|
|
|
|
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর |
কাজ করেও বেতন মিলছে না, ক্ষোভ অস্থায়ী কর্মীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
কাজ করছেন। তবু টাকা মিলছে না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অস্থায়ী কর্মীদের হাল এমনই। কেউ ৭ মাস, কেউ বা আবার দশ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মচারীরা। জেলা প্রশাসনের কাছে বকেয়া বেতন চেয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। সেই বকেয়া মেটাতে টাকা চেয়ে ওই দফতরের কাছে চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের আধিকারিক সুদীপকুমার সেন অবশ্য বলেছেন, “উচ্চ পর্যায় থেকে ওই টাকা সরাসরি জেলা পরিষদে আসে। আমাদের সেখানে বিশেষ কিছু করার থাকে না। তবু এই বিষয়ে আমরা উদ্যোগী হব।”
জনস্বাস্থ্য করিগরি দফতর (পিএইচই) সূত্রে জানা গিয়েছে, নব্বই দশকের গোড়ায় পরিশ্রুত পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সাবমার্সিবল পাম্প এবং গভীর নলকূপ বসানো হয়েছিল। এর জন্য ওই দফতর থেকেই পাম্প অপারেটর নিয়োগ করা হয়। ১৪টি পাম্পের দায়িত্ব নেয় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতিগুলি। তারা অস্থায়ী ভাবে লোক নিয়োগ করলেও, ঠিক হয়েছিল ওই কর্মীদের বেতনও পিএইচই দেবে। সেই মতো ওই কর্মীদের বেতনের টাকা তারা জেলা পরিষদকে পাঠায়। জেলা পরিষদ আবার ওই টাকা পঞ্চায়েত সমিতিগুলির মধ্যে তা ভাগ করে দেয়।
এ ভাবেই চলছিল। বেতনও পাচ্ছিলেন পাম্পগুলির ৮৪ জন কর্মী। কাটোয়া ১, ২, পূর্বস্থলী ১, ৩, মন্তেশ্বর, মানকর, বর্ধমান-২, কালনা ১ ও ২, কেতুগ্রাম ১ ও ২, মঙ্গলকোটের পঞ্চায়েত সমিতির দায়িত্বে এ রকম পাম্প রয়েছে। কিন্তু গত দশ মাস ধরে পাম্প অপারেটরদের জন্য জেলা পরিষদের কাছ থেকে কোনও টাকাই পাচ্ছে না পঞ্চায়েত সমিতিগুলি। বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি উদয় সরকার বলেছেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে বেশ কয়েক মাস টাকা পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট দফতরকে আমরা চিঠি দিয়েছি।”
পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কিছু পঞ্চায়েত সমিতি নিজস্ব তহবিল থেকেই ওই পাম্প অপারেটরদের বেতন মেটাচ্ছেন। কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “শুধু আমরা নই। আরও বহু পঞ্চায়েত সমিতি প্রতি মাসে নিজস্ব তহবিল থেকে ওঁদের বেতন মেটাচ্ছে। তবে, কত দিন এ ভাবে চালানো সম্ভব হবে, বুঝতে পারছি না।” বিডিওরা জানিয়েছেন, বেতনের টাকা চেয়ে ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদকে বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম ও মঙ্গলকোট গ্রামের পাম্প অপারেটরদের অবস্থা করুণ। পঞ্চায়েত সমিতি তাঁদের পাশে দাঁড়ায়নি। একই হাল কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বহড়ানেও। সেখানকার ৬ জন পাম্প অপারেটর ৭ থেকে ১০ মাস কোনও বেতন পাননি। মঙ্গলকোট ও মাজিগ্রামের পাম্প অপারেটর সুব্রতকুমার মণ্ডল, ধনঞ্জয় দত্তদের কথায়, “আমরা অস্থায়ী কর্মী হিসাবে ’৯৫ সালে কাজে যোগ দিই। বেতন মাসে ৩৩০০ টাকা। কিন্তু বেতন পাই না গত ১০ মাস।” দীর্ঘ দিন বেতন না পাওয়ায় নিতান্ত কষ্টে দিন গুজরান করতে হচ্ছে রণজিৎ মাঝি, অমল মিত্রদের।
মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক তথা বিডিও মনিরুদ্দিন ফারুকি বলে দিয়েছেন, “পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল থেকে পাম্প অপারেটরদের বেতন মেটানো সম্ভব নয়।” কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও হেমন্ত ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “পাম্প অপারেটররা আমাদের কাছে আবেদন করেছেন। এই অবস্থায় আমরা ঠিক করেছি, নিজস্ব তহবিল থেকে ওঁদের কয়েক মাসের বেতন দিয়ে দেব।” |
|
|
|
|
|