ঘূর্ণাবর্ত আর উচ্চচাপের দেওয়ালে
ধাক্কা খেয়ে ফের গতি হারাচ্ছে শীত
বহাওয়ার মেজাজ-মর্জিতে ফের পরিবর্তন!
উচ্চচাপের বাধা কেটে গিয়ে গত দু’দিনে উত্তুরে হাওয়ার জোর বাড়ছিল। জবরদস্ত কামড় বসানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল ফিরে আসা শীত। ‘ফাল্গুনী’ শীতের দাপটকে আবার কিছুটা রুখে দিতে চলেছে পশ্চিম ভারতের একটি ঘূর্ণাবর্ত, যার জেরে তৈরি হওয়া উচ্চচাপ উত্তুরে বাতাসের সামনে বাধার দেওয়াল তুলে দিতে পারে। পরিণামে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা বাড়বে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। যদিও পরিস্থিতিটিকে শীতের বিদায়লগ্ন হিসেবে আবহবিদেরা এখনই অভিহিত করতে নারাজ।
উত্তুরে হাওয়ার সামনে ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপের গেরো চলতি মরসুমে নতুন নয়। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় এমনই এক উচ্চচাপের বাধায় শীত দক্ষিণবঙ্গ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। দখিনা বাতাসে তখন মিলতে থাকে অল্পসল্প বসন্তের আঁচ। উচ্চচাপ মিলিয়ে যেতেই দক্ষিণবঙ্গে শীত আবার জাঁকিয়ে বসে ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে। মাঘ শেষে ফিরে আসা ওই অকাল শীতের দৌলতে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রায় শৈত্যপ্রবাহের মতো অবস্থা হয়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ধাক্কায় কোথাও চার, কোথাও বা পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায়।
প্রথম ফাল্গুনে জাঁকিয়ে শীত পোহানোর জন্য বঙ্গবাসী যখন কোমর বাঁধছে, তখনই ফের আবহাওয়ার মতি বদলে গেল। বৃহস্পতিবার হাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিম ভারতে তৈরি ঘূর্ণাবর্তটি উত্তুরে হাওয়া টেনে নেবে। সৃষ্টি হবে একটি উচ্চচাপ বলয়। দুইয়ে মিলে দক্ষিণবঙ্গের দিকে উত্তুরে বাতাসের প্রবাহ আটকে দেবে। আর সেই ফাঁকে এখানকার পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়বে বঙ্গোপসাগরের জোলো হাওয়া। তাতে পারদ ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে।
এর আভাস মিলতে শুরু করেছে। আলিপুর হাওয়া দফতরের হিসেবে, বুধবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৪ ডিগ্রি। বুধবার রাত থেকেই পারদ-পতনে মন্দার টান ধরেছে। ফলে মহানগরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪.৩ ডিগ্রিতে উঠে গিয়েছে। মানে, চব্বিশ ঘণ্টায় প্রায় ১ ডিগ্রি উত্থান! আলিপুরের পূর্বাভাস, এই প্রবণতা আপাতত বজায় থাকবে। আজ, শুক্রবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকতে পারে। “তবে তাপমাত্রা বাড়লেও গভীর রাতে কিংবা ভোরে ঠান্ডা মালুম হবে।” বলেছেন আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।
উত্তুরে হাওয়া বইবে না। সাগরের জোলো বাতাস ঢুকবে। তা হলে কি এ বার শীতের প্রস্থানের পালা?
আবহবিদেরা নিশ্চিত নন। কেননা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে এখনও একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ইরান-আফগানিস্তান-পাকিস্থান হয়ে এসে কাশ্মীরে আছড়ে পড়ছে। যার জেরে কাশ্মীর ও লাগোয়া হিমাচল-উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টি-তুষারপাত হচ্ছে অবিরাম, তামাম উত্তর ভারত জুড়ে কনকনে ঠান্ডা। কাশ্মীর-হিমাচলের বরফ ছুঁয়ে আসা ওই হিমেল বাতাসই পূর্ব ভারতে বয়ে আসছিল। আবহবিদদের বক্তব্য: ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপের জোড়া ফলায় তার পরাক্রম কমছে বটে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, শীত চলে গেল। কারণ, পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় ছেদ পড়ার ইঙ্গিত নেই। বরং নতুন এক ঝঞ্ঝার পূর্বাভাস রয়েছে কাশ্মীরে। সেটির প্রভাবে ফের বরফছোঁয়া বাতাস উত্তর ভারত-বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে পূর্ব ভারতের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। তার মধ্যে পশ্চিম ভারতের ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপ দুর্বল হলে সেই শীতল বায়ুপ্রবাহ বাংলায় ঢুকে ফের শীত ডেকে আনতে পারে।
অর্থাৎ, ঠান্ডা কমলেও শীতের বিদায়ঘণ্টা এখনই বাজাতে পারছে না হাওয়া অফিস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.