|
|
|
|
অরুণাচলে দাঁড়িয়ে চিনকে আক্রমণ মোদীর
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
২২ ফেব্রুয়ারি |
দেবেন না, ভাঙতে তিনি দেবেন না।অরুণাচলের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিনকে এমনই বার্তা দিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বললেন, “সৌগন্ধ মুঝে ইস মিট্টি কী, ম্যায় দেশ নেহি মিটনে দুঙ্গা। ম্যায় দেশ নেহি টুটনে দুঙ্গা।”
চিন বিরোধী স্লোগান এবং পড়শি দেশকে কড়া ভাষায় সাবধান করে অরুণাচলবাসীর মন জিততে নামলেন মোদী। উস্কে দিলেন দেশপ্রেম। কালিকা পুরাণের প্রসঙ্গে টেনে প্রমাণ করলেন, যুগ-যুগান্ত ধরে অরুণাচল ভারতেরই অঙ্গ। এক ঝলকে এটাই ছিল আজ অরুণাচলের পাসিঘাটের ‘মোদী ম্যাজিক’।
পাহাড়ি শহর পাসিঘাটে আজ প্রায় ৪০ হাজার মানুষের সমাবেশ বিজেপির কাছে নির্বাচনী সভার নিরিখে আশাতীত সাফল্য। মোদী ছিলেন একেবারে মারমুখী মেজাজে।
শুরু থেকেই ভাষণের সুর চড়ায় বেঁধে নেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। তাঁর কথায়, “চিন এখনও পুরনো আমলের আগ্রাসন ও সাম্রাজ্য বিস্তারের নীতি আঁকড়ে বসে রয়েছে। ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ অরুণাচলকে বার বার নিজেদের বলে দাবি করছে। চিনকে মনে করিয়ে
দিই, বিশ্বের কোনও ক্ষমতা অরুণাচলকে ভারত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আমরা চিনকে ভয় পাই না।” চিন সরকারের প্রতি তাঁর পরামর্শ, “যুগ বদলেছে। এখন মানুষ কতটা ভাল আছে, দেশ কতটা উন্নতি করছে তার ভিত্তিতেই রাষ্ট্রের গুণাগুণ মাপা হয়। কে কতটা রাজ্যবিস্তার করল, তা দিয়ে নয়। চিনের উচিত ভারতের সঙ্গে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখা।
তাতে দু’দেশেরই মঙ্গল।” মোদী বলেন, “১৯৬২ সালে এখানকার মানুষ চিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। ইংরেজ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এখানকার অনেক বীর সৈনিক ছিলেন। কার্গিলের যুদ্ধেও অরুণাচলের সৈনিকরা পাকিস্তানকে হারিয়েছেন।” তাঁর কথায় প্রত্যেক অরুণাচলবাসী ভারতের এক এক জন অতন্দ্র প্রহরী। প্রতিজ্ঞা করছি, আমি যত দিন রয়েছি, চিন এই রাজ্যের কণামাত্র দখল করতে পারবে না।”
অরুণাচল যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, তার প্রমাণে পুরাণের আশ্রয় নেন মোদী। কালিকা পুরাণ মতে, অরুণাচলের নামনি দিবাং উপত্যকার (তৎকালীন ভীষ্মকনগর) রাজা ভীষ্মকের কন্যা ছিলেন রুক্মিণী। কৃষ্ণ তাঁকে নিয়ে পালিয়ে যান। পথে পশ্চিম সিয়াং-এর মালিনীথানে পার্বতী তাঁদের আতিথ্য দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গ টেনে মোদী অরুণাচলের সঙ্গে গুজরাতের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, “এখানকার মেয়ের সঙ্গে গুজরাতবাসী, দ্বারকাধিপতি কৃষ্ণের বিয়ে হয়েছিল। গুজরাত ও অরুণাচলের সম্পর্ক সেই প্রাচীন কাল থেকেই আত্মীয়তায় বাঁধা। সেই আত্মীয়তা আরও মজবুত করার সময় এসেছে।”
দিল্লিতে স্থানীয় ছাত্র নিদো টানিয়ার হত্যার প্রসঙ্গ অবধারিত ভাবেই তোলেন মোদী। কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মোদী বলেন, “স্বাধীনতার এত বছর পরও অরুণাচলে কোনও উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান নেই। পড়তে, চাকরি করতে এখানকার ছেলেমেয়েদের বাইরে যেতে হয়। সেখানে ওদের বরাদ্দ কেবল অবহেলা, নিরাপত্তাহীনতা। সঙ্গত কারণেই তাঁদের মনে রাগ জমা হচ্ছে। সেই সুযোগে বিদেশি শক্তি মাদকচক্রে টানছে তাঁদের। টানছে সন্ত্রাসবাদীরাও। এখানকার যুব প্রজন্মের স্বার্থেই দিল্লিতে পরিবর্তন দরকার।” |
|
|
|
|
|