নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর রাতে একটি মাটির ঘর ভেঙে ঢুকে পড়ল পুলিশের গাড়ি। মাটির চাঙড় খসে জখম হলেন ঘুমিয়ে থাকা এক দম্পতি। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে পোলবার রামনগর ঘোষপুকুরে। গাড়িটি উদ্ধার করতে গিয়ে রাত থেকেই দফায় দফায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পুলিশ অফিসাররা আহত দম্পতির চিকিৎসার খরচ এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “মনে হচ্ছে, যান্ত্রিক গোলমালেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। তবে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চালকের কোনও দোষ থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁকে আটক করা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়িটি পুলিশে ভাড়া খাটে। ওই রাতে চুঁচুড়ায় পুলিশ লাইনে কাজ মেটানোর পরে চালক বাবাই চট্টোপাধ্যায় গাড়ি নিয়ে পোলবার আলিনগরে নিজের বাড়িতে বাড়িতে ফিরছিলেন। সেই সময়েই ঘোষপুকুরের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি প্রথমে একটি পাঁচিলে ধাক্কা মারে। তার পরে রাস্তার উল্টো দিকে হুড়মুড়িয়ে ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাড়ির মালিক অরুণ এবং তাঁর স্ত্রী ময়না মাঝি মেঝেতে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁদের ছেলে পাপাই ঘুমোচ্ছিলেন তক্তপোষে। তখনই ওই দুর্ঘটনা। |
পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। ইনসেটে, ধাক্কা গাড়ির। ছবি: তাপস ঘোষ। |
পাপাই বলেন, “প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি, একটা গাড়ি পাঁচিল ভেঙে ঘরের মধ্যে অনেকটা ঢুকে এসেছে। বাবা-মা দু’জনের গায়েই মাটির চাঙর খসে পড়ে।” দুর্ঘটনার পরেই চালক গা-ঢাকা দেন। গাড়ির শব্দে এবং পাপাইয়ের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা বেরিয়ে আসেন। ওই দম্পতিকে গ্রামবাসীরাই চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করান।
রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ওই ঘর মেরামত ও আহতদের চিকিৎসার খরচের দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভের মুখে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি না নিয়েই পুলিশ ফিরে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে পোলবা থানার ওসি অতীশ দাস বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ফের দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামের লোকজন। ঘণ্টা দু’য়েক ধরে বিক্ষোভ চলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকার জন্যই ওই ঘটনা। অরুণবাবু যতদিন পর্যন্ত সুস্থ না হচ্ছেন, ততদিন ওই পরিবারের সংসার চালানোর খরচ দেওয়ারও দাবি ওঠে পুলিশের কাছে। শেষে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা রণে ভঙ্গ দেন। এর পরেই গাড়িটিকে উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। |