|
|
|
|
|
ইস্কো আবাসনেই ডেরা
অভিষেকের, বদলার আশঙ্কা
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
|
দাগি সমাজবিরোধী অভিষেক দাস খুন হওয়ার পরে তার ক্ষিপ্ত সাঙ্গোপাঙ্গেরা বদলা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এবং তাতে ফের হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইন্দিরা গাঁধী কলোনির বাসিন্দারা।
কুলটির এই কলোনির একাধিক ইস্কো আবাসন দখল করেই অপরাধমূলক কাজ কারবারের ডেরা বানিয়েছিল অভিষেক। তার চেলাচামুন্ডারা এখনও সক্রিয়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য দাবি করেছেন, দুষ্কৃতীরা আপাতত এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কয়েক ঘণ্টা এই এলাকায় কাটান পুলিশ সুপার। তাঁর আশ্বাস, “আমি এক সপ্তাহ কুলটিতে থাকব। যে সব আবাসন দখল করে ওরা অপরাধমূলক কর্ম চালাচ্ছে সেগুলি চিহ্নিত করে অভিযান চালাব। গোটা দলটিই দ্রুত ধরা পড়ে যাবে।”
সমাজবিরোধীরা ইস্কো আবাসনে ডেরা গাড়ায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে কারখানা কর্তৃপক্ষের দিকেও। রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে মাত্র কয়েক বছর প্রাক্তন শ্রমিক কর্মীরা এখানে বসবাস করেছিলেন। এক সময়ে তাঁরা পাওনাগন্ডা বুঝে নিয়ে আবাসন ছেড়ে চলে যান। কারখানা কর্তৃপক্ষ আবাসনগুলিতে তালা মারেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ আবাসনগুলির বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ বিছিন্ন করা হয়নি। সেই সুযোগে বহিরাগতেরা তালা ভেঙে আবাসনগুলি দখল করে। সেই থেকেই সেগুলি তাদেরই কব্জায় রয়েছে।
২০০৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর কারখানাটি সেলের গ্রোথ ডিভিশনের আওতায় ফের খুলেছে। কিন্তু স্থায়ী কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় এই আবাসনে কারখানার কোনও বৈধ কর্মী থাকেন না। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার প্রবাল গুপ্তও স্বীকার করেন, “আমাদের কোনও কর্মী আবাসনে থাকেন না। সবাই বহিরাগত।” আর এই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে সমাজবিরোধীরা। অভিভাবকহীন এই আবাসনগুলির বেশ কয়েকটি তাদের কব্জায় চলে গিয়েছে।
মাস আটেক আগে এই ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতেই বিনোদ সিংহ নামে এক যুবককে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল অভিষেক দাসের বিরুদ্ধে। সে সময়ে অভিযান চালিয়ে পুলিশ প্রথম ওই আবাসনে তার কাজ-কারবারের হদিস পায়। তার দখল করা একাধিক আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, এই কলোনিতেই ইস্কোর কয়েকটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন অভিষেকের বাবা খোকন দাস। বস্তুত, বাবার ব্যবসা দেখাশোনার সুবাদেই সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
সিপিএমের কুলটি লোকাল কমিটির সম্পাদক দেবীদাস নায়েক অভিযোগ করেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে সমাজবিরোধীরা আখড়া বানাচ্ছে।” তাঁরা এই আবাসনগুলি প্রাক্তন শ্রমিকদের লিজে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, হয় আবাসনগুলি ভেঙে ফেলা হোক অথবা বৈধ উপায়ে ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলেছি, এ ধরনের আবাসন চিহ্নিত করে খালি করতে। সিআইএসএফ নিয়োগ করতেও বলেছি।” সংস্থার জিএম বলেন, “এখানে একটি সিআইএসএফ ব্যরাক তৈরি হবে। তার পরেই আবাসনগুলিকে দখলমুক্ত করার বিষয়ে সেল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে, আশা করি।” আপাতত এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। সাময়িক ভাবে টহলদারিও বেড়েছে।
পাকাপাকি কোনও ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত যে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বস্তি ফিরবে না, তা বলাই বাহুল্য। |
|
|
|
|
|