|
|
|
|
আজ মনসাপুজো ঘিরে উদ্দীপনা জঙ্গলমহলে |
কিংশুক গুপ্ত • ঝাড়গ্রাম |
জঙ্গলমহলের মূলবাসীর আরাধ্য মনসা কেবল সর্পদেবী নন, কৃষি-সমৃদ্ধির দেবীও বটে। কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িয়েই শ্রাবণ সংক্রান্তির মনসা পুজোর চল। আজ, বৃহস্পতিবার শ্রাবণ সংক্রান্তি। জঙ্গলমহলের শহর, গাঁ-গঞ্জ জুড়েই তৈরি হয়েছে মনসা পুজো ঘিরে উদ্দীপনা।
ফসলে সবুজ মাঠ। বর্ষণের দরুণ নদী, খাল-বিল জলপূর্ণ। লোকশিল্প ও সংস্কৃতি গবেষক সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, ভরন্ত এই সময়ে জঙ্গলমহলের মনসা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভাল ফসলের আকাঙ্ক্ষা। কয়েকশো বছর ধরেই এই পুজোর চল। শুরুতে প্রধানত সরীসৃপ ও কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষে মনসা পুজো করা হত বলে গবেষকদের একাংশের মত। ক্রমে বিপদনাশের পাশাপাশি, কৃষির সমৃদ্ধি-প্রার্থনায় গৃহস্থ বাড়িতে ঘটা করে বিষহরির আরাধনা শুরু হয়। বাড়ির উঠোনে ‘সিজ’ (ফনি-মনসা জাতীয় ক্যাকটাস) পুঁতে সেই গাছের তলায় মনসা-থানে পোড়া মাটির হাতি ও ঘোড়া রেখে পুজো হয়। সুব্রতবাবু জানান, জঙ্গলমহলের লৌকিক পুজোয় মূর্তির চল নেই। তবে ইদানীং কিছু কিছু এলাকায় মূর্তিপুজোও হচ্ছে। |
|
কুমোরটোলায় দেবীপ্রতিমা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
শ্রাবণ সংক্রান্তির দিন পুকুর বা জলাশয় থেকে ঘট ভরে জল আনতে যান ‘দেহুরি’ বা পুরোহিত। অনেক পরিবারে গৃহকর্তা বা গৃহকর্ত্রীই ‘দেহুরি’ হন। দলবেঁধে গ্রামবাসীরা দেহুরির সঙ্গে জলাশয়ে যান। ফেরার পথে ‘সাখি’ গাইবেন দেহুরি। দেবী মনসাকে নিয়ে বাঁধা এ-সব গানে থাকে নানা ধাঁধা। পাল্টা গানে দেহুরির ধাঁধার জবাব দেন গ্রামবাসীরা। এর পর শালুক ফুল, চিঁড়ে-কলা-দুধ ও কালিয়াকড়া নামের একটি বিষফল দিয়ে নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবীর পুজো হয়। ১৬ প্রহরে ১৬ বার পুজোর সঙ্গে চলে জগৎগৌরীর (মনসার অপর নাম) বন্দনা-গান। যে পুজোয় বলি হয়, সেটি আমিষ পুজো। এমন পুজোয় পায়রা, হাঁস, ভেড়া, পাঁঠা বলি দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে। শ্রাবণ সংক্রান্তির বিকেলে ঝাঁপান-উৎসব হয়। সর্প-উপাসকরা গায়ে সাপ জড়িয়ে নানা ধরনের কসরৎ দেখান। তবে এখন বন্যপ্রাণ রক্ষা আইনের কারণে ঝাঁপান উৎসবের জাঁকজমক ততটা চোখে পড়ে না।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল থানার কুকড়াখুপি গ্রামের হারাধন নায়েকের বাড়ির পুজোয় বলি নেই। তবে বংশ পরম্পরার ঐতিহ্য মেনে ‘দেহুরি’ হারাধনবাবু বুক চিরে রক্ত দিয়ে মনসার পুজো করেন। জামবনির বড়শোল গ্রামে চারুবালা মাহাতোর বাড়ির পুজো নব্বই বছরের পুরনো। পুজো চলাকালীন পাঁঠা বলি দেওয়ার চল রয়েছে মাহাতো পরিবারের এই পুজোয়। বড়শোল ও আশেপাশের গ্রামের ৭০টি পরিবার এই পুজোয় আমন্ত্রিত। ঝাড়গ্রাম শহরের সুভাষপল্লি এলাকায় সিংহ পরিবারের প্রাচীন পুজো হয় শাস্ত্রীয় মতে। ফুটবল। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রবিবার এগরা-২ ব্লকের পিরিজখাঁবাড় স্টুডেন্টস ক্লাবের পরিচালনায় গঙ্গাধরবাড় হাসপাতাল মাঠে এক দিনের নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। জেলার মোট ৮টি দল যোগ দেয় প্রতিযোগিতায়। ফাইনালে বাসুদেবপুর অর্কিড ক্লাব ৩-০ গোলে বালিঘাই একাদশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। দিনের সেরা খেলোয়াড় ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন যথাক্রমে চরণ চক্রবর্তী ও তাপস মাজি। |
|
|
|
|
|