শ্বশুরবাড়িতে অশান্তির জেরে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বধূ। মাসখানেক সেখানে কাটানোর পরে বাবার কথায় মঙ্গলবার বিকেলে ফিরে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। বুধবার সাত-সকালে সেই শ্বশুরবাড়ি থেকেই উদ্ধার হল মেয়ের মৃতদেহ। রঘুনাথগঞ্জ থানার তেঘরি গ্রামের ঘটনা। মৃতার নাম দীপালি ঘোষ (২১)। বাপের বাড়ির লোকেরা স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন। এমনকী মৃতার পাঁচ বছরের মেয়েও জানাচ্ছে, তার বাবাকে খুন করতে দেখেছে সে। ছোট্ট আলোর কথায়, “মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় রাতে। দেখি বাবা মাকে মারছে। মা কান্নাকাটি করছে। এক সময় বাবা একটা বালিশ চেপে ধরল মায়ের মুখের উপর। সেই থেকেই মা আর কথা বলছে না।”
আলো ও তার ভাই সকাল থেকেই মামার বাড়িতে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট থেকে অবশ্য এটিতে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ।
মৃতার বাবা বিহারীলাল ঘোষ জানান, তাঁর তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছোট দীপালি। বছর আগে আটেক আগে তেঘরিতে সৌমেন ঘোষের সঙ্গে দীপানির বিয়ে হয়। দু’টি ছেলে-মেয়েও হয় তাদের। এরপরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। বিহারীবাবুর অভিযোগ, জামাই মদ্যপ। প্রায়শই মারধর করত মেয়েকে। মেয়ে আমার কাছে পালিয়ে আসত।” তিনি বলেন, “গত এক মাস আমার কাছেই ছিল মেয়ে। শ্বশুরবাড়ি যেতে রাজি ছিল না। আমিই খুব করে বুঝিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তেঘরিতে দিয়ে আসি। ওর স্বামী ,শ্বশুরকে বার বার হাত ধরে বলি মানিয়ে নিতে। কিন্তু রাত পেরোতেই বুধবার সকালে এক প্রতিবেশির বাড়ি থেকে টেলিফোনে মেয়ের মৃত্যুসংবাদ জানতে পারি। গিয়ে দেখি মেয়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বাড়ির বারান্দায়। ছিল শুধু শাশুড়ি। মেয়ে দলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানায় শাশুড়ি। তবে, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, “মেয়েকে রাতে পরিকল্পনা করে স্বামী , শ্বশুর , শাশুড়ি ও অন্যরা মিলে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে।” |