আন্তর্জাতিক মানের কার্গো হাবের শিলান্যাস হল হলদিয়ায়। শনিবার বিকেলে হলদিয়া পুরসভার ১৬ নং ওয়ার্ডের চকদ্বীপা মৌজায় এই প্রকল্পের শিলান্যাস করে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দুটি বড় সংস্থা এই প্রকল্পের জন্য এগিয়ে এসেছে। এদের সহযোগিতা করুন।” প্রকল্পের নির্মাণ কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানিয়ে দেন শুভেন্দু। তাঁর আহ্বান, “ট্রেড চালু না হলে ট্রেড নিয়ে রাজনীতি করবেন না।”
১৯৮ একর জমিতে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কার্গো হাব গড়ে তুলবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এমএমটিসি এবং পরিকাঠামো গঠনকারী সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনানশিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএল অ্যান্ড এফএস)। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমএমটিসি-র ডিরেক্টর বেদ প্রকাশ। তিনি এ দিন বলেন, “আমরা ১৫টি বন্দরে সমীক্ষা করে দেখেছি, হলদিয়াই বিনিয়োগের সেরা জায়গা। শুভেন্দুবাবুর সহযোগিতা এই প্রকল্পে বিনিয়োগে আমাদের উৎসাহী করেছে।” হলদিয়া পুরসভা থেকে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ, সকলেই প্রকল্প রূপায়ণে সব রকম সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন শুভেন্দু। |
দু’টি পর্যায়ে দেড় বছরের মধ্যে এই কার্গো হাব গড়ে ওঠার কথা। এখানে মূলত বৃহদাকার গুদাম গড়ে উঠবে। বন্দরে যাতায়াতের পথে চা-পাট-লৌহজাত নানা সামগ্রী প্রাথমিক ভাবে সেখানে রাখা হবে। এমএমটিসি-র ডিরেক্টর জানিয়েছেন, প্রকল্পে এক হাজার জনের কর্মসংস্থান হবে। কাজের ক্ষেত্রে উদ্বাস্তু এবং জমিদাতারা অগ্রাধিকার পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন শুভেন্দু। এ দিন সভায় উপস্থিত জমিদাতাদের উদ্দেশে বলেন, “আমার সাংসদ হওয়ার আগে চকদ্বীপা মৌজায় জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। তখন আপনারা নামমাত্র টাকায় জমি দিয়েছেন। এখনও কেউ কেউ টাকা নেননি। তাঁরা জমির দামের পুনর্মুল্যায়নের দাবি করেছেন। তবে এটা আদালতের ব্যাপার।”
হলদিয়ায় শিল্পের সম্ভাবনা উজ্জ্বল দাবি করে এ দিন নানা পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি জানান, আগামী ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সতীশ সামন্ত ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধন হবে। ওই দিনই ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হলদিয়ার দ্বিতীয় জল-প্রকল্পের শিলান্যাস হবে। অগস্টে উদ্বোধন হবে ৬০০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের। শুভেন্দু আরও জানান, চিনা সংস্থা সাইনোস্টিলের প্রকল্পও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। তবে কোনও প্রকল্পের জন্যই তাঁরা জোর করে জমি নেওয়ার পক্ষপাতী নন বলে এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন তমলুকের সাংসদ। তিনি জানান, এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাণেশ্বরচকে সিইএসসি-র প্রকল্পের জন্য ৯১ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে, নন্দীগ্রাম বাইপাসের জন্য জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। শুভেন্দুর কথায়, “মানুষের সঙ্গে কথা বলে জমি নিলে সমস্যা হয় না।” |