|
|
|
|
চাকরি যাবে না, ত্রিপুরায় আশ্বাস সহ-শিক্ষকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ত্রিপুরায় সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের আওতায় নিযুক্ত সহ-শিক্ষকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা নেই বলে জানালেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী। সর্বশিক্ষায় নিযুক্ত শিক্ষকদের এক প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এই আশ্বাস দেন। তপনবাবু জানান, এ ধরনের শিক্ষকদের চাকরির নিয়মিতকরণের কোনও নিশ্চয়তা এ মুহূর্তে দেওয়া হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার পরিষ্কার জানিয়েছেন, সর্বশিক্ষা (এসএস) প্রকল্পে যে শিক্ষকরা নিযুক্ত হয়েছেন তাঁদের ‘রাজ্য সরকার গাছতলায় দাঁড় করাবে না।’ স্কুলশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের আর্থিক নানা সমস্যা আছে। ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের ধাক্কা রাজ্য সামলাতে পারছে না। বিভিন্ন সরকারি দফতরে নিয়মানুসারে ইন্টারভিউ করে নিয়োগের জন্য যে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে, তাদের নিয়োগপত্রও দেওয়া যাচ্ছে না এই একই কারণে।’’ এ সব সত্ত্বেও সর্বশিক্ষা প্রকল্পে নিযুক্ত শিক্ষকদের যাতে বৈষম্যের শিকার হতে না হয়, তা দেখা হবে।
কেন্দ্রের এনডিএ সরকার ২০০১-২০০২ সালে প্রতিটি রাজ্যের জন্য সর্বশিক্ষা প্রকল্প চালু করে। পরে জানা যায়, প্রকল্পটি ২০১০ পর্যন্ত চলবে। কিন্তু ২০১১ সালেও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ‘সর্বশিক্ষা অভিযান’ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কোনও ‘রিশিডিউল’ করেনি। টাকাও আসছে এই প্রকল্পে, ফলে রাজ্য সরকারও এই প্রকল্পে নিযুক্ত শিক্ষকদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে বলেছে। সর্বশিক্ষায় নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে না দেওয়ায়, রাজ্যগুলি নিজেরাই নিজেদের মতো করে নিয়োগ করছে। ত্রিপুরায়
পঞ্চায়েত ও ব্লক পর্যায়ে প্রার্থী বাছাই করে ‘সর্বশিক্ষা’ প্রকল্পে নিয়োগ করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট সরকার এ ধরনের সহ-শিক্ষকদের (প্যারা টিচার) ৬০ বছর কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে ত্রিপুরার স্কুল শিক্ষামন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গে প্যারা-টিচারদের স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে একটি শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শর্তটি হল, ৬০ বছর পূরণ অথবা ‘সর্বশিক্ষা’ প্রকল্পের বিলুপ্তি, যেটি আগে হবে, সেটাই কার্যকর হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের ক্ষেত্রে। কিন্তু ত্রিপুরায় প্রায় ছয় হাজার ‘সর্বশিক্ষা’ শিক্ষাকর্মীর জন্য বলা হয়েছে, চাকরি হারানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। বস্তুত, সরকারি নিয়মিত শিক্ষকদের সঙ্গে ‘সর্বশিক্ষা’ প্রকল্পে নিযুক্ত শিক্ষকদের আর্থিক বৈষম্য ইতিমধ্যে অনেকটাই দূর করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাজ্য অসমের প্রসঙ্গ টেনে তপনবাবু জানালন, ওই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ‘এসএস’ প্রকল্পে কোনও নিয়োগই সম্ভব হয়নি। উত্তরপ্রদেশে এই প্রকল্পে ৫০৪৯০টি পদ খালি রয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গে শূন্য পদের সংখ্যা ৪২৮৭৯টি।
ত্রিপুরায় ‘সর্বশিক্ষা’ ক্ষেত্রে আন্ডার-গ্রাজুয়েট এক জন শিক্ষক প্রথম পাঁচ বছর পাচ্ছেন ৫,৬৭০ টাকা। পাঁচ বছর পূরণ হলে ১০,৬৪২ টাকা। আপার-প্রাইমারিতে প্রথম পাঁচ বছর একজন গ্রাজুয়েট শিক্ষক পাচ্ছেন ৭,০৬০ টাকা, পাঁচ বছর পূরণ হলে ১৩,১৩৪ টাকা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কেবল মিজোরামই ‘এসএস’ প্রকল্পে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় হারে বেতন দিচ্ছে। আন্ডার গ্রাজুয়েটরা পাচ্ছেন ২০ হাজার টাকা। অন্য দিকে গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন ২৫ হাজার টাকা।
সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের আর কী কী সুযোগ সুবিধা দেওয়া যেতে পারে এবং বিভিন্ন ব্লকে বা জেলা স্তরে চাকরির ক্ষেত্রে কোনও ‘বৈষম্য’ থাকলে তা খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার জন্য সর্বশিক্ষার শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাল ১৮ আগস্ট আবার বৈঠকে বসার কথা স্কুল শিক্ষামন্ত্রীর। |
|
|
|
|
|