বীরভূমের পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনের হাতে প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন’ সংস্থা। সোমবার সিউড়িতে জেলা পরিষদ ভবনে সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর ঘরে মহম্মদবাজারের বিডিও সুমন বিশ্বাসের হাতে সংস্থার তরফে ওই চেক তুলে দেওয়া হয়।
রাজ্য সরকার অধিগৃহীত ওই সংস্থা পাঁচামির একটি বড় অংশের জমিতে পাথর খাদান ও ক্রাশার চালায়। কিন্তু স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের অভিযোগ ছিল, সেখানে তিন দশক ধরে কাজ করলেও সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে (‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’ বা সিএসআর) সংস্থা এলাকার উন্নয়নের জন্য কিছু করেনি। চেক মেলার খবরে তাই খুশি এলাকার মানুষ। সংস্থার চেয়ারম্যান অম্লান বসু বলেন, “যে এলাকায় কাজ করছি, সেখানে ন্যূনতম সুবিধাগুলি পৌঁছে দেওয়া আমাদের কতর্ব্য। আগে যার কিছুই হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে জন প্রতিনিধিদের হাত দিয়ে উন্নয়নের জন্য টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” পাঁচামি এলাকার আদিবাসী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের পানীয় জলের ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট মেরামতি, গরিব পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রভৃতি কাজে ওই টাকা ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৯৭৫-এ পাঁচামি এলাকায় ৪৯৫ একর জমিতে গড়ে ওঠে ওই সংস্থার খাদান ও ক্রাশার। তার আগে থেকেই অবশ্য বেসরকারি উদ্যোগে ওই এলাকায় গুচ্ছ খাদান ও ক্রাশার ব্যবসা চলছিল। অভিযোগ, ওই সরকারি সংস্থা ছাড়া বাকিরাও উন্নয়নে পদক্ষেপ করেনি। ফলে পাঁচামি ও তালবাঁধ শিল্পাঞ্চলের রাস্তাঘাট, দূষণ, পানীয় জল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মান খারাপ হয়েছে। ২০০৯-এ উন্নয়ন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ‘বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতা’। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়। গাঁওতা নেতা সুনীল সোরেনের প্রতিক্রিয়া, “সরকারি এলাকায় আদিবাসীদের উন্নয়নে ওই সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব ছিল। তা পালিত হলে এত দিনে এলাকার ভোল পাল্টে যেত।” |