সিগন্যাল নেই, দুর্ঘটনায় অশান্তি জাতীয় সড়কে
মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেই দাবি মেটেনি। লরির ধাক্কায় দুই মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যুর পরে ফের সেই দাবি তুলে সরব হলেন সেনর্যালে মোড় এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্ঘটনার পরে বিক্ষোভ-অবরোধ শুরু করে জনতা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় রাস্তার পাশে পুলিশের একটি বিশ্রামাগারে। ইট-পাটকেল ছোড়া হয় পুলিশকে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। লরিটিকে আটক করা হয়।

পুড়ছে পুলিশের বিশ্রাম নেওয়ার ঝুপড়ি ঘর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ওই চৌমাথা মোড়ের কাছে ট্রাফিক পুলিশ হাত দেখানোয় দাঁড়িয়েছিলেন দু’টি মোটরবাইকের চার জন আরোহী। পিছন থেকে আসা একটি দশ চাকার পণ্যবাহী লরি সম্ভবত পুলিশের হাত দেখানো দেখতে পায়নি। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা লরিটি ওই দু’টি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লরির সঙ্গে খানিকটা টানা হয়ে যান চার মোটরবাইক আরোহীই। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বি কে বর্মা (৫৮) ও সঞ্জিত নাগ (২৫) নামে দু’জনের। বাকি দু’জন জখমকে আসানসোল হাসপাতালে পাঠানো হয়। লরিটি পালিয়ে যায়। পরে সেটিকে আটক করা হয় রানিগঞ্জের পঞ্জাবি মোড়ে। আটক করা হয় চালক-খালাসিকে।
দুর্ঘটনার ঠিক পরেই এলাকার কিছু বাসিন্দা সেখানে পৌঁছন। শুরু হয় বিক্ষোভ। ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন এলাকাবাসী। সার দিয়ে পণ্যবাহী লরিগুলি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরে। এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশদের বিশ্রাম নেওয়ার ঘরটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছয় পুলিশের বড় বাহিনী।


জনতাকে তাড়া পুলিশের।


দুর্ঘটনাগ্রস্ত মোটরবাইক।
ছবি: শৈলেন সরকার।
পুলিশকে দেখে ক্ষুব্ধ জনতা ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ প্রথমে জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠায় পুলিশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “এখানে কোনও আলোর সিগন্যালের ব্যবস্থা নেই। ফলে পুলিশ হাত দেখালে দূর থেকে লরির চালকেরা দেখতে পান না। গাড়িও থামাতে পারছেন না চালকেরা। সেই জন্য প্রায় প্রতিদিনই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাঁরা সেখানে একটি ট্রাফিক সিগন্যালের আলো দেওয়ার ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।”
শুধু এই মোড়ই নয়, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের নানা মোড়েই সিগন্যালের বাতি না থাকা নিয়ে নানা সময়ে সরব হয়েছেন শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা। অনেক মোড়েই এ জন্য মাঝে-মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি তাঁদের।

উত্তেজিত জনতাকে সামলাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
তবে সেই দাবি এখনই মেটার কোনও সম্ভাবনার কথা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মেলেনি। এ দিনের দুর্ঘটনার পরে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক, সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার চাডিহা বলেন, “আমরা ওখানে ট্রাফিক সিগন্যালের আলো বসানোর জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ হবে, তাই তাঁরা এখন সেখানে এ সব তৈরি করবেন না বলে জানিয়েছেন।’’ এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রকল্প আধিকারিক কৃষ্ণ মুরারী জানান, ওখানে একটি উড়ালপুল তৈরি করার প্রস্তাব হয়েছে। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ হবে। তার আগে সেখানে আর কিছু নতুন করে তৈরি করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.