শিলান্যাসের ১১ মাস পর মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মা ও শিশু সুরক্ষাকেন্দ্রের কাজ শুরুই হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দু’বার টেন্ডার ডাকা হলেও কোনও দরপত্র জমা না পড়ায় সমস্যায় পড়েছে পূর্ত দফতর। সম্প্রতি তৃতীয় বার টেন্ডার ডাকা হয়। এ বারও যদি কোনও ঠিকাদার দরপত্র না জমা দেন ওই কেন্দ্রের কাজ কবে শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলে পূর্ত দফতরের আশঙ্কা।
জেলায় শিশুমৃত্যু রুখতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। স্থানীয় বিধায়ক পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী ২০১৩ সালের ১০ মার্চ হাসপাতাল চত্বরে মানসিক বিভাগের সামনে মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রের শিলান্যাস করেন। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করে নয় তলা মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র তৈরি হবে। কেন্দ্রের জন্য প্রথম পর্যায়ে চার তলা ভবনের জন্য ১১ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য। পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার বিধানচন্দ্র দেব বলেন, “বহরমপুর অফিস থেকে দু’বার টেন্ডার ডাকা হয়। কিন্তু কোনও ঠিকাদার দরপত্র দেয়নি। তৃতীয় বার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। দেখা যাক কী হয়!” পর্যটনমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পের কাজ পূর্ত দফতর দেখছে। আশা করি, শীঘ্রই ওই কেন্দ্রের কাজ শুরু হবে।”
২০১১ ও ২০১২ সালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। ২০১৩ শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৯২২। শিশু মৃত্যু কমাতে কলকাতা থেকে মালদহে একাধিক বার বিশেষজ্ঞ দল এসেছে। বাইরে থেকে চিকিৎসক আনা হয়। হাসপাতালে এসএনসিইউ ইউনিট গড়া হলেও শিশু মৃত্যুর হার স্বাভাবিক না হওয়ায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। সেই মতো গত জানুয়ারি মাসে পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু দরপত্র জমা পড়েনি।
মালদহ বিল্ডার্স অ্যাসোয়িসেশনের সহসভাপতি গোপাল চৌধুরী বলেন, “প্রথম পর্যায়ের কাজটি দুই বছরের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। তার পরে বাকি কাজ হবে। নয় তলার কাজ ৪-৫ বছর সময় লাগবে। কিন্তু দরপত্রে ‘রেট ফিক্সড’ বলা হয়েছে। কিন্তু দাম তো বাড়বেই। তাতে খরচ বাড়বে। সে সে জন্যই কোনও ঠিকাদার এই কাজ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।”
মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র চালু হলে বাসিন্দারা যে উপকৃত হতেন মানেন জেলার দুই কংগ্রেস সাংসদ, মৌসম বেনজির নুর, আবু হাসেম খান চৌধুরী। মৌসম বলেন, “সময় মত কাজ হলে অনেক মা ও শিশু অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারত।” আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “শিলান্যাসের পর কাজ শুরু করা উচিত ছিল। এক বছর হতে চলল অথচ জেলার দুই মন্ত্রীরই এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।” |