|
|
|
|
ত্রিপুরায় মমতার প্রার্থী মুনমুনের দেওর |
আশিস বসু • আগরতলা
২০ ফেব্রুয়ারি |
লোকসভা ভোটে ত্রিপুরা (পূর্ব) আসনে তৃণমূল প্রার্থী হতে চলেছেন সুচিত্রা সেনের জামাই ভরত দেববর্মার ভাই জিষ্ণু দেববর্মা। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে তেমনই জানা গিয়েছে।
মমতা ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটে দেশ জুড়ে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। রাজ্যের বাইরে, বিশেষত উত্তর-পূর্বে বাড়তি নজর রয়েছে তাঁর। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলার জনসভা করার কথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর। ওই জনসভাতেই প্রার্থী হিসেবে জিষ্ণুর নাম তিনি ঘোষণা করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সুচিত্রা-কন্যা মুনমুন ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৃণমূল নেত্রীর। মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ত্রিপুরা (পূর্ব) আসনে প্রার্থী হিসেবে একটা সময়ে মুনমুনের স্বামী তথা ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য ভরতকেই চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু শারীরিক কারণে ভরত ভোটের ধকল নিতে চাননি। তখন ভরতের ভাইকেই প্রার্থী করার কথা ভাবেন তিনি।
আগরতলারই বাসিন্দা জিষ্ণু মাঝে অন্য দু-একটি দলে নাম লেখালেও রাজ্য রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত মুখ নন। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এই পরিচিত মুখ না হওয়াটাই জিষ্ণুর সুবিধে। তা ছাড়া তাঁকে প্রার্থী করলে ভোটব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে দু’দিক থেকে সুবিধে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এক দিকে উপজাতি ভোট যেমন পাওয়া যাবে, তেমনই তলায় তলায় কাজ করবে সুচিত্রা সেন আবেগ। কারণ, সুচিত্রা শুধু বাংলায় নয়, ত্রিপুরাতেও সমান আদৃত।
ত্রিপুরায় মোট দু’টি লোকসভা আসন, উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ত্রিপুরা (পূর্ব) ও সাধারণের জন্য ত্রিপুরা (পশ্চিম)। পূর্ব আসনের মধ্যে রয়েছে উত্তর ত্রিপুরা জেলা, উনোকোটি, ধলাই, গোমতী ও দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার অংশবিশেষ। ১৯৮০ সাল থেকেই সিপিএমের বাজুবন রিয়াং এখানকার সাংসদ। মাঝে এক বার অবশ্য রিয়াং হেরে যান ত্রিপুরার মহারাজা তথা কংগ্রেস প্রার্থী কিরীট বিক্রম দেববর্মার কাছে। পশ্চিম আসনে প্রার্থী কে হবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তৃণমূলের রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী-সহ একাধিক নাম দলনেত্রীর তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বিবেচনায় রয়েছে। এই আসনে সিপিএমের বর্তমান সাংসদ খগেন দাস চার বারের বিজয়ী।
মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, ভরত বা জিষ্ণুর আগে উপজাতি নেতা হিসেবে এই আসনে মমতার প্রথম পছন্দ ছিলেন একদা জঙ্গি নেতা, বর্তমানে বিধায়ক বিজয় রাঙ্খল। রাঙ্খলের দল আইএনপিটি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়ে রাঙ্খল যাতে তৃণমূলে যোগ দেন, সে ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছিল। কিন্তু রাঙ্খল কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়তে রাজি হলেও আইএনপিটি-কে তৃণমূলে মিশিয়ে দিতে রাজি নন। তিনি চেয়েছিলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থী হতে। কিন্তু রাজ্যে ভোটে লড়তে নেমে নিজেদের প্রতীকেই সরাসরি ভোটারদের কাছে পৌঁছতে চায় তৃণমূল। সেই কারণেই রাঙ্খলের নাম বাদ দেওয়া হয়। এর পরেই প্রথমে ভরত তার পর জিষ্ণুর নাম উঠে আসে। যদিও তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের দাবি, ২৫ তারিখ মমতার সভায় রাঙ্খলও হাজির থাকবেন এবং তিনি জিষ্ণুকে সমর্থন করবেন। জিষ্ণুর জন্য প্রচারে ত্রিপুরায় মুনমুনও আসবেন বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। |
|
|
|
|
|