|
|
|
|
ত্রাণ না পেয়ে বসিরহাটে বিক্ষোভ জলবন্দিদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বসিরহাট |
প্লাবিত এলাকা থেকে জল সরানো এবং ত্রাণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী এবং ছাত্রছাত্রীরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের খোলাপোতায় টাকি রোডে দু’টি ব্লক অফিসের সামনে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিডিও-র প্রতিনিধি গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বসিরহাট-২ ব্লকের চাঁপাপুকুর, রাজেন্দ্রপুর পঞ্চায়েত-সহ বিস্তীর্ম এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অভিযোগ, যত্রতত্র এবং অপরিকল্পিত ভাবে মেছোভোড়ি তৈরি করায় এবং নিকাশি নালা বন্ধ করায় বৃষ্টির জমা জল বিদ্যাধরী নদীত গিয়ে পড়তে পারছে না। তার ফলেই এই অবস্থা। পূর্ব ও পশ্চিম শীতলিয়া, মোমনপুর। চাঁপাপুকুর, রাজেন্দ্রপুর, দেবীপুর, বয়রাগাছি, নেওড়া, ঝিনকিয়া-সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। জলবন্দি হওয়ায় এলাকার পাঁচটি স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ। এ সবের প্রতিবাদেই এদিন শীতলিয়া গ্রাম থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং গ্রামের মানুষ বিডিওর কাছে আসেন। বিডিওকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরে তাঁরা রাস্তার উপরে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এর ফলে ওই রাস্তায় যান চলাচ বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা জানান, এলাকা থেকে জল বের করার ব্যাপারে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। |
|
জলে ডুবে পাটখেত। মছলন্দপুরের ফুলতলায় তোলা নিজস্ব চিত্র। |
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিদুল ইসলাম, রুহুল হাসান, মোমরেজ আলি বলেন, “এলাকার পুরোটাই চলে গিয়েছে এক হাঁটু জলের তলায়। প্রশাসনের নাকের ডগায় যত্রতত্র নিকাশি নালা বন্ধ করে মেছোভেড়ি তৈরির হওয়ার কারণেই আজ আমাদের এই দশা। জল সরাতে যাতে অবিলম্বে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয় সে জন্যই এই বিক্ষোভ।”
শীতলিয়া এসএসকে হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাকিনা খাতুন, সপ্তম শ্রেণির সাবানা খাতুন বলে, “স্কুলঘরে জল ওঠায় বেশ কয়েকদিন ধরে স্কুল বন্ধ। কেরোসিনও পাই না। আলোর অভাবে রাতে পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছে।”
বিডিও চাপসকুমার বিশ্বাস বলেন, “প্লাবিত এলাকা থেকে কী ভাবে জল সরানো যায় তা দেখতে আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। প্লাবিত এলাকার দুর্গতদের জন্য সাতটি ত্রাণশিবির খুলে তাঁদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।”
এদিকে, মঙ্গলবার স্বরূপনগরের দু’টি জায়গায় ইছামতী নদীর বাঁধ ভেঙে তরণিপুর, নিশ্চিন্দিপুর, পান্তপাড়া, বারঘরিয়া-সহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতির চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি বৃষ্টি না থামায় পলিথিন শিটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে প্রশাসন। বুধবার এই ব্লকের শগুনার ঘোলা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল অধিকাংশ বাড়িই কোমরসমান জলে ডুবে আছে। সর্বত্রই ত্রাণের জন্য মুখিয়ে আছেন দুর্গতেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা অলোক মণ্ডল, বিপুল রায় বলেন, “মূলত যমুনা ও পদ্মা খাল ও কঙ্কনা বাওড় সংস্কার না হওয়ার কারণেই ইচামতী নদী দিয়ে জল সরতে পারছে না। অবিলম্বে যমুনা ও পদ্মা খাল সংস্কার জরুরি। প্রশাসন এ ব্যাপারে শীঘ্র ব্যবস্থা না নিলে এলাকার মানুষ আন্দোলনে নামবেন।”
স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “ত্রাণশিবিরে দুর্গতদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে আরও পলিথিন শিটের প্রয়োজন। বিডিওকে তা বলা হয়েছে।”
|
|
|
|
|
|