|
|
|
|
বৃষ্টি-ধস-বন্যায় বিপর্যস্ত মেঘালয়ে মৃত ৬ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
অসম-অরুণাচলের পর বৃষ্টি-বন্যা-ধসে এ বার বিপর্যস্ত মেঘালয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। কাল সকালে হঠাৎই তীব্র ঝড়ে লণ্ডভণ্ড অবস্থা হয় গারো পাহাড়ের সদর তুরার। ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বর্ষণ বিপত্তি বাড়ায়। ফুঁসে ওঠে জিঞ্জিরাম ও গানোল নদী। হড়পা বান ও পরের পর ধসে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এগারো মাসের একটি শিশু-সহ অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একাধিক বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে অজস্র জনপদ। ভেসে গিয়েছে অসংখ্য গবাদি পশুও। ৫১ ও ৫২ নম্বর জাতীয় সড়ক জলমগ্ন হওয়ায় পশ্চিম মেঘালয় এখন দেশের বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন। অন্য দিকে অসমে ধেমাজির পাশাপাশি গোহপুরেও বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ১০৪৬টি গ্রাম জলের তলায়।
মেঘালয়ের মোদীনগরে বাড়ি ভেঙে মৃত্যু ঘটেছে এক প্রবীণ দম্পতির। তুরা বাজারের নবীনপল্লিতে ধসে ভেঙে পড়ে একটি বাড়ি। মারা যায় এগারো মাসের একটি শিশু। শিশুটির বাবা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। মুকডাঙরা এলাকায় একটি বাড়ি ধসে পড়লেও বাসিন্দা ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও মাটি-পাথর চাপা পড়ে দোবাসিপাড়ায় একজন, টেটেংকলে একজন এবং রংকা চিরিংয়ে একজন মারা গিয়েছেন। মৃতদের নিকটাত্মীয়দের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। সঙ্কট মোকাবিলায় ডেপুটি কমিশনারকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তহবিল থেকে ৩০ লক্ষ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ত্রাণ দ্রুত পৌঁছে দিতে জেলা প্রশানকে আরও ১০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। ৬টি ত্রাণ শিবিরে ইতিমধ্যেই আশ্রয় দেওয়া হয়েছে অন্তত পাঁচশো দুর্গত মানুষকে।
জিঞ্জিরাম নদীর বন্যায় পশ্চিম গারো পাহাড়ের তিরকিল্লা থেকে সেলসেল্লা অবধি ডুবে গিয়েছে। রাঙামাটি ও সোনামাটির মধ্যে বাঁধ ভেঙে গানোল নদীর জলও লোকালয়ে ঢুকেছে। রংখম, চিতকটক, বাবুপাড়া, মণ্ডল টিলা, চুনমাটি, দোবাসিপাড়া-সহ বহু এলাকাতেই নেমেছে ধস। দক্ষিণ গারো পাহাড়ে বাগমারা যাওয়ার প্রধান সড়ক ও শিববাড়ি হয়ে যাওয়া সড়ক বানভাসি হয়ে বন্ধ। সিজু ও উইলিয়ামনগরের মধ্যবর্তী একটি সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। শিববাড়ি, চোকপট ও ১২ মাইলের রাস্তাও ধসের কারণে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। শিবসাং নদীর জল বেড়ে বাগমারা বাজার জলমগ্ন। পূর্ব গারো পাহাড়ে রংসাক ও বাংসামগ্রের মধ্যেও ধসে নেমেছে। মুখ্য সচিব ডব্লিউএমএস পারিয়াত জানান, গারো পাহাড়ের সব বড় নদীই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থা হচ্ছে।
অসমেও বন্যা পরিস্থিতির ঘোরালো। ধেমাজির পাশাপাশি গোহপুরেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বানে ভেসে যাওয়া এক ব্যক্তির দেহ গোহপুরে এবং তিনজনের দেহ আজ ধেমাজিতে উদ্ধার করা হয়। ঘাইগাঁওয়ে ৫২ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার জলের তলায়। ছাতরংয়ের জলে গোহপুর শহর ভেসেছে। ভোলাগুড়ি চা বাগান ও চারিদুয়ার কলেজও জলমগ্ন। ৫৩ নম্বর জাতীয় সড়ক ও রঙ্গিয়া-মুরকংকসেলেক মিটারগেজ লাইন জলে ডুবে রয়েছে। ধেমাজি, শোণিতপুর ছাড়াও লখিমপুর, বরপেটা, যোরহাট, কার্বি আংলং, গোলাঘট, নগাঁও, শিবসাগর, দরং, ধুবুরি, মঙ্গলদই বানভাসি। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানায়, ব্রহ্মপুত্র, বুড়িডিহিং, সুবনসিরি, দিখৌ, দিসাং, পুটিমারি, বেকি, সঙ্কোশ, বরাক, কুশিয়ারা নদীর জল এখনও বাড়ছে। |
|
|
|
|
|