ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা

২৪ ফেব্রুয়ারি
ণহত্যার দায়ে এ বার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল ইউক্রেনের পলাতক প্রেসিডেন্টের নামে। যদিও ক্ষমতাচ্যুত ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আরসেন আভাকভ। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, “শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের খুন করার অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইয়ানুকোভিচ-সহ যারা এই গণহত্যার জন্য দায়ী, তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।” আভাকভ জানিয়েছেন, রুশভাষী ক্রিমিয়া অঞ্চলের বালাক্লাভায় নিজস্ব বাড়িটিও ছেড়ে নিজের সহযোগীদের নিয়ে গাড়িতে অজ্ঞাত কোনও স্থানে পাড়ি দিয়েছেন ইয়ানুকোভিচ।
তবে ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে পরোয়ানার কথা শুনে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ। অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
কিন্তু প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের অন্তর্ধানের চেয়েও ইউক্রেনের মানুষ এই মুহূর্তে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন। পূর্ব ইউক্রেনে রুশভাষী মানুষের সংখ্যাই বেশি। এখানে কিছুটা হলেও ইয়ানুকোভিচের জন্য সমর্থন জিইয়ে রয়েছে, কারণ পালানোর আগে এই অঞ্চলের খারকিভেই শেষ বার খোঁজ মিলেছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের। এখানকার মানুষ রাশিয়াকে এখনও ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলেই মানেন। পশ্চিম ইউক্রেনের ছবিটা আলাদা। ইয়ানুকোভিচের কট্টর বিরোধী এই অঞ্চল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহী। আবার পূর্বের লোকজন কিন্তু এখনও ইউরোপঘেঁষা দৃষ্টিভঙ্গিকে সন্দেহের চোখেই দেখেন।
এখন দেশের শাসনভার সে ভাবে কারও হাতে না থাকায় অন্য আশঙ্কা উঁকি দিচ্ছে অনেকের মনে। পূর্ব-পশ্চিমের এই দ্বন্দ্বে ইউক্রেন টুকরো টুকরো হয়ে যাবে না তো? কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট ওলেকসান্দার তুর্চিনভ অবশ্য বলেছেন, নতুন নেতারা রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই চলতে চান। তাঁরা এটাও বলছেন, ইউক্রেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে চায়, সেটাকেও স্বীকৃতি দিতে হবে রাশিয়াকে। ইউক্রেনের মানুষের মতো ইউরোপ, আমেরিকা বা রাশিয়াও চায় না ইউক্রেন ভেঙে যাক। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুজান রাইসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ইউক্রেনে কি রাশিয়া সেনা পাঠাবে? রাইসের কথায়, “কেউ চায় না হিংসা আবার ফিরুক। ইউক্রেন, রাশিয়া, ইউরোপ বা আমেরিকা কেউই চাইবে না একটা দেশ ভেঙে যাক।” এর মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি প্রধান ক্যাথারিন অ্যাশটন ইউক্রেনে আসছেন। এ দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে আলোচনা করতে চান তিনি।
কিয়েভের ইনডিপেন্ডেন্স স্কোয়ারে এখনও জমায়েত করে রয়েছেন বেশ কিছু মানুষ। ইতিউতি ছড়ানো পুরনো আসবাব। পড়ে রয়েছে গাড়ির টায়ার। তাঁবু থেকে ছড়াচ্ছে ধোঁয়া। মে মাসে নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল আঁকড়ে পড়ে থাকতে চান প্রতিবাদীরা। অনেকেই বেশ ক্লান্ত। এক দিকে তিন মাসের টানা লড়াইয়ের পরে প্রেসিডেন্টকে গদিচ্যুত করার আনন্দ, তার সঙ্গেই ৮২ জন সঙ্গীকে হারানোর দুঃখ মিলেমিশে গিয়েছে। ৫৩ বছরের গ্রিগরি কুজনেৎসভ তাই বললেন, “এখন আনন্দ করার দিন নয়। যত দিন প্রয়োজন, এখানে পড়ে থাকব।” কিয়েভের মাঝবয়েসী মহিলা গালিনা ক্রাভচুকের হাতে পোস্টার: “ইউরোপের দিকে তাকিয়ে আছি আমরা। আশা আছে। ইউরোপে যোগ দিতে চাই আমরা।”
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, হবু অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর সামনে এখন খুব বড় চ্যালেঞ্জ। জনতার আশাপূরণ এবং আর্থিক দুরবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো দু’দিকেই গুরুত্ব দিতে হবে তাঁকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.