয়েছে।” জলপাইগুড়ি শহরের নিচু এলাকায় করলার জল ঢুকে পড়ায় বহু মানুষ জলবন্দি। পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, শহরের অন্তত ৬টি ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার বাসিন্দা বুধবার পর্যন্ত জলবন্দি ছিলেন। কোচবিহার জেলার মধুপুরে ভাঙন কবলিত ২০ পরিবারকে এ দিন সরানো হয়। দক্ষিণবঙ্গে ঘনীভূত হওয়া নিম্নচাপ উত্তরবঙ্গে সরে আসায় গত রবিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি শহরে বৃষ্টি হয়েছে ২০৭ মিমি। তিস্তায় জল বাড়ায় রঙধামালি এলাকায় একটি স্পার বিপন্ন। জরুরি ভিত্তিতে সেটির মেরামতি চলছে। বুধবারও উত্তরবঙ্গের ৬ জেলাতেই দফায় দফায় বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জলপাইগুড়ি দার্জিলিং এবং কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সেচ এবং ত্রাণ দফতরের কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। সর্বত্র ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.