পুলিশি হেনস্থার নালিশ পিংলায়
থায় বলে ‘চোরের একদিন গৃহস্থের সাতদিন!’ চুরির উৎপাত রুখতে গিয়ে পুলিশ-জনতার খণ্ডযুদ্ধের মাসুল এখন গুনতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। অভিযুক্ত তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও তিনজন সাধারণ গ্রামবাসীকে থানায় তুলে নিয়ে যাওয়ায় উত্তেজনা ছড়াল পিংলায়। রবিবার ঘটনার প্রতিবাদে ব্লকের বালিচক-ময়না সড়কের জলচকের তিলেশ্বরী শিবমন্দির কাছে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, এলাকায় এসে পুলিশ সাধারণ মানুষের বাড়িতে প্রতিদিন তল্লাশি চালাচ্ছে। এ দিনও এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস সামন্ত, শ্রীকান্ত দিন্দা ও খোকন বেরাকে থানায় আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জখম হন দেবাশিসের মা রেবতী সামন্ত। পরে এলাকার জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তনয়া দাস ও ব্লক সভাপতি গৌতম জানার নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখালে ছাড়া হয় ওই তিনজনকে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “চুরির কেন্দ্র করে গণ্ডগোলে আক্রান্ত হয় পুলিশ। এরপর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গেলে গ্রামবাসীর তরফ থেকে বাধা আসে।” রবিবারের ঘটনায় ওই তিনজনের তালিকায় নাম ছিল কি না, তা তিনি খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
তিলেশ্বরী গ্রাম ঘেঁষা জোহাট, নারায়ণদিঘি, পিংলাগঞ্জ, পূর্বজলচক গ্রামগুলিতে চোরের উৎপাতের অভিযোগ ছিলই। চুরি ঠেকাতে ওই গ্রামগুলিতে রাত পাহারার ব্যবস্থাও করেছিলেন গ্রামবাসী। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দু’টি মোটর সাইকেলে কয়েকজন অপরিচিত যুবক এলাকায় জড়ো হলে গ্রামের বাসিন্দারা ছুটে যান। চোর সন্দেহে তিনজনকে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ওই যুবকদের উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে গ্রামবাসীদের সঙ্গে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনায় জখম হয়েছিলেন সাতজন গ্রামবাসী ও চার পুলিশকর্মী। হামলার অভিযোগে ১৪ জন গ্রামবাসীর নামের তালিকা তৈরি করে পুলিশ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এরপর থেকেই প্রতিদিন পুলিশি তল্লাশি চলছে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে। রবিবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ গ্রামের একটি বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। অভিযোগে নাম থাকা নিখিল ধাড়াকে গ্রেফতার করা হয়। সঙ্গে গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত দিন্দা, খোকন বেরা ও দেবাশিস সামন্তকেও আটক করে পুলিশ। সেই সময় দেবাশিসের মা রেবতীদেবী পুলিশকে বাধা দিয়ে হলেন, তালিকায় ছেলের নাম না থাকলেও তাকে ধরা হচ্ছে কেন? অভিযোগ সেই সময় পুলিশ রেবতীদেবীকে মারধর করেন। এই ঘটনার পরই নিখিল ধাড়া বাদে বাকি তিনজনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শিবমন্দিরের কাছে অবরোধ করেন গ্রামের বাসিন্দারা। জখম রেবতী সামন্তকে পিংলা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর কোমরে আঘাত রয়েছে। এরপর জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তনয়া দাস ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি গৌতম জানা থানায় পৌঁছান।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন এসডিপিও সন্তোষকুমার মণ্ডল ও সিআই সুপ্রিয় বসু। তনয়াদেবী বলেন, “বারবার পুলিশি হানায় মানুষ বিভ্রান্ত। তাই তিনজনের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।” দীর্ঘক্ষণ গণ্ডগোলের পরে নিখিল ধাড়াকে গ্রেফতার করে বাকি তিনজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে ডেবরা সার্কেলের পুলিশের দাবি, ওই তিনজনকে মদ্যপান, জুয়ার মতো জামিনযোগ্য ধারায় ধরা হয়। কিন্তু পরে গ্রামবাসীদের দাবিতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.