স্বামীকে মারধর করে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল কাঁকসায়। শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি। পুরুলিয়ার পাড়া থেকে আসা ওই মহিলা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু তিনি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজি হননি।
শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে বর্ধমানের কাঁকসা থানার রাজবাঁধ এলাকায়। মহিলার অভিযোগ, কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তিন যুবক তাঁদের অটোয় চাপিয়ে দুর্গাপুরে নিয়ে যাচ্ছিল। মাঝপথে অটো থেকে নামিয়ে নির্জন ক্যানাল পাড়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
মহিলা জানান, পুরুলিয়ার পাড়া থানার বামুনবাদে তাঁদের বাড়ি। স্বামীর রোজগার নেই। বাড়িতে শ্বশুরের সঙ্গে স্বামীর অশান্তি চলছিল। শুক্রবার স্বামী রেগে গিয়ে তাঁকে নিয়ে কাজের খোঁজে বাড়ি ছাড়েন। জয়চণ্ডী স্টেশনে তিন যুবকের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। তাঁরা কাজের খোঁজে বেরিয়েছেন শুনে যুবকেরা তাদের সঙ্গে দুর্গাপুর যেতে বলে। মহিলার কথায়, “ওরা বলেছিল, আমার স্বামীকে চাকরি জোগাড় করে দেবে। আমি ওদের বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে থাকব।”
ওই তিন যুবকের সঙ্গেই ট্রেনে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন দম্পতি। কিন্তু ভুল করে দুর্গাপুরে না নেমে পরের স্টেশন রাজবাঁধে নামেন। সেখান থেকে একটি অটোয় দুর্গাপুরের পথে রওনা দেন। মহিলার অভিযোগ, কিছু দূর যাওয়ার পরে তিন যুবক অটো থেকে তাঁদের নামতে বলে। অটোটিকে ছেড়ে সকলে হাঁটতে শুরু করেন। কিছু দূর গিয়ে স্বামীকে মেরে-ধরে সরিয়ে দেয় যুবকেরা। রাজবাঁধে ক্যানাল পাড়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে।
মাঝরাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ মহিলার স্বামীকে উদ্ধার করে। মহিলাকে পেতে ভোর হয়ে যায়। থানায় পৌঁছে তিনি গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পুলিশ তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তিনি পরীক্ষা করাতে রাজি হননি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সে কারণে নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে ২৪ ঘণ্টা ভর্তি রাখা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে যদি তিনি পরীক্ষায় সম্মতি দেন, তা করানো হবে। এক পুলিশকর্তার কথায়, “মহিলার বাহ্যিক চোট বিশেষ নেই। ডাক্তারি পরীক্ষা করানো গেলে তদন্তের অনেকটাই অগ্রগতি হবে। অন্যথায় অন্য সূত্রের উপরে বেশি জোর দিতে হবে।”
কাঁকসা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা। ১৩ ফেব্রুয়ারি কাঁকসারই পিয়ারিগঞ্জে এক আদিবাসী গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় পুলিশি প্রহরা জোরদার করার দাবি তোলা হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, “এ দিনের ঘটনায় ফের মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি আমরা।” মহিলার স্বামী আপাতত কাঁকসা থানাতেই রয়েছেন। |