হামলা-অপহরণের চেষ্টার পরে এ বার ব্লেডের আঘাত! তা-ও পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপের মধ্যেই!
মঙ্গলবার সল্টলেকের সরকারি আবাসনে এক আমলার ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে মারধর এবং ছোট মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার পরে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয় ওই আমলার পরিবারকে। বৃহস্পতিবার সেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপের মধ্যেই ওই আমলার স্ত্রীর গায়ে ব্লেড চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা নিয়ে রাত পর্যন্ত অন্ধকারে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা।
কী ঘটেছিল? পুলিশ জানায়, মঙ্গলবারের ঘটনার পর থেকেই ওই পরিবারের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ওই আমলার বড় মেয়েকে সরকারি গাড়িতে চাপিয়ে স্কুলে পৌঁছে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ তাকে আনতে যান আমলার স্ত্রী। তখনও সঙ্গে পুলিশি প্রহরা ছিল। পুলিশের দাবি, ওই মহিলার নির্দেশ মতোই স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন পুলিশকর্মী। ছুটির পরে মেয়েকে নিয়ে বেরোনোর সময়ে এক অভিভাবক ওই আমলার স্ত্রীর চামড়া কেটে রক্ত বেরোতে দেখেন। আমলার স্ত্রীকে তা বলতেই তিনি ভয়ে চিত্কার করে ওঠেন। এর পরেই পুলিশ ছুটে যায়। |
পুলিশ জানিয়েছে, ওই আমলার স্ত্রীর শরীরে দু’টি ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। প্রাথমিক চিকিত্সার পরে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের চিকিত্সকেরা গিয়ে তাঁকে দেখে আসেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ব্লেড জাতীয় অস্ত্র দিয়েই আঘাত করা হয়েছে মহিলাকে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে ওই আমলার ফ্ল্যাটে হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনার পরেও পুলিশ নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাতে পারেনি। তবে আমলার স্ত্রী বছর পঁচিশের এক যুবকের বিবরণ দিয়েছিলেন। তাঁর ছোট্ট মেয়েও এক ‘কাকু’র কথা জানিয়েছিল। সেই অনুযায়ী ছবিও আঁকানো হয়। যদিও তা থেকে নির্দিষ্ট কোনও সূত্র মেলেনি। তার পরে এ দিন ফের ওই মহিলার উপরে হামলার ঘটনায় কিছুটা বিভ্রান্ত তদন্তকারীরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্কুল চত্বরে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেখান থেকেও নির্দিষ্ট কোনও সূত্র এখনও মেলেনি। এই লাগাতার হামলার পিছনে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকতে পারে বলে পুলিশের তদন্তকারীরা মনে করছেন।
লাগাতার এমন হামলার ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কগ্রস্ত ওই আমলার পরিবার। ফ্ল্যাটে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। অসুস্থ থাকায় মহিলা এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি। তবে ওই আমলা জানিয়েছেন, কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতার কথা তিনি মনে করতে পারছেন না। দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করার ব্যাপারে সরকার ও পুলিশের উপরে আস্থা রাখছেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন হামলার খবর পেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডি নিজে ফোন করে ওই আমলার সঙ্গে কথা বলেন।
স্কুল চত্বরে এমন ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল-কর্তৃপক্ষও। ভাইস প্রিন্সিপাল রেখা বৈশ্য বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। সিসিটিভিও লাগানো রয়েছে। তবুও নিরাপত্তা আরও বাড়ানো যায় কি না, তা দেখা হবে।” |