দেবশ্রী অতিথি, উন্নয়ন তো আমি করছি, জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে এলাকায় না আসা এবং উন্নয়নের কাজ না করার অভিযোগ ছিল ঘরে-বাইরে। লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই অসন্তোষ সামাল দিতে নিজে রায়দিঘিতে এসে সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার রায়দিঘি স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে দাঁড়িয়ে রায়দিঘির জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মমতা। তার পরেই মঞ্চে উপস্থিত দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, “আমি অভিযোগ শুনছি, এখানকার বিধায়ক দেবশ্রী রায় আসেন না। কাজ করেন না। সেই জন্যই আমি রায়দিঘি এসেছি। ও অতিথি। আমি ওঁকে এখানে নিয়ে এসেছি। এখান থেকে জিতিয়েছি। আমিই তো উন্নয়ন করছি। আমি আবার রায়দিঘি আসব। ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে কেন? আমি ওঁর পাশে আছি।”
পাশাপাশি। সভামঞ্চে দেবশ্রী রায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রায়দিঘিতে সুমন বল্লভের তোলা ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর কথা কার্যত লুফে নিয়ে সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একমত। সত্যিই এখানকার বিধায়ক অতিথি। অনুষ্ঠান হলে তবেই তাঁকে এখানে দেখা যায়।” গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কান্তিবাবুকে হারিয়েই জিতেছিলেন দেবশ্রী। কিন্তু হারের খবর পেয়েই ডায়মন্ড হারবারের গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সোজা রায়দিঘি চলে যান তিনি। সেই থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু’-তিন দিন করে তিনি ওই এলাকায় কাটিয়েছেন। গত বার রায়দিঘির বিধায়ক থাকাকালীন কান্তিবাবুর যে রুটিন ছিল, তা-ও কার্যত বদলায়নি।
সেখানে ভোটের কয়েক মাস পর থেকেই দেবশ্রীর বিরুদ্ধে এলাকায় নিয়মিত না আসার অভিযোগ উঠতে থাকে। শুধু বিরোধীরা নন, দলেরই একটি অংশ এই নিয়ে সরব হয়। শেষ পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে রায়দিঘি কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদারকে। কিন্তু এত কিছুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী ‘পাশে আছি’ বলায় অভিভূত দেবশ্রী। তাঁর দাবি, “দল ও বিরোধীদের মধ্যে অনেক নিন্দুক আছেন। তাঁরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। দিদি জবাব দিয়েছেন। আমি দিদির সৈনিক হিসেবে কাজ করছি। আমিও নিয়মিত এসে কাজ করার চেষ্টা করি।”
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ হেলিকপ্টারে রায়দিঘির খাঁরী হাইস্কুল মাঠে এসে নামেন মমতা। জনতার ভিড়ে হেলিপ্যাড ঘিরে তৈরি বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। সেখান থেকে গাড়িতে সভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। রায়দিঘির জন্য যে তিনটি প্রকল্পের কথা তিনি ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ঠাকুরান নদীতে সেতু তৈরি, ৫০ শয্যার রায়দিঘি হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা এবং সোনাটিকারি নদীর উপরে থমকে থাকা সেতু তৈরির কাজ দেড় বছরের মধ্যে শেষ করা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওই সেতু তৈরির ঠিকাদার পালিয়ে গিয়েছে। কাজ করতে গিয়ে কিছু লোক দুষ্টুমি করছে। আমি পরিবহণ দফতরকে বলেছি। রাজ্যসভার সাংসদের তহবিলের টাকায় সেতু তৈরি হবে।”
এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জন্য সব মিলিয়ে ৪৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। একগুচ্ছ সরকারি পরিষেবা প্রদানও ছিল।
রায়দিঘিতে পর্যটনের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সে দিকেও তাঁর নজর রয়েছে বলে মমতা জানান। পুলিশের উদ্যোগে ৭৫৭টি দল নিয়ে আয়োজিত ‘সুন্দরবন গোল্ড কাপ’ ফুটবল প্রতিযোগিতার পুরস্কার দেন। কন্যাশ্রী প্রকল্পের উপভোক্তা ৭০ হাজার ছাত্রীর জন্য রিমোটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার কাজেরও সূচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কলকাতা আম্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ড’-এর স্টল খোলা হচ্ছে। সেখানে বাংলার হস্তশিল্প ও কারুশিল্পের সম্ভার থাকবে। দূর-দূরান্তের মানুষ কিনতে পারবেন। বাংলার শিল্পকলা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।”
এ দিনই রিমোটে রায়দিঘি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করে মমতা দাবি করেন, “আমাদের সরকারই এই স্টেডিয়াম গড়েছে।” কান্তিবাবু অবশ্য পাল্টা বলেন, “ওই স্টেডিয়াম বাম আমলেই তৈরি হয়েছে। দু’বার করে উদ্বোধন করা হল।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.