অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেল গত বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। ৫০ ওভারে ভারতের তোলা ২২১-৮ ইংল্যান্ড তুলে ফেলল পাঁচ বল হাতে রেখে। কিন্তু তিন উইকেটে হারের পরেও বলব, ভবিষ্যতের সম্ভাব্য লগ্নি এই বিশ্বকাপেই হয়ে থাকল।
কুলদীপ যাদব। উপমহাদেশের একমাত্র চায়নাম্যান। আর বিজয় জোল। টিমের অধিনায়ক।
কুলদীপকে নিয়ে কথাবার্তা এক বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে। সবাই জানত, একজন বাঁ হাতি স্পিনার ভারত পেয়েছে, যে চায়নাম্যান। এই মুহূর্তে ক্রিকেটজগতে চায়নাম্যান বোলার আছে বলতে শুধু অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাড হগ। চায়নাম্যান হতে গেলে সবচেয়ে বেশি দরকার কব্জির উপর নিয়ন্ত্রণ। চলতি বিশ্বকাপের কয়েকটা ম্যাচে কুলদীপকে দেখে মনে হয়েছে, ওর ওই নিয়ন্ত্রণটা আছে। ওকে খেলতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা মুশকিলে পড়ে যাচ্ছে। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে চারটে ম্যাচে এগারোটা উইকেট পেল ছেলেটা (এই টুর্নামেন্টে এখনও সর্বাধিক)। শনিবারও কুলদীপ পেল তিনটে (৩-৪৬) উইকেট।
আর জোলকে ভাল লাগার কারণ ছেলেটার হাতে সব ধরনের শট আছে। শুধু একটা ব্যাপার ঠিক করতে হবে। ব্যাটিংয়ের সময় জোল মাঝে মাঝে অ্যাক্রস খেলে। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চলে যায়, পা যায় না। ভিতরে ঢুকে আসা বল মাঝে মাঝেই প্যাডে লাগে। ইন্ডিয়া খেলতে হলে কিন্তু এটা শুধরে নিতে হবে। শুধরে নিতে হবে রঞ্জি ট্রফিতে।
কারণ রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরির আসল জায়গা রঞ্জি, অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ নয়। সাম্প্রতিকে বিরাট কোহলি ছাড়া আর কেউ কিন্তু অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ টিম থেকে সিনিয়র দলে আসেনি। দু’বছর আগে ভারতের অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমে থাকা বাবা অপরাজিত, সন্দীপ শর্মা বাদে কেউ রঞ্জিতেও নিয়মিত নয়। ওই টিমের ক্যাপ্টেন উন্মুক্ত চন্দও নয়। তাই জোল বা কুলদীপ কতটা যেতে পারবে, ঠিক করে দেবে রঞ্জি।
তবে কুলদীপের সম্ভাবনা জোলের চেয়ে বেশি কারণ ভারতে এই মুহূর্তে ভাল স্পিনার নেই। সেখানে ও বিরল প্রজাতির। ওকে তাই সংরক্ষণ করতে হবে। সোজা কথায়, সংরক্ষণ করতে হবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে। টি-টোয়েন্টিতে অনেক ভাল বোলারও বেধড়ক মার খেয়ে যায়। কুলদীপের বয়স অল্প, ওর ক্ষেত্রে সেটা ঘটলে চাপে পড়ে যেতে পারে ছেলেটা। |
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ২২১-৮ ৫০ ওভারে (হুদা ৬৮, সরফরাজ ৫২ ন.আ., জোল ৪৮)
ইংল্যান্ড ২২২-৭ ৪৯.১ ওভারে (ডাকেট ৬১, কুলদীপ ৩-৪৬)
|
অধিনায়ক কোহলির ‘প্রস্তুতি’। |
অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ থেকে ভারত ছিটকে যাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা পরে এশিয়া কাপ খেলতে রবিবার বাংলাদেশ পৌঁছে যাচ্ছেন কোহলিরা। এশিয়া কাপে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নেই। তাই ক্যাপ্টেন্সির ব্যাটন বিরাট কোহলির হাতে। বাংলাদেশ উড়ে যাওয়ার আগের আটচল্লিশ ঘণ্টায় ক্যাপ্টেন কোহলির ক্যালেন্ডার ছিল প্রায় ক্রিকেটহীন। এক দিন চলল টানা বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং। যার ফাঁকে নিজের ছবি টুইট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘লম্বা শ্যুটের পর একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।’ আর শনিবার কোহলির মেন্যুতে ছিল খাওয়াদাওয়া, বাইক চালানো আর বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড়। যার পরে কোহলির টুইট, ‘প্রচুর খেলাম। বাইক চড়লাম আর বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটালাম। খুব মজায় কাটল সারা দিন!’ |