আজ মনসা পুজো
চাষ ভাল হওয়ায় বিক্রি বেড়েছে হাঁসের
রা বৃষ্টিতে ভাল চাষ শুরু হওয়ায় এ বার পুরুলিয়ায় মনসা পুজোর বাজার জমে উঠেছে। গ্রাম-গঞ্জ থেকে পুরুলিয়া শহরের বাজারেও হাঁস বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। বুধবার ভরা বৃষ্টির মধ্যেও গৃহস্থরা ছাতা মাথায় ঘুরে ঘুরে হাঁস কিনেছেন। কারণ, দেবী মনসা’র নৈবেদ্যই যে হাঁস।
আজ বৃহস্পতিবার, শ্রাবণ সংক্রান্তির দিন মনসা পুজো। তবে, এই পুজোর আয়োজন শুরু হয়েছিল, কয়েক দিন আগেই। পুজোর রেশ চলবে আরও কয়েক দিন পর্যন্ত। অফিস-কাছারিতেও লোক-জনের যাতায়াত কম থাকবে। লোক গবেষক সুভাষ রায় বলেন, “পাহাড় জঙ্গলের এই এলাকার মানুষজন জীবিকার সন্ধানে ঘুরে বেড়াতেন। তাই তাঁরা বিশ্বাস করতেন, মা মনসাকে তুষ্ট করতে পারলে কোনও বিপদ হবে না। নৈবেদ্য হিসেবে মা মনসাকে হাঁস দেওয়া হয়। সেই প্রথা এখনও চলে আসছে।” আবার লোক গবেষক তপন পাত্রের কথায়, “মনসা লৌকিক দেবী। একে ঘিরে নানা লোক কাহিনীর প্রচলন রয়েছে। তৈরি হয়েছিল, মনসা মঙ্গল কাব্য। মনসা মঙ্গল গানের দলেরও এক সময়ে কদর ছিল।” লোক গবেষক ক্ষীরোদ মাহাতো মনে করেন, “টুসু উৎসবের মতোই মনসা মঙ্গলের আখ্যানকে ঘিরে সাহিত্য ও সংস্কৃতির যে ধারা তৈরি হয়েছিল, তা এখন অনেকটাই ক্ষীয়মান।”
পুরুলিয়া শহরের কোর্টমোড়ে সুজিত মাহাতোর তোলা ছবি।
তবে, মনসা পুজোকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি। এবারকার বাজার যে জমে উঠেছে হাঁস কিনতে আসা মানুষজনের শরীরী ভাষায় সে কথাই ধরা পড়ছিল। পুরুলিয়া মফস্সল থানার দোলদাঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা তারিনী রাজোয়াড়ের বাড়িতে মনসা পুজো হয়। পুরুলিয়া শহরের বড়হাট এলাকা থেকে হাঁস কিনে বাড়ি ফেরার পথে তিনি বলেন, “গত বছর ১২০ টাকা দরে প্রতিটি হাঁস কিনেছিলাম। এবার দাম বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েছে। বাড়ির পুজো বলে কথা। তাই কিনে নিলাম।”
কাশীপুর, বলরামপুর, ঝালদা, বড়টাঁড়, তালতলার মতো গঞ্জের হাটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে পুরুলিয়া শহরে। এখানে বড়হাটমোড়, কোর্টচত্বর, প্রশাসনিক ভবনের মোড়, হাটতলা রোড ছাড়িয়ে হাঁস কেনা-বেচা বাসস্ট্যাণ্ডের সামনে পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছে। হাঁসেদের প্যাঁক-প্যাঁক শব্দে সর্বত্র ভরে গিয়েছে। রাস্তাজুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের থিকথিকে ভিড়। হাঁস কিনতে এসেছিলেন মফস্সল থানার ছড়রা গ্রামের বাসিন্দা সুলোচনা মাহাতো, ঝাড়খণ্ডের চন্দনকিয়ারির লতা মাহাতোরা। লতাদেবী বলেন, “মায়ের পুজোয় হাঁস লাগবেই। তাই দাম যাই হোক না, হাঁস তো কিনতে হবেই।”
গত দু’বছর ধরে বৃষ্টির অভাব থাকায় কৃষকদের মুখ শুকনো ছিল। এবার সময়ে বৃষ্টি নামায় মাঠে ধান রোয়া হয়েছে। তাই, তাঁদের ধারণা, এবার মা মুখ তুলে তাকিয়েছেন। হাঁস কেনার বাজারেও তাই এবার তাঁরা ভিড় জমিয়েছেন। তবে, বাজারের এই ছবি সন্তুষ্ট করতে পারছে না হাঁস বিক্রেতাদের। পুরুলিয়া শহরের হাঁস বিক্রেতা ফণীভূষন গরাই, মহেশ্বর গরাই ও কাজল মিদ্যারা বলেন, “গত কয়েক দিনে আমরা কয়েকশো হাঁস বিক্রি করলেও তেমন লাভ হয়নি। বুধবার সকালে হাঁসের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত ওঠায় কিছুটা আশা জেগেছে।” তাঁদের প্রত্যাশা, আজ বৃহস্পতিবার হাঁসের দাম আরও চড়বে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.