|
|
|
|
থাক সে কথা, বিয়ের বোমায় বিব্রত রাহুল
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৪ ফেব্রুয়ারি |
আচ্ছা, আপনি বিয়ে করছেন না কেন?
ভয়-ভীতি-সঙ্কোচের বালাই নেই। সোজাসাপ্টা কথা।
মাটির কাছাকাছি আসতে চাইছেন রাহুল গাঁধী। মাটির মানুষরাও তাঁকে নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই মোক্ষম প্রশ্নটা করে ফেললেন। হরিয়ানার কৃষকদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে গিয়ে কয়েক মুহূর্তের জন্য রাহুলের ফর্সা গাল লাল হয়ে উঠল।
লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ইস্তেহার তৈরি করার জন্য রাহুল ইদানীং সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সামনাসামনি কথাবার্তা বলছেন। বুঝে নিতে চাইছেন তাদের সুবিধা-অসুবিধা-দাবিদাওয়া। দলীয় ইস্তেহারে তার উপযুক্ত প্রতিফলন ঘটানোই তাঁর লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই যেমন ভোপালে এক বৈঠকে দেশের বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকেছিলেন তিনি। একই ভাবে হকার, শ্রমিক সংগঠন, শিল্পমহল এবং যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। আজ গিয়েছিলেন কৃষকদের এক সমাবেশে। হরিয়ানার গানাউরে। |
দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক কৃষি বাজারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে রাহুল গাঁধী।
সঙ্গী হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। সোমবার সোনিপতে। ছবি: পিটিআই। |
ভালই আলাপ-আলোচনা জমেছিল। রাহুল বলছিলেন, একমাত্র কংগ্রেসই কৃষক-স্বার্থের কথা বলে। প্রথম ইউপিএ জমানায় ৭০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ মকুব করে কংগ্রেস। উল্টো দিকে কৃষকদের দেওয়ার জন্য ঋণের পরিমাণ ইউপিএ জমানায় ৭০০ শতাংশ বেড়েছে। কৃষি উৎপাদনও আগের থেকে অনেক বেড়েছে। কৃষকরা নিজেরাও নিজেদের বক্তব্য রাহুলকে জানিয়েছেন।
ভালয় ভালয় বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সবে তৈরি হচ্ছিলেন রাহুল। গোলটা পাকালেন সফরসঙ্গী জয়রাম রমেশ। তিনি হঠাৎ বলে উঠলেন, “আমার একটা প্রশ্ন রয়েছে। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য আপনি কী করছেন? উত্তরপ্রদেশে এ ব্যাপারে কী করেছেন সেটাও বলুন।” জবাবে রাহুল সবিস্তার ব্যাখ্যা দিতে বসলেন। সেই সঙ্গে বললেন, “মহিলাদের ক্ষমতায়ন করা কংগ্রেসের অগ্রাধিকার। সমাজে মহিলাদের গুরুত্ব সব থেকে বেশি। মহিলারা ছাড়া কিছু সম্ভব নয়।”
আর যায় কোথায়! রাহুল থামতেই উপস্থিত এক কৃষক সটান বলে ফেললেন, “সে তো সবই বুঝলাম। কিন্তু মহিলারা যখন এতই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি বিয়েটা করেননি কেন? কবে করবেন?”
ব্যস, গোটা সমাবেশে হাসির রোল উঠল। প্রায় আধ মিনিট ধরে সবাই প্রাণ খুলে হাসলেন। রাহুলও হাসলেন। তবে দৃশ্যতই বোঝা গেল, বেশ লজ্জা পেয়েছেন। বিরোধী দলের খোঁচা বা মোদীর তোপ এক জিনিস। আর আচমকা এমন অকপট জিজ্ঞাসার সামনে পড়ে যাওয়া সম্পূর্ণ অন্য। তবে দ্রুতই সামলে নেন রাহুল। বলেন, “ও সব হবে ক্ষণ। ওগুলো এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। যেটা বলছিলাম, সেটা শেষ করি।”
হরিয়ানার কৃষক জানেন না সম্ভবত। কিছুদিন আগে সংসদের সেন্ট্রাল হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক দীর্ঘ আলাপচারিতায় রাহুল এ ব্যাপারে তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা খোলাখুলি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি বিয়ে করবেন না। কারণ, বিয়ে করলে সন্তানাদি-পরিবার নিয়ে জড়িয়ে পড়বেন। তার বদলে তিনি কংগ্রেসের সংগঠনকে মজবুত করার জন্যই সময় দিতে চান।
সাদাসিধে মাটির মানুষরা কি আর এত শত বোঝেন! বাকি প্রজাপতির ইচ্ছা! |
|
|
|
|
|