কারখানা বন্ধ দেখে বিক্ষোভ জেসপ কর্মীদের
চুরি করে পালানোর সময়ে চোরেরা গেটে তালা লাগিয়ে চলে যায়। সকালে কর্মীরা কাজে যোগ দিতে এসে তালা দেখে মনে করেন, মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। আর তাতেই বিক্ষোভ শুরু করে দেন কর্মীদের একাংশ।
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে দমদমের জেসপ কারখানায়। পরে অবশ্য জানা যায়, কর্তৃপক্ষ তালা লাগাননি। ওই কীর্তি চোরেদের! যদিও এক শ্রেণির কর্মীদের অভিযোগ, চোর নয়, কারখানার মালপত্র চুরি করিয়েছেন খোদ কর্তৃপক্ষ। তবে জেসপ কর্তৃপক্ষ জানান, গত রবিবার রাতে এক দল লোক কারখানায় ঢুকে লুঠতরাজ চালায়। তবে এতে কারখানার কর্মীরা যুক্ত নয় বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। সোমবার দমদম থানায় তাঁরা এফআইআর দায়ের করেছেন।
এ দিন কারখানার পরিবেশ ছিল থমথমে। ইএমইউ কোচ বিভাগের ২৮ নম্বর গেটের সামনে কর্মীদের জটলা, সংবাদমাধ্যমের ভিড়। তৃণমূল সমর্থিত জেসপ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে মালিকের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। কারখানার তৃণমূল ইউনিয়নের আর এক নেতা নিতাই ঘোষ জানান, চুরি বন্ধ করতে মাঝে রাতে পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই।
শ্রমিকদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জেসপের ডিরেক্টর-ইন-চার্জ আলোক চক্রবর্তী জানান, “রবিবার রাতে প্রায় ৩০ জনের একটি ডাকাত দল কারখানায় ঢোকে। নিরাপত্তারক্ষীদের বেঁধে রেখে রাত ১২টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত লুঠতরাজ চালায় তারা। ক্রেন চলাচলের জন্য তামা-সহ মিশ্রধাতু দিয়ে তৈরি তার (রোপওয়ে) কেটে নেয়। ৭০ মিটার দৈর্ঘের ৬টি তার কেটে নিয়ে গিয়েছে তারা। যাওয়ার সময়ে ভিতর থেকে গেটে তালা লাগিয়ে চাবি কোথাও ফেলে দিয়ে চলে যায়। গ্যাস কাটার দিয়ে তালা কেটে দরজা খোলার ব্যবস্থা করতে হয় আমাদের।”
কারা এই কাজ করতে পারে? আলোকবাবু বলেন, “এটা আমাদের সংস্থার প্রতি এক ধরনের আক্রমণ। অনেক দিন ধরেই নানা যন্ত্রপাতি চুরি হচ্ছে। পুলিশকেও একাধিক বার জানিয়েছি।” তাঁর ধারণা, এটি পূর্ব পরিকল্পিত, সাধারণ ডাকাতির ব্যাপার নয়। কারণ, উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত অত্যন্ত দরকারি কয়েকটি কম্পিউটারও তারা নষ্ট করেছে। তাঁর সন্দেহ, প্রতিযোগীদের মধ্যে কেউ এটা করতে পারেন। আলোকবাবু জানান, এর জেরে ৯টি ইএমইউ কোচ তৈরির কাজ যা প্রায় শেষের মুখে, আটকে গেল।
আলোকবাবু বলেন, এই ঘটনার ফলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কারখানার কর্মীদের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। কর্মীদের ধারণা হয়েছিল, কর্তৃপক্ষ বোধহয় কারখানা বন্ধ করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য খুব শীঘ্রই সেই ভুল তাঁদের ভেঙে যায়।
সকালের দিকে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুও মহাকরণে বসে প্রথমে খবর পান, জেসপ কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরে অবশ্য তিনি চুরির কথা জানতে পারেন। তিনিও এই চুরির পিছনে কোনও বড় মাথা রয়েছে বলেই মনে করছেন। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “ডানলপের ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা দেখা গিয়েছে। সেখানেও ভারী ভারী যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
এ দিন শ্রীকুমারবাবু অভিযোগ করেন যে, জেসপ কারখানার প্রায় ৬৫২ জন শ্রমিক-কর্মচারীর মধ্যে কেউ কেউ চার মাস এবং কেউ কেউ পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। পিএফের টাকাও সময় মতো জমা পড়ছে না বলে অভিযোগ। কাজের বরাত থাকলেও কারখানায় উৎপাদন প্রায় কিছুই হচ্ছে না।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.