সিঙ্গুর-শুনানি
কোর্টের বাইরে সমাধানের কথা বললেন বিচারপতি
দালতে আইনি লড়াইয়ের বাইরেও আলোচনায় বসে সিঙ্গুর মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব বলে মনে করছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে আইন নিয়ে এসেছে, তা কেবলমাত্র একটি সংস্থার (টাটা মোটরস) উপরই প্রযোজ্য। এর সঙ্গে অসংখ্য মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে নেই। সুতরাং আইনি বিচার পদ্ধতির বাইরে গিয়েও রাজ্য সরকার এবং টাটা মোটরস, দু’পক্ষ আলোচনায় বসতেই পারে।
টাটা মোটরস-এর সওয়াল শেষ হয়ে যাওয়ার পর, বুধবার থেকেই আদালতে জবাব দেওয়া শুরু করেছিলেন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র। এ দিনের জবাবের প্রায় শেষ পর্যায়ে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় হঠাৎই অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে আলোচনায় বসার প্রসঙ্গটি তোলেন। এজলাসে দাঁড়িয়ে যা মেনেও নেন অনিন্দ্যবাবু। দু’পক্ষ সহমত হলে ‘আর্বিট্রেটর’ বা কোনও মধ্যস্থতাকারী সংস্থার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা যেতেই পারে বলে বিচারপতিকে তিনি জানান।
পরে বিচারপতির ওই প্রস্তাব প্রসঙ্গে টাটা মোটরস-এর আইনজীবী সিদ্ধার্থ মিত্র জানান, আলোচনা হতেই পারে। এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, সিঙ্গুর আইনের বিরোধিতা করে টাটা মোটরস যে হেতু মামলা করেছে, তাই তাদেরই প্রথম প্রস্তাব নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আসতে হবে। সম্মানজনক এবং গ্রহণযোগ্য কোনও প্রস্তাব হলে আলোচনায় বসা যেতে পারে। তাঁর মতে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে টাটা মোটরস-এর কোনও শত্রুতা নেই। সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিয়ে বাকি জমিতে জনস্বার্থমূলক প্রকল্পই গড়তে চায় রাজ্য সরকার।
সিঙ্গুর আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে টাটা মোটরস। গত ২১ জুন বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে প্রথম যখন সিঙ্গুর মামলার শুনানি শুরু হয়, ওই সময়ও আদালতের বাইরে আলোচনায় বসে মামলার নিষ্পত্তি করা যায় কি না, সেই প্রস্তাব উঠেছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে সিঙ্গুর মামলা শুনবেন না বলে বিচারপতি সৌমিত্র পাল সরে দাঁড়ালে, বিষয়টি আর বেশি দূর এগোয়নি। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে ফের সিঙ্গুর মামলার শুনানি শুরু হয়। এ বার একই ভাবে তিনিও সমাধানের পথ খুঁজতে আদালতের বাইরে আলোচনায় বসার প্রসঙ্গটি তুললেন।
এজলাসে এ দিন জবাব দিতে গিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র অভিযোগ করেন, সিঙ্গুর ছেড়ে টাটা মোটরস-এর চলে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার কোনও ভাবেই দায়ী নয়। বরং ওই জমিতে টাটা মোটরস যাতে ন্যানো গাড়ি কারখানা গড়তে পারে, সে জন্য সব রকম সহযোগিতা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সিঙ্গুরের জমি ব্যবহার না করে তৃতীয় ব্যক্তিকে দোষারোপ করে টাটা মোটরস প্রকল্প গুটিয়ে অন্য রাজ্যে চলে যায়। আদালতের কাছে তিনি জানান, টাটা মোটরস-এর মূল লক্ষ্যই হচ্ছে জমি ধরে রেখে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা। যা অনেকটা মুক্তিপণ আদায় করার মতোই বলে অনিন্দ্যবাবু বিচারপতিকে জানান।
আজ, বৃহস্পতিবারও হাইকোর্টে জবাব দেবে রাজ্য সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.