রুট ভেঙে চলা অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার হুগলির জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন বৈধ রুটের অটোচালকেরা। সার দিয়ে কয়েকশো অটো তাঁরা দাঁড় করিয়ে দেন ওই দফতরের সামনে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবিতে আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের (আরটিও) কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পরিবহণ দফতরের অফিসারেরাও। অবৈধ ভাবে চলা অটোর বিরুদ্ধে টানা অভিযানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “অবৈধ ভাবে অন্য রুটে চলা গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্ধ করা যায়নি। এ বার জোরদার অভিযান করে তা বন্ধ করা হবে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলিতে হাজার দেড়েক অটো চলে। চাঁপদানির পলতাগড় থেকে ত্রিবেণী পর্যন্ত বিভিন্ন রুটে প্রায় সাতশো অটো রয়েছে। ওই সমস্ত জায়গার অটোচালকদের অভিযোগ, কিছু দিন আগে আরামবাগ, খানাকুল, হরিপাল, তারকেশ্বর, সিঙ্গুর-সহ নানা গ্রামীণ এলাকায় যাত্রী পরিবহণের জন্য নতুন করে কিছু অটোর পারমিট দেয় প্রশাসন। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় না চলে বহু অটো শহরাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে, প্রয়োজনের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বৈধ অটোতে যাত্রী কমেছে। তাঁদের উপার্জন কমছে। বাধা দিতে গেলে বচসা বাধছে। মারামারির উপক্রম হচ্ছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, ওই সমস্ত অটো গ্রামাঞ্চলে না চলায় সেখানেও যানবাহনের সমস্যাও মিটছে না।
গোটা বিষয়টি নিয়ে বৈধ রুটের অটোচালকেরা বেশ কিছু দিন ধরেই আরটিও থেকে শুরু করে জেলাশাসক, পুলিশ সমস্ত দফতরেই চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ভাবে দু’একবার বেআইনি ভাবে চলাচল করা অটো ধরে জরিমানা করা ছাড়া প্রশাসন কিছুই করেনি বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘হুগলি জেলা বৈধ অটো বাঁচাও কমিটি’র নামে একটি সংগঠনও তৈরি হয়েছে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিএউসি-র নেতৃত্বে।
এ দিন পলতাঘাট থেকে ত্রিবেণী পর্যন্ত বিভিন্ন রুটের কয়েকশো অটো মিছিল করে চুঁচুড়ায় ঢোকে। শুরু হয় বিক্ষোভ। বৈধ অটো বাঁচাও কমিটির সভাপতি আমজাদ আলি বলেন, “অবৈধ অটোর দৌরাত্ম্য যে ভাবে বাড়ছে, তাতে সব নিয়মকানুন মেনে এবং সরকারকে যাবতীয় কর দিয়েও আমাদের পেটে লাথি পড়ছে। মর্জিমতো রাস্তার ধারে যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করাচ্ছে ওরা। প্রশাসন কেন কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেটা দুর্বোধ্য।” আরটিও সৈকত দাস বলেন, “রুট ভেঙে অনেক গাড়ি চলছে, এটা সত্যি। ওই সমস্ত অটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অনেকবারই জরিমানা করা হয়। এটা পুরোপুরি বন্ধ করতে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” |