এক দিকে, চোটের কারণে আসন্ন এশিয়া কাপের দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। অন্য দিকে, একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলের রিপোর্টে তাঁর নাম পরোক্ষ ভাবে আইপিএল স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া।
দুইয়ে মিলে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ভারতীয় ক্রিকেটের প্রধান আলোচ্য বস্তু এ ভাবেই হয়ে দাঁড়ালেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি!
ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে এ দিন সন্ধেয় এক সরকারি ই-মেল মারফত জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এশিয়া কাপে ধোনি নেই। তাঁর সাইড স্ট্রেইন হয়েছে। ধোনির জায়গায় এশিয়া কাপে অধিনায়কত্ব করবেন বিরাট কোহলি। আর ভারত অধিনায়কের পরিবর্ত হিসেবে টিমে ঢুকছেন দীনেশ কার্তিক। যিনি উইকেটকিপিংও করবেন। যে ঘোষণার পরপরই ক্রিকেটমহলে আলোচনা শুরু হয়ে যায় ধোনি আচমকা এ ভাবে নিজেকে এশিয়া কাপ থেকে সরিয়ে নিলেন কেন? প্রশ্ন উঠে পড়ে, কারণ কি শুধুই চোট, নাকি কিছু দিনের জন্য নিজেকে ‘অফ মোড’-এ নিয়ে যেতে চাইছেন ধোনি? উপূর্যপুরি বিদেশে সিরিজ হারের পর নিজেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন প্রচারমাধ্যমের ‘সার্চলাইট’-এর বাইরে? পাশাপাশি বলাবলি শুরু হয়ে যায় যে, অধিনায়কের চোট কতটা গুরুতর? মার্চ মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি খেলতে পারবেন তো?
জল্পনা আরও বাড়ে নিউজিল্যান্ড থেকে সদ্য ফেরত টিম ইন্ডিয়ার কোনও কোনও সাপোর্ট স্টাফের কথায়। বরং আশ্চর্য হয়ে সাপোর্ট স্টাফের একজন ফোনে বলে দিলেন, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিতীয় টেস্টের পর ধোনির চোট লেগেছে, এমন খবর তাঁর কাছে নেই। এই প্রথম শুনছেন! ক্রিকেটমহলের একটা অংশে বলাবলি শুরু হয়ে যায় যে, বোর্ড অধিনায়ককে বিশ্রাম দিতে চাইছে। চাইছে, নানা রকম সমালোচনায় বিদ্ধ ‘ক্যাপ্টেন কুল’-কে কয়েক দিনের জন্য লোকচক্ষুর অন্তরালে পাঠিয়ে দিতে। যাতে পরের পর সিরিজ খেলে চলা ধোনি অনেক তাজা ভাবে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে নামতে পারেন। রাতের দিকে বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল যদিও ধোনির চোট নিয়ে যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিলেন। |
আনন্দবাজারকে ফোনে বোর্ড সচিব বলে দিলেন, “নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে ধোনির চোটটা লেগেছিল। বল তুলতে বা কোনও কিছু একটা করতে গিয়ে। ওই দিনই টিম ফিজিওকে ধোনি নিজের চোটের ব্যাপারটা বলে। এমন কিছু মারাত্মক চোট নয়। দশ দিন মতো লাগবে ধোনির সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে ধোনি।”
ততক্ষণে অবশ্য ভারত অধিনায়ককে নিয়ে অন্য একটা বিতর্ক ধূমায়িত হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ধোনির এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়ানোর খবরের কাছাকাছি সময়েই এক সর্বভারতীয় চ্যানেল এক পুলিশ অফিসারের তদন্ত রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে দেখাতে থাকে যে, গত ১২ মে-র চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছিল বলে এক বুকির থেকে জানা গিয়েছে। যেখানে নাকি গুরুনাথ মইয়াপ্পন সংশ্লিষ্ট বুকিকে এ-ও বলেন যে, ধোনির সঙ্গে ম্যাচে কী হবে না হবে, তা নিয়ে কথা হয়ে গিয়েছে। যে প্রসঙ্গ নিয়ে ওই শো-য়ে উপস্থিত প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিষেণ সিংহ বেদী বলে দেন, “ব্যাপারটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত হোক।” কিন্তু ব্যাপারটা আপাতত চ্যানেলে অভিযোগ রিপোর্টেই আটকে, প্রামাণ্য কিছু সরকারি ভাবে বাইরে বেরোয়নি। ভারতীয় দল থেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দিন পনেরোর ছুটিতে তাঁকে ঘিরে বিবিধ সমালোচনা, এ জাতীয় বিতর্ক প্রশমিত হয় কি না, সেটাই এখন দ্রষ্টব্য। |