পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে অভব্য আচরণ করার অভিযোগ ওঠার পরেই কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের এক জেলা নেতা। শুধু তিনিই নয়, তাঁর স্ত্রী-ও পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা।
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের অন্যতম সিনিয়র-সহ সভাপতি তথা পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পরেশ আচার্য ও তাঁর স্ত্রী শকুন্তলা আচার্যের ইস্তফাপত্র সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি সীমা বাউরি গ্রহণ করেছেন। দলের পাড়া ব্লক সভাপতি রামলাল মাহাতোর মন্তব্য, “কেউই দলীয় শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে নয়।” তবে পরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী-র দাবি, পারিবারিক ও শারীরিক সমস্যার জন্য তাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন।
তৃণমূল ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে অভিযোগ, ১৩ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় গার্লস হাইস্কুলের কিছু কাজের ব্যাপারে ঠিকাদারের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে তিনি বিডিও-কে পরামর্শ দিতে গিয়েছিলেন পরেশবাবু। ঘটনাটি জানতে পেরে পরের দিন সীমাদেবী ও সমিতির সহ-সভাপতি বিডিও সমীরণ বারিকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। অভিযোগ সেখানে গিয়ে তিনি সভাপতি, সহ-সভাপতি ও উপস্থিত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দীপক আচার্যের সঙ্গে তর্কাতকি করেন ও কটূ কথা বলেন। তা ভাল ভাবে নেয়নি তৃণমূল নেতারা। বিডিও অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
দল সূত্রে খবর, ক্ষুব্ধ হয়ে সীমাদেবী ও ব্লক সভাপতি রামলাল মাহাতো রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো কাছে পুরো ঘটনার কথা জানান। সে দিনই এলাকায় গিয়ে খোঁজ নেন দলের অন্যতম জেলা সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “পরেশবাবুর বিরুদ্ধে আগেই কিছু অভিযোগ এসেছিল দলের কাছে। একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়েও তিনি সমিতির কাজ পরিচালনায় কিছু সমস্যা তৈরি করছিলেন। তার পরে প্রশাসনের আধিকারিকের উপস্থিতিতে যে ভাবে তিনি সভাপতি-সহ অন্য সকলের সঙ্গে অসংসদীয় আচরণ করেন, দল তা ভাল ভাবে নেয়নি।”
দল সূত্রের খবর, বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসার পরেই স্ত্রীকে নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন পরেশবাবু। সীমাদেবী বলেন, “সমিতিতে আলোচনা না করেই বিভিন্ন কাজে পরেশবাবু মাথা গলিয়েছেন। আমরা দুর্নীতিকে প্রশয় দিতে পারি না। তারপরেও বিডিওর দফতরে তিনি যা আচরণ করেছেন, তা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল বলেন দলীয় নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছিল।”
তবে পরেশবাবু দাবি করেছেন, “দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকায় সমিতির কাজে সময় দিতে পারছিলাম না। দলীয় নেতৃত্বের কাছে আগেই কর্মাধ্যক্ষের পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। স্ত্রীও সমিতির কাজে সময় দিতে পারছিল না। তাই ইস্তফা দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।” |