সরকারি আধিকারিককে শারীরিক হেনস্থা করায় অভিযুক্ত শাসকদলের নেতা-কর্মীরাই। মানবাজার ২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও-কে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক ব্লক নেতা-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ব্লক অফিসের ‘অনন্যা ভবন’ চত্বরে ওই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার থানায় তৃণমূলের মানবাজার ২ ব্লক নেতা উমাকান্ত মাহাতো-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও পার্থ কর্মকার। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সমবায় সমিতির মাধ্যমে ব্লকের মহিলাদের উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের পরিকল্পনা করতে স্বনির্ভর দলের মহিলাদের মধ্যে থেকে ১৫ জনকে নিয়ে একটি সমিতি গঠন করতে মঙ্গলবার ওই বৈঠকে গিয়েছিলেন জয়েন্ট বিডিও প্রহ্লাদ বিশ্বাস। অভিযোগ, সভা শেষে গাড়িতে ওঠার সময় কয়েকজন মহিলা ও পুরুষ প্রহ্লাদবাবুকে ঘিরে ধরেন তাঁর হাতে কয়েকজনের নাম লেখা একটি কাগজ ধরিয়ে দেয়। তাঁরা বৈঠকে ঠিক করা নামের তালিকা ছিঁড়ে ফেলে ওই নতুন নামগুলি অন্তর্ভূক্ত করার জন্য দাবি জানান। প্রহ্লাদবাবু তাদের এ নিয়ে লিখিত ভাবে আপত্তি জানাতে বললে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। প্রহ্লাদবাবু বলেন, “ওইদিন আমাকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ ও হেনস্থা করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি বিডিওকে জানিয়েছি।” বিডিও বলেন, “কৃতকর্মের জন্য অভিযুক্তেরা জয়েন্ট বিডিও-র কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলে থানায় অভিযোগ জানাতাম না।” মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া সদর) সৌম্যজিত্ দেবনাথ বলেন, “জয়েন্ট বিডিও-র গায়ে হাত তুলে ওরা ঠিক কাজ করে নি।”
ওই দিন ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের গীতা মাহাতো। তিনি বলেন, “জয়েন্ট বিডিওকে ঘিরে একটা গোলমাল হচ্ছিল দেখেছি। তখন আমি একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। অন্যত্র বেড়িয়ে গিয়েছিলাম। পরে আর ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়নি।”
উমাকান্তবাবুর দাবি, “জয়েন্ট বিডিও নিজের পছন্দের সদস্যদের নাম ওই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করায় মহিলারা প্রতিবাদ করেন। মহিলারা তাঁকে হেনস্তা করছে দেখে আমিই গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি। উল্টে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ হল।” তৃণমূলের মানবাজার ২ ব্লক সভাপতি প্রভাস মণ্ডলের দাবি, “তেমন কিছু ঘটেনি। জয়েন্ট বিডিও-র গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়।” |