ব্যঙ্গচিত্র কাণ্ডে থানার সব নথি চাইল হাইকোর্ট
রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ব্যঙ্গচিত্র কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করা সত্ত্বেও অম্বিকেশ মহাপাত্র এখনও তা পাননি। এই অবস্থায় ওই মামলার যাবতীয় কাগজপত্র পেশ করার জন্য পূর্ব যাদবপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট সব নথিপত্র আদালতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও।
ওই মামলায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ও বিস্তর টানাপোড়েনের পরে মানবাধিকার কমিশন সুপারিশ করেছিল, রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে অম্বিকেশবাবুকে ৫০ হাজার টাকা দিক। কিন্তু সরকার সেই সুপারিশ মানেনি। অম্বিকেশবাবু শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টে মামলা করেন। এ দিন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি তাঁর নির্দেশে বলেন, অম্বিকেশবাবুকে গ্রেফতার করার পরে পূর্ব যাদবপুর থানায় যে-এফআইআর করে তদন্ত হয়েছিল, তার সমস্ত কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে হবে। যে-সব নথিপত্রের ভিত্তিতে কমিশন ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করেছিল, তা-ও তলব করেছে উচ্চ আদালত। এ দিন অম্বিকেশবাবুর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। ৪ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
২০১৩ সালের ১২ এপ্রিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের শিক্ষক অম্বিকেশবাবু নিজেদের সমবায় আবাসনের ‘মেল’ থেকে একটি ব্যঙ্গচিত্র পাঠান তাঁর বন্ধুকে। সেই ব্যঙ্গচিত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটি চরিত্র করা হয়েছিল। ওই রাতেই এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ তাঁর উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষক অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁকে মারধর করে। এর মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। অম্বিকেশবাবু এবং তাঁর পড়শি তথা ওই সমবায় আবাসনের সভাপতি সুব্রত সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করে পূর্ব যাদবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় দি’জনকেই। রাত ১২টার পরে তাঁদের নামে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। সারা রাত থানার লক-আপে রেখে পরের দিন তাঁদের আদালতে হাজিক করানো হয়।
এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। পুলিশ তখন দাবি করে, এলাকার মানুষ আক্রমণ করেছে বলে খবর আসায় তারা অম্বিকেশবাবুদের উদ্ধার করতেই ওই আবাসনে গিয়েছিল। কিন্তু কেন তাঁদের সারা রাত লক-আপে রাখা হল, তার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পুলিশ। রাজ্য মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের পরে তারা অম্বিকেশবাবু ও সুব্রতবাবুকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করে সরকারের কাছে। সেই সঙ্গে ওই রাতের ঘটনায় যুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ওই দুই সুপারিশের কোনওটিই মানেনি। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় মানবাধিকার কমিশনকে একটি চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, সরকার তাদের সুপারিশ মানছে না।
অম্বিকেশবাবুর মতো মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ না-মানার অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শিলাদিত্য চৌধুরী। বেলপাহাড়ির এক জনসভায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তদন্তের পরে শিলাদিত্যবাবুকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে মানবাধিকার কমিশন। কিন্তু সেই সুপারিশও মানেনি রাজ্য সরকার। সেই মামলাটিরও শুনানি চলছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.