বিএসএফের মারে যুবকের মৃত্যু, উত্তেজনা স্বরূপনগরে
সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানদের লাঠি ও ইটের ঘায়ে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে শনিবার অশান্ত হল উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্ত। সোহাগ শাহজি (২২) নামে ওই যুবকের বাড়ি হাকিমপুরের উত্তরপাড়ায়।
বিএসএফের একটি সূত্রের দাবি, ওই যুবক পাচারকারী। পাচারকারীদের আটকানোর জন্যই ইট ছোড়া হয়। কিন্তু ওই যুবককে নির্দোষ দাবি করে গ্রামবাসীরা বিএসএফের চারটি মাচায় (সেন্ট্রি পোস্ট) ভাঙচুর চালিয়ে, আগুন ধরিয়ে দেন। বিএসএফের কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত বিএসএফ ও পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
বিএসএফের এডিজি (পূর্বাঞ্চল) বংশীধর শর্মা বলেন, “তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোনও জওয়ান জড়িত থাকলে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মৃতের দাদা আতাউর শাহজির দাবি, “চাষাবাদ করে সংসার চলে। ভাই কোনও ভাবেই পাচারে যুক্ত নয়। তাই এ ভাবে ওর মৃত্যু গ্রামবাসী মানতে পারেননি।”
বিএসএফ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্বরূপনগর সীমান্ত দিয়ে পাচার বেড়ে গিয়েছে। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ সীমান্তের সোনাই নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে দাঁত মাজছিলেন সোহাগ। আরও কয়েকজন সেখানেই নদীতে স্নান করছিলেন। সেই সময়ে কয়েক জন পাচারকারী সাইকেল-সহ নানা সরঞ্জাম পাচারের চেষ্টা করলে বিএসএফের ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা বাধা দেন। অভিযোগ, এক জওয়ান সোহাগকে পাচারকারী ভেবে তাঁর মাথায় লাঠি দিয়ে মারেন। সোহাগ নদীতে ছিটকে পড়েন। পাচারকারীদের পালাতে দেখে জওয়ানেরা ইট ছুড়তে শুরু করেন। ইটের ঘায়েও চোট পান সোহাগ। স্নান করতে আসা রাজিবুল মিস্ত্রি নামে এক কিশোরও আহত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা সোহাগ ও রাজিবুলকে উদ্ধার করতে গেলে বিএসএফ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা বাধে। বিএসএফ ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলে গ্রামবাসীরা ওই দু’জনকে জল থেকে উদ্ধার করেন। শাঁড়াপুল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাজিবুলকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সোহাগকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এর পরেই তেতে ওঠে এলাকা। সীমান্তে পাচার আটকানোর পরিবর্তে বিএসএফ এক নিরীহ যুবককে মেরে ফেলল, এই অভিযোগে গ্রামবাসীরা বেরিয়ে আসেন। হাকিমপুর তিন নম্বর, ওয়াটার পাম্প, ফকিরপাড়া এবং ঘোষপাড়া এলাকায় বিএসএফের চারটি মাচায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জওয়ানদের দিকে ইটও ছোড়া হয়। প্রহরারত জওয়ানরা হাকিমপুর ক্যাম্পে চলে যান। পুলিশ সোহাগের দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট হাসপাতালে পাঠায়। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, জওয়ানেরা তাঁদের উপর নানা ভাবে অত্যাচার চালাচ্ছেন। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, “জওয়ানেরা সোহাগকে প্রথম বার উদ্ধারের সময় বাধা না দিলে ওকে বাঁচানো যেত।” বিএসএফের দাবি, সীমান্তে কড়া পাহারার কারণে পাচারকারীরা সুবিধা করতে পারছে না। গত ছ’মাসে প্রায় তিন কোটির সোনা, রুপো-সহ নানা জিনিস আটক হয়েছে। তাই জওয়ানদের বিরুদ্ধে তারা গ্রামবাসীদের খেপাচ্ছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.