|
|
|
|
ত্রিপুরা থেকে প্রচার শুরু মমতার
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ব্রিগেড থেকে দিল্লিতে সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরিবর্তনের লক্ষ্যে আজ, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের বাইরে প্রচার শুরু করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
আজ, ত্রিপুরার আগরতলায় জনসভা করবেন তৃণমূল নেত্রী। কাল, বুধবার তাঁর সভা করার কথা অসমের গুয়াহাটিতে। মার্চের গোড়ায় অণ্ণা হজারেকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সমাবেশ করার কর্মসূচি আছে বলে সোমবার জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। রাজ্যের বাইরে তৃণমূল নেত্রীর পরপর সভা করার বিষয়ে মুকুলবাবুর বক্তব্য, “গত ৩০ জানুয়ারি ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে আমাদের নেত্রী দিল্লিতে সরকার বদলের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন লোকসভা ভোটে তৃণমূল ভারতব্যাপী প্রার্থী দেবে। সেই লক্ষ্যেই বাংলার বাইরে আগরতলা থেকে আমরা প্রচার শুরু করছি।”
বাংলায় তাঁদের দলের আধিপত্য বিস্তারের পরে, এ বার জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের গুরুত্ব বৃদ্ধি করতে মুকুলবাবুরা বিভিন্ন রাজ্যের রাজনৈতিক নেতা, প্রখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও তাঁদের আলোচনা হয়। মুকুলবাবু জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটে দিল্লির ৭টি আসনে তৃণমূল লড়বে। তার মধ্যে একটি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হবেন প্রাক্তন বিচারপতি এস এন গুপ্ত। তাঁদের প্রার্থী তালিকায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন উপাচার্যও আছেন। এ ছাড়াও মধ্যপ্রদেশের ভোপালে তৃণমূলের প্রার্থী হবেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরুণ ভাটনগর। উত্তরপ্রদেশের বারানসী থেকে তৃণমূল প্রার্থী হবেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি কমলাপতি ত্রিপাঠির নাতনি ইন্দিরাদেবী। মুকুলবাবু বলেন, “উত্তরপ্রদেশের মেরঠ থেকে আমাদের দলের প্রার্থী হবেন সেখানকার প্রাক্তন আমলা তুলসি ডর্ড।”
এ দিনই তৃণমূল ভবনে ঝাড়খণ্ড পিপলস পার্টির (জেপিপি) শীর্ষ নেতা সুরজ সিংহ বেসরাকে পাশে বসিয়ে মুকুলবাবু ঘোষণা করেন, লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডের ১৪টি কেন্দ্রে তৃণমূল-জেপিপি-র আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে। মুকুলবাবু বলেন, “ঝাড়খণ্ড রাজ্য হয়েছে ১৪ বছর হল। এই ১৪ বছরে আমরা ৯ জন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছি। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে কোনও উন্নয়ন হয়নি। এবার তৃণমূল এবং জেপিপি একসঙ্গে উন্নয়নের কাজ করবে।”
মুকুলবাবুর পাশে বসা সুরজ বলেন,, “এতদিন বিজেপি ও কংগ্রেস ঝাড়খণ্ড-সহ সারা দেশে ভ্রষ্টাচার করেছে। তাই, আমরা আওয়াজ তুলেছি ভ্রষ্টাচার হঠাও, ঝাড়খণ্ড বাঁচাও। মমতাদিকে প্রধানমন্ত্রী করে দেশকে দুর্নীতি-মুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে চাই।” তবে জেপিপি-তৃণমূল আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলেও এ দিন মুকুলবাবু জানিয়েছেন।
২৪ ঘণ্টা আগে রবিবারই অবশ্য রবীন্দ্র সদনে সুরজকে বিক্ষুব্ধ সিপিএম নেতা আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা আয়োজিত ‘সামাজিক ন্যায়বিচার মঞ্চে’র গণ কনভেনশনে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। সেই বিষয়ে সুরজের সাফ জবাব, ‘‘রবিবারের রবীন্দ্র সদনের সম্মেলন রাজনৈতিক ব্যাপার নয়। ওটা সমাজের পিছিয়ে পড়া, তফসিলি জাতি, উপজাতিদের ক্ষমতায়নের বিষয় নিয়ে সভা ছিল। কিন্তু এ দিন তৃণমূল ভবনে আমরা এসেছি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। আমাদের লক্ষ্য মমতাদিকে দেশের নিয়ন্ত্রক করা।”
বস্তুত, লোকসভা ভোটে দিল্লিতে সরকার গঠনে মূল নিয়ন্ত্রক যেমন তাঁরা হতে চান, তেমনই আঞ্চলিক থেকে জাতীয় দলে উত্তীর্ণ হতে ভোটের হার বাড়িয়ে নিতেও চান তৃণমূল নেতৃত্ব। আপাতত, সেই লক্ষ্যেই মমতা বাংলার বাইরে তৃণমূলের প্রসার ও প্রভাব বাড়াতে আজ থেকেই আনুষ্ঠানিক অভিযানে নামছেন। |
|
|
|
|
|