বাবার বিরুদ্ধে মা’কে খুনের নালিশ ছেলের
মা’কে বাবা খুন করেছে বলে অভিযোগ করলেন তাঁদের বড় ছেলে। নবদ্বীপের মহীশূরা পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়ায় বুধবার সকালে বাঁশঝাড়ে ভেসে ওঠে ওই মহিলা কাঞ্চন সরকারের (৪০) দেহ। দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁর স্বামী প্রমোদ সরকারও নিখোঁজ। তাঁদের বড় ছেলে বাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, সোমবার সন্ধ্যায় মা’কে পিটিয়ে খুন করেছে তাঁর বাবা প্রমোদবাবু। তবে কাঞ্চনদেবীর দেহ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে পুলিশ এই ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি তখন। কিন্তু এই দিন কাঞ্চনদেবীর দেহ পাওয়ার পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। নবদ্বীপের আই সি হারাধন নন্দী বলেন, “বাবু সরকারে অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বাবা এবং কাঞ্চনদেবীর স্বামী প্রমোদবাবুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” কাঞ্চনদেবীর দেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে।
প্রমোদবাবু ও কাঞ্চনদেবীর দুই সন্তান। প্রমোদবাবু কাঠের কাজ করেন। বড় ছেলে বাবু সোনা রুপোর কাজ করেন। তিনি থাকেন রাজস্থানের জয়পুরে। মাঝে মধ্যে বাড়ি আসেন। বাবু বলেন, “প্রায় প্রতিদিন রাতেই মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে বাবা মা’কে মারধর করতেন।” তিনি জানান, এমনকী খেতে ডাকলেও মারধর করতেন, না ডাকলেও মারধর করতেন। বাবু বলেন, “হাতে যা পেতেন, তাই দিয়েই মারতেন মা’কে। রবিবার রাতে গোলমাল চরমে পৌঁছয়। আমি অবস্থা দেখে বাবাকে মারতে গিয়েছিলাম। বাবা তখন থমকে যান। তারপরে সোমবার সারা দিন বাড়ির পরিবেশ থমথমে ছিল। বিকেলের পর আমরা বাড়ির বাইরে যেতেই মা’কে একা পেয়ে যায় বাবা। আমার সন্দেহ, তখনই বাবা মা’কে প্রচণ্ড মারধর করে মেরে ফেলে।” তিনি বলেন, “চারদিকে বন্যার জল। তারই মধ্যে মায়ের দেহটা বাঁশঝাড়ে ফেলে দেয়। মায়ের চুলের সঙ্গে বাঁশঝাড় বেঁধে রেখেছিল। সেই দেহ ফুলে ভেসে ওঠে এই দিন।” তিনি জানান, সেই দিন ঘরের অবস্থা ছিল মারাত্মক। মায়ের কানের দুল শাড়ি সব ছত্রখান হয়ে পড়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। বিছানাপত্র ওলটপালট হয়ে পড়েছিল। বাবু বলেন, “সেই দেখেই আমার মনে হয়, বাবা ওই ঘরে মা’কে খুব মারধর করেছে। তারপর মরে গিয়েছে বুঝতে পেরে বন্যার জলে ফেলে দেয়।”
মঙ্গলবার সারা দিন ধরেই কাঞ্চনদেবীর দেহের সন্ধানে বিভিন্ন খাল বিলে জালও ফেলেছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। মহীশূরার উপপ্রধান তৃণমূলের পিন্টু ঘোষ বলেন, “বাবু প্রথম থেকেই বলছিল, ওর মা’কে মেরে জলে ফেলে দিয়েছে ওর বাবা। সেই মতো মঙ্গলবার বিভিন্ন জায়গায় আমরা তল্লাশি করেছি। গোটা গ্রামে সর্বত্রই জল। এই দিন ভোরে ওদের বাড়ির বাঁশঝাড় থেকে দেহ ভেসে ওঠার পরে বোঝা গেল বাবুর অভিযোগই ঠিক। ওর মা’কে মেরেই ফেলা হয়েছে।” তিনি বলেন, “কাঞ্চনদেবী খুব শান্ত মহিলা ছিলেন। তাঁর কোনও শত্রু ছিল না। তাই প্রমোদবাবু ছাড়া আর কে-ই বা তাঁকে খুন করবে।”
মহীশূরার বাসিন্দা রতন ঘোষ বলেন, “বাবুর বাবা খুব রগচটা ছিল। মদ খেয়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে খুব মারধর করতেন, আমরাও দেখেছি। তা ছাড়া, তিনি পালিয়েও বা গেলেন কেন। আমাদেরও মনে হয় প্রমোদবাবুই তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন।” স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষ্মণ ঘোষের বক্তব্য, “এই ভাবে পিটিয়ে কাঞ্চনদেবীকে মেরে ফেলা হবে, তা কেউই ভাবেননি। পুলিশের উচিত এখুনি বাবুর বাবাকে গ্রেফতার করা। গ্রামের লোক কিন্তু খুব ক্ষুব্ধ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.