|
|
|
|
ডেবরায় গোষ্ঠী-কোন্দল, মারধর তৃণমূল নেত্রীকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
স্বনির্ভর দলগুলিকে হাঁস-মুরগি বিলিতে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তোলায় তৃণমূলের এক জেলা মহিলা নেত্রী ও তাঁর ছেলেকে মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার সত্যপুরের এই ঘটনায় আক্রান্ত জয়ন্তী ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে সঞ্জয় ভট্টাচার্য গুরুতর জখম অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযোগের তির তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল ও দলীয় কর্মী লোকেশ চক্রবর্তীর দিকে। ঘটনার পর তদন্ত করতে এলাকায় গিয়েছিলেন এসডিপিও সন্তোষকুমার মণ্ডল। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার তৃণমূলের পার্টি অফিস সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন জয়ন্তীদেবী। হঠাৎই সেখানে হাজির হয়ে পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল তাঁকে বাড়ির পঞ্চায়েত কর জমা দিতে বলেন। এরপরই জয়ন্তীদেবী পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় চটে যান বিশ্বজিৎ। শুরু হয় দু’জনের কথা কাটাকাটি। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন লোকেশ চক্রবর্তী-সহ স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। তাঁরা জয়ন্তীদেবীর মাথায়, পিঠে, বুকে লোহার রড দিয়ে মারেন বলে অভিযোগ। ছুটে আসেন জয়ন্তীদেবীর ছেলে সঞ্জয় ভট্টাচার্য। মাকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ডেবরা এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সূত্রপাত। ওই এলাকার তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি ও তাঁর একটি বিরোধী শক্তির মতবিরোধ থেকে সংঘর্ষ প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার। রাধাকান্ত অনুগামী ব্লক তৃণমূল সভাপতি রতন দে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্যের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কথাও কারও অজানা নয়। গত ৫ ডিসেম্বর রাতে চকবাজিত গ্রামে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস পোড়ার ঘটনার পিছনেও দলের গোষ্ঠীকোন্দলকে দায়ী করেছেন দলীয় কর্মীদের একাংশ। জখম তৃণমূল নেত্রী জয়ন্তীদেবী, ব্লক তৃণমূল সভাপতি রতন দে-র বিরোধী বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। আর তাই রতন অনুগামী পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডলের এই মারধরের ঘটনা ফের গোষ্ঠী কোন্দলেরই পুনরাবৃত্তি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ঘটনার কথা স্বীকার করে ব্লক সভাপতি রতন দে বলেন, “শুনেছি দু’পক্ষেরই দোষ ছিল। আমি পুলিশকে ঘটনার তদন্ত শুরু করতে বলেছি।” এলাকার তৃণমূলের যুবা নেতা সুব্রত দাসের দাবি, “এলাকায় হাঁস-মুরগি বিলি নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে দেখেই জয়ন্তীদেবী প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে মারধর করেছে বিশ্বজিৎ মণ্ডল-সহ তিনজন।” যদিও সত্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মনীন্দ্রনাথ কামিল্যার দাবি, “বিশ্বজিত মারধর করার ছেলে নয়। বরং বিশ্বজিৎকে জয়ন্তী ভট্টাচার্যই অকারণে মেরেছে বলে জেনেছি।” |
|
|
|
|
|