মোদীর ফোনে সুর বদল, রাজীব
হত্যাকারীদের শাস্তি চায় বিজেপি
ভোটের ঘূর্ণি পিচে রাতারাতি ডিগবাজি বিজেপির।
রাজীব গাঁধীর সাত খুনিকে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় কাল পর্যন্ত প্রায় মুখ বুজে থাকলেও আজ তাদের শাস্তি দাবি করল বিজেপি। কাল জয়ললিতা যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেসকে প্যাঁচে ফেলতে চেয়েছিলেন, তখন তাতে সুর মিলিয়েছিল বিজেপি। উদ্দেশ্য ছিল কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলে জয়ললিতাকে হাতে রাখা। কিন্তু রাহুল গাঁধী যখন রাজীব-আবেগকে কাজে লাগিয়ে এ-র বিরোধিতা করে আসরে নেমে পড়লেন, তখন নাটকীয় ভাবে বিজেপিও তার সুর বদলে সাবেকি অবস্থানে ফিরে এল। আর এর জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদীর একটি টেলিফোন। অরুণ জেটলিকে ফোন করে মোদী বলেন, কেউ সংকীর্ণ রাজনীতি করতে চাইলে করুক। কিন্তু বিজেপি যদি ভোটের আগে অখণ্ড ভারতের অবস্থান থেকে সরে আসে, তা হলে তো কংগ্রেসেরই বাড়তি লাভ হবে। কাল শরিক অকালি দল কোনও শিখ সন্ত্রাসবাদী সম্পর্কে নরম মনোভাব নিলে বিজেপি কি করবে?
গত কাল পর্যন্ত অনেক জোরাজুরিতেও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি বিজেপি নেতৃত্ব। আফজল গুরু থেকে আজমল কসাবের ফাঁসি নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে সরব বিজেপি রাজীব-হত্যার আসামিদের ফাঁসি নিয়ে বরাবর নীরব ছিল। বিজেপির এই কৌশলের নেপথ্যে ছিল ভোট-রাজনীতি। জয়ললিতা এনডিএ-র পুরনো শরিক। ভোটের পরে ফের শরিক হতে পারেন। তাই তাঁর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না-করে ‘হিন্দি বলয়ের দল’ বিজেপি দ্রাবিড় রাজনীতিরই শরিক হতে চেয়েছিল।
কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল সুর। আর তার নেপথ্যেও ভোটের বাধ্যবাধকতা। অরুণ জেটলিকে ফোন করে মোদী বলেন, জয়ললিতা তাঁর রাজনীতি করছেন। কিন্তু বিজেপি কেন তার সাবেকি অবস্থান থেকে সরে আসবে? কেন সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করা হবে? মোদী বলেন, বিজেপি অবস্থান বদলালে ভুল বার্তা যাবে। কংগ্রেস নেতারা কাল থেকেই বলতে শুরু করেছেন, আফজল গুরুর ফাঁসির দাবিতে সরব বিজেপি এখন চুপ কেন। তার থেকেও বড় কথা, রাজীব-আবেগ পুঁজি করে আসরে নেমে পড়েছেন রাহুলও।
বিজেপির এক শীর্ষ সূত্রের মতে, লালকৃষ্ণ আডবাণী-সুষমা স্বরাজের মতো নেতারা শরিকদের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে জোট-রাজনীতিকে বরাবর অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। সে জন্যই গত কাল এই বিষয়ে নরম মনোভাব নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজ মোদীর ফোন পাওয়ার পরেই দলের সেই অবস্থান বদলে আসরে নামেন অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, “মৃত্যুদণ্ড বিলোপ করা নিয়ে অনেকে সরব হচ্ছেন। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ যে ভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে, তার পর এ নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা সবার আগে। দল মনে করে রাজীব-খুনিদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
বিজেপি নেতৃত্বের মতে, ভোট-স্বার্থ সবার আগে। সঙ্ঘ নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নির্বাচনের পর যারা শরিক হতে পারে, তাদের প্রতি সদর্থক বার্তা দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। যে কারণে পশ্চিমবঙ্গের জনসভায় রাজ্য নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেও মোদী-রাজনাথ নরম মনোভাবই নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন ভোটের মুখে বন্ধু জয়ললিতাকেও ছেড়ে কথা বলতে রাজি নন মোদী। মোদীর যুক্তি, ভোটের আগে এমন কোনও অবস্থান নেওয়া উচিত নয়, যাতে নির্বাচনে তার আঁচ পড়ে। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন কাল অকালি দল পঞ্জাবের কোনও সন্ত্রাসবাদী সম্পর্কে নরম মনোভাব দেখালে বিজেপি কি তা সমর্থন করবে?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.