|
|
|
|
করলার জলে প্লাবিত শহরের ছয়টি ওয়ার্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বৃষ্টি চলছেই। তাতে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বুধবার জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০৭ মিলিমিটার। যা এই মরসুমের রেকর্ড। তবে জলপাইগুড়ি শহর ছাড়া আলিপুরদুয়ার, ধুপগুড়ি, সেবক, ফালাকাটা এলাকার বৃষ্টিপাত ৮০-৯০ মিলিমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বুধবার জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সুত্রে ২৪ ঘন্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও দার্জিলিং জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস। ভারী বর্ষণে এক দিকে শহর চিরে বয়ে যাওয়া করলার জল শহরে ঢুকতে শুরু করেছে, অন্যদিকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জমা জলে বাসিন্দারা বন্দি হয়ে রয়েছেন। জলপাইগুড়ি পুরসভা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে জলবন্দি বাসিন্দাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, শহরের অন্তত ৬টি ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দা বুধবার দুপুর পর্যন্ত জলবন্দি হয়েছিলেন। |
|
ছবি: সন্দীপ পাল |
শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর সংরক্ষিত এলাকায় লাল এবং অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি হয়েছে। শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিচপাড়া-সহ, মাসকলাইবাড়ি, দিনবাজার, হাসপাতালপাড়া এলাকায় করলা নদীর জল ঢুকে পড়ে। রায়কতপাড়া, মোহান্তপাড়া, কংগ্রেসপাড়া, মহামায়াপাড়ায় বৃষ্টির জল জমে এলাকা জলবন্দি হয়ে পড়ে। এই এলাকাগুলি ছাড়া অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টির জল জমলেও বুধবার দুপুরের পর থেকে জল নামতে শুরু করে দেয়। শহর লাগোয়া পাঙ্গা নদীর সেতু জলে ডুবে যাওয়ায় পাঙ্গা, বাহাদুর, গড়ালবাড়ি, চাউলহাটি এলাকার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। এদিন সকাল থেকেই পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু এবং ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত শহরের বিভিন্ন জলবন্দি এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন। পুর চেয়ারম্যান বলেন, “কয়েকটি ওয়ার্ডে নদীর জল ঢুকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিছু ওয়ার্ডে আবার বৃষ্টির জল জমে যায়। তবে পুরসভা সুত্রে সব এলাকাতেই ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের বেশির ভাগ এলাকায় জল জমেনি। রঙধামালি এলাকার তিস্তার বাঁধ ভেঙে শহরে বন্যা হবে এই গুজব ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। বাসিন্দাদের আশ্বাস দেওয়ার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছি।” জলপাইগুড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাশাসক ডোমা শেরিং শেরপা বলেন, “কী কারণে গুজব ছড়াচ্ছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। রঙধামালিতে দিনরাত ধরে স্পার মেরামতির কাজ চলছে। জলপাইগুড়ি শহরে তিস্তা নদীর জল ঢুকে বন্যার কোনও আশঙ্কাই নেই।” ঘটনা হল ১৪ অগস্ট রাতে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া রঙধামালিতে তিস্তা নদী বাঁধের একটি স্পার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্পারটির প্রায় ২০ মিটার নদীতে ভেসে গিয়েছে। গত রবিবার রাত থেকে ভাঙন শুরুর পর থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। মঙ্গলবারই সেচ দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তার পরেও রঙধামালির তিস্তা বাঁধ ভেঙে শহরে নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবারের মতো বুধবারেও একই গুজবে উত্তাল হয়েছে জেলা সদর। উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত বাসিন্দাদের টেলিফোনে পুরসভা থেকে প্রশাসন এমনকী, পুলিশও জেরবার। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি নিরঞ্জন সরকার বলেন, “অনেকের মুখেই বন্যার গুজবের কথা শুনেছি। আমি রঙধামালি গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্পারটি দেখে এসেছি। সেখানে দ্রুত কাজ হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|