পিন নম্বর জেনে কেনাকাটা প্রতারকের
ব্যাঙ্ক কর্মীর পরিচয় দিয়ে দুই ভাইয়ের এটিএম কার্ডের পিন নম্বর (চার অক্ষরের গোপন সংখ্যা) নেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁদের অ্যাকাউন্ট খালি করে সেই টাকায় কেনাকাটা করল প্রতারক।
ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার এসএমএস পেয়ে ওন্দার ওই দুই ভাই আসল ঘটনাটি জানতে পারেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওন্দার মান্ডিহা এলাকার বাসিন্দা নারাণ দে ও তাঁর ভাই তপন দে প্রতারণার ওই অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাইয়ের দু’টি অ্যাকাউন্ট মোট ১৬ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। লোপাট হওয়া টাকার পরিমাণ বেশি না হলেও সম্প্রতি এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনা জেলায় বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কী ভাবে তোলা হয়েছে ব্যাঙ্কের কাছে আমরা সেই তথ্য চেয়েছি। এই ঘটনায় কোনও ব্যাঙ্ক কর্মী জড়িত থাকতে পারে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নেট ব্যাঙ্কিংয়ের এই যুগে ক্রিকেটার ভি ভি এস লক্ষ্মণ থেকে বহু মানুষ এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের সচেতনতার জন্য প্রচারও করছে। তবে গ্রাহকরা সচেতন না হলে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না বলে মত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের।
এখানে কী হয়েছিল?
নারাণবাবু পেশায় কৃষিজীবী। তাঁর ভাই তপনবাবু একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। নারাণবাবু জানান, বুধবার দুপুরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে এক ব্যক্তি ফোন করেন নিজেকে ব্যাঙ্কের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। এমনকী নারাণবাবু ও তাঁর ভাইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও তিনি ঠিকঠাক জানিয়েছিলেন। নারাণবাবুর কথায়, “আমাদের অ্যাকাউন্ট নম্বর সঠিক ভাবে বলার পরে আমার বিশ্বাস হয় তিনি সত্যিই ব্যাঙ্কের কর্মী। তিনি জানিয়েছিলেন, আমাদের দু’জনের এটিএম কার্ডের ‘পিন’ পরিবর্তন করা হবে। তাই তিনি আমাদের পিন জানতে ফোন করেছেন। আমি বিশ্বাস করে দু’জনের পিন তাকে জানাই।” এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁদের ভুল ভাঙে।
নারাণবাবু বলেন, “পিন জানানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার মোবাইলে এসএমএস আসে যে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০০০ ও ভাইয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। যে নম্বর থেকে ওই ব্যক্তি ফোন করেছিলেন, ফোন করতে গিয়ে দেখি তা বন্ধ। তখনই বুঝি যা সর্বনাশ হওয়ার হয়ে গিয়েছে।” বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্ক থেকে লেনদেনের নথিপত্র সংগ্রহ করে ওন্দা থানায় অভিযোগ করেন তিনি। ওন্দার যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে নারাণবাবু ও তাঁর ভাইয়ের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জিনিসপত্র কেনাকাটা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রতারক ওই দু’টি অ্যাকাউন্টের নামে জাল এটিএম কার্ড ব্যবহার করে থাকতে পারেন বলে ব্যাঙ্ককর্মীদের অনুমান। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন্ রাজ্য থেকে টাকা তোলা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।
ওই ব্যাঙ্কের শাখা প্রবন্ধক অনুপম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনায় ব্যাঙ্কের কোনও কর্মীর জড়িত থাকার প্রশ্নই নেই। গ্রাহকদের আমরা বারবার বিভিন্ন ভাবে এটিএমের পিন কাউকে জানাতে বারণ করি। কিন্তু গ্রাহকরা সেই একই ভুল করছেন।” ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, নারাণবাবুর মতো আরও কিছু গ্রাহকের কাছেও এটিএমের পিন জানতে চেয়ে একই রকম ফোন এসেছিল। কিন্তু ফাঁদে পা দিয়েছেন অল্প ক’জন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.