বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও চাষে ক্ষতি পূর্বে
টানা বৃষ্টি ও জলাধারের ছাড়া জলে প্লাবিত হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ধান, পান, ফুল ও সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১৪টি ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এদের মধ্যে পটাশপুর-১, ভগবানপুর-১, ময়না, পাঁশকুড়া-১, কোলাঘাট এও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে ধান, পান, ফুল ও সব্জি চাষের ক্ষতি কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ দিকে, বুধবারও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিভিন্ন নদীর জলস্তর ধীরে ধীরে কমায় পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতি হয়েছে। তবে বিভিন্ন প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ ও পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।
কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, জেলার ১৪টি ব্লকে আউস ও আমন মিলিয়ে মোট প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমির ধান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ১৫৮৮৫ হেক্টর জমিতে আউস ধান চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে ৬৫৪০ হেক্টর জমির আউস চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ৮৪ হাজার ৯৩৩ হেক্টর আমন চাষের মধ্যে ২৫ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমির চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পটাশপুর ১, ময়না ব্লকে আমন ও আউস চাষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমন চাষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, নন্দকুমারে।
বন্যা পরিদর্শনে পটাশপুরে শিশির অধিকারী। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
আমন ও আউস চাষের পাশাপাশি, জেলায় পান, ফুল ও সব্জি চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা উদ্যান পালন দফতরের হিসাব অনুযায়ী জেলায় মোট ৫০০ হেক্টর জমির পান চাষ, ৭৮০ হেক্টর জমির সব্জি ও ১২০০ হেক্টর জমির ফুল চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে পান ও সব্জি চাষের মোট ক্ষতির পরিমাণ ২১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। দফতরের হিসাব অনুযায়ী তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, ময়না, নন্দকুমার, রামনগর ব্লক এলাকায় পান চাষ, পাঁশকুড়া ১, কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী, তমলুক ব্লকে ফুলচাষ ও পাঁশকুড়ায় সব্জি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বিমল নন্দী বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত পান, ফুল ও সব্জি চাষিদের সাহায্য দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।”
এ দিকে, বুধবারও জেলার প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে জানান পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা। তিনি বলেন, “পটাশপুর, ভগবানপুরে নদীগুলির জলস্তরে স্থিতাবস্থা রয়েছে। কিন্তু চণ্ডীয়া দিয়ে জল বের না হওয়ায় ময়নায় পরিস্থিতি বিপজ্জনক রয়েছে। একই ভাবে, পাঁশকুড়া, কাঁসাই ও ক্ষীরাই নদীর জল বের হচ্ছে খুবই ধীর গতিতে। ফলে এখনও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।”বুধবার পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাঁড়িতে বন্যার জল আসার আশঙ্কায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় বিপুলহাণ্ডা গ্রামের রাস্তা কেটে জল বের করায় মঙ্গলদাঁড়ি লাগোয়া কয়েকটি গ্রাম ডুবে যাবে। ওই রাস্তায় কাটা অংশ মেরামত করার দাবিতেই সড়ক অবরোধ করে কয়েকশো বাসিন্দা। পরে বিডিও গিয়ে আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। এ দিন বিকেলে পটাশপুরে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী ও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন। তাঁরা পটাশপুরের নৈপুর, গোকুলপুর, গোপালপুর এলাকার কয়েকটি গ্রাম নৌকায় পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া কেলেঘাই ও বাগুই নদীপথে নৌকায় নদীবাঁধগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখেন। পটাশপুর ১ ব্লক লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়েও কেলেঘাই নদীর জলে প্লাবিত কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখেন তাঁরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.