|
|
|
|
দু’সপ্তাহ আগেও সম্মানরক্ষার জায়গায় নেই যুবভারতী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ডেকরেটরের অসংখ্য বাঁশ আর টিনের শেড আগের মতোই রয়েছে বিশাল জায়গা জুড়ে। তবে গেটগুলোর জঞ্জাল সাফ হয়েছে কিছুটা।
গ্যারাজ, টায়ার, লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাস দখল করে রয়েছে স্টেডিয়াম চত্বর আগের মতোই। অবশ্য পরিষ্কার হয়েছে স্টেডিয়ামের পাশের কিছু জঙ্গল।
দুটো ডোবা থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। স্টেডিয়ামে ঢোকার মূল প্রবেশ পথ শুরু হওয়ার ডান দিকে ভাঙা টিন সার দিয়ে লাগানোও আছে। তবে প্রবেশ দ্বারের রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। মাঠের পাশের ট্র্যাকে বৃষ্টির জল জমে। তার মধ্যেই নতুন বারপোস্ট পোঁতার কাজ শুরু হয়েছে বুধবারই। দর্শকদের জন্য ২৮টি বাথরুম আর জলের ব্যবস্থা হলেও গ্যালারির অনেকাংশে শ্যাওলা জমা। একশো আসন বিশিষ্ট প্রেসবক্স, ৪৪ আসনের ভিভিআইপি বক্স, মিডিয়া রুম, ড্রেসিংরুম, টানেল ঢেলে সাজার চেষ্টা চলছে। |
|
মেসির জন্য যুবভারতীতে রঙের বাহার। ছবি: উৎপল সরকার। |
অব্যবহৃত স্কোরবোর্ড আছে আগের মতোই। স্টেডিয়াম চত্বরের কয়েকশো লরি জঞ্জালও রয়েছে। ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচের নিয়ম মেনে টিভি সম্প্রচারের স্ট্যান্ড কিন্তু তৈরি হয়ে গিয়েছে।
লিওনেল মেসি-র হাইপ্রোফাইল আর্জেন্তিনা টিম অনুশীলনে নামার তেরো দিন আগে ঠিক এ রকমই অবস্থা যুবভারতীর। বৃহস্পতিবারই সকালে শহরে আসছেন আর্জেন্তিনা দলের নতুন সহকারী কোচ কামিনো-সহ তিন জনের টেকনিক্যাল টিম। স্টেডিয়াম, হোটেল-সহ পুরো ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে। ম্যাচের উদ্যোক্তা সিএমজি সংস্থার কর্তা ভাস্বর গোস্বামী যা জানালেন তাতে বিকেলের আগে কামিনোরদের কোনও কর্মসূচি নেই। “চব্বিশ ঘণ্টা প্লেন জার্নির পর ওঁরা হোটেলে থাকবেন। বিকেলের দিকে আমরা ওঁদের স্টেডিয়ামে নিয়ে যেতে পারি,” বললেন তিনি। কামিনোরা এসে কোনও ফ্যাকরা তোলেন কি না তা নিয়ে চিন্তিত উদ্যোক্তারা। কলকাতায় খেলে যাওয়া ফুটবলারটির মন পাওয়ার জন্য কামিনোর সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলে খেলা এক স্থানীয় ফুটবলারকে সকালে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার ভাবনাও ঘুরছে তাঁদের মাথায়। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যুবভারতীর আনাচ-কানাচ ঘুরে কিন্তু মনে হল, আর্জেন্তিনার প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার দেখবেন আসলে অর্ধসমাপ্ত একটা স্টেডিয়াম। যা কোনও রকমে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কাজ চালানোর মতো তৈরি রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যেই করা হচ্ছে রাস্তার পিচ, স্টেডিয়ামের রং। ক্রীড়া দফতর এবং পিডব্লিউডি-র লোকজন যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে দিন-রাত কাজ করছেন ঠিক, কিন্তু তাতেও বৃষ্টিতে সেটা শেষ হবে কি না সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দুটি সরকারি দফতরের অফিসাররা অবশ্য জোর দিয়ে বলছেন, ম্যাচ কমিশনারের হাতে স্টেডিয়াম তুলে দেওয়ার আগে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। এক অফিসার বলছিলেন, “এই স্টেডিয়াম ঠিকঠাক তৈরি করতে ছ’মাস সময় দরকার। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আমরা চেষ্টা করছি যতটুকু করা যায়, সেটাই করতে। যাতে কলকাতার সম্মান থাকে।” জোড়াতাপ্পি দিতে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দু’দল আর্জেন্তিনা এবং ভেনেজুয়েলার ড্রেসিংরুম মুখোমুখি করা হয়েছে। যা সাধারণত হয় না। সিএমজি কর্তারা দাবি করছেন, স্টেডিয়ামের পুরো ব্যবস্থাপনার কথাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দু’টি দলকেই। সবাই সম্মতি দিয়েছে। দোসরা সেপ্টেম্বর ম্যাচ। টিকিটের চাহিদা বাড়ছে হু-হু করে। টিভিতে মেসিদের কলকাতার ম্যাচ দেখবেন বিশ্বের ১৫২টি দেশের মানুষ। ম্যাচ ঠিকঠাক উতরোলে কলকাতার মুকুটে জুড়বে আরও একটি সম্মানের পালক। ম্যাচের পনেরো দিন আগে যুবভারতী কিন্তু এখনও ‘সম্মান রক্ষার’ জায়গায় পৌঁছয়নি। |
|
|
|
|
|