জঙ্গলমহলের নদী-ভাঙন রোধে বরাদ্দ দেড়শো কোটি
ঙ্গলমহলের পাঁচটি ব্লকের নদী-ভাঙন রোধে দেড়শো কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সেচ দফতর। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের চোরচিতায় এই ঘোষণা করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচমন্ত্রী জানান, সুবর্ণরেখা তীরবর্তী নয়াগ্রাম ব্লকের ৮টি মৌজা, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ১২টি মৌজা, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের ২টি মৌজা এবং কংসাবতী নদীর তীরবর্তী ঝাড়গ্রাম ব্লকের ৪টি মৌজা ও বিনপুর-১ ব্লকের ২টি মৌজায় ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ করার জন্য প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। এ জন্য দেড়শো কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, ভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধের পাশাপাশি, এলাকাবাসীর যাতায়াতের জন্য নদী পাড় সংলগ্ন মোরাম রাস্তা তৈরি করা হবে।
গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের চোরচিতা গ্রামে সুবর্ণরেখার ভাঙন।
এ দিন দুপুরে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের চোরচিতা গ্রামে সুবর্ণরেখা নদীর ভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন রাজীববাবু। ওই অনুষ্ঠানে সেচমন্ত্রী জানান, রাজ্যে তাঁদের সরকার ক্ষমতার আসার পরে মাত্র আড়াই বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নদী ভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধে ইতিমধ্যেই ১৮৫ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। এবার শুধুমাত্র জঙ্গলমহলের নদী ভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধে আরও দেড়শো কোটি টাকা খরচ করা হবে। রাজীববাবু বলেন, “জঙ্গলমহল হল মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের জায়গা। এখানকার নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন সমস্যা দীর্ঘদিনের। জঙ্গলমহলের নদী ভাঙন-রোধ প্রকল্প রূপায়ণে প্রয়োজনে অন্য যে সব জেলা বেশি বরাদ্দ পেয়েছে, তাদের বরাদ্দ কেটে জঙ্গলমহলের ভাঙন মোকাবিলায় খরচ করা হবে।” মন্ত্রী এ দিনও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত না হওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকারকে দায়ী করে বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদিত হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। আমরা নতুন সরকারের অপেক্ষায় আছি। আগামী দিনে যেভাবেই হোক ১৬০০ কোটি টাকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আমরা রূপায়িত করবই।”
প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন চোরচিতায় শিলান্যাসের পরে সেচমন্ত্রী জানান, সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী চোরচিতা থেকে বাঁশঝোড় মৌজায় ২৭০০ মিটার (২.৭ কিমি) দীর্ঘ নদীপাড় এলাকায় বোল্ডার দিয়ে ভাঙন ও ভূমিক্ষয় রোধ করা হবে। সংলগ্ন মোরাম রাস্তাটিও তৈরি করা হবে। এজন্য খরচ হচ্ছে ৮কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, প্রতি বছর অতিবৃষ্টি হলেই সুবর্ণরেখার নদীপাড় ভেঙে চোরচিতা ও সংলগ্ন গ্রামগুলি বানভাসি হয়ে যায়। নদীভাঙন ও ভূমিক্ষয়ের দরুণ জনবহুল এই গ্রামের বিস্তীর্ণ অংশ নিশ্চিহ্ন হতে বসেছিল। গত ১০ বছরে প্রায় ১৫ হেক্টর চাষযোগ্য উর্বর জমি ও কয়েকশো ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছরই একটু একটু করে গ্রামটিকে গ্রাস করছে সুবর্ণরেখা। নদীর করাল গ্রাসে এলাকার প্রায় বারো হাজার মানুষ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নদী ভাঙন ঠেকানোর দাবিতে বাম জমানায় বহু আন্দোলন করেছেন এলাকাবাসী। অবশেষে ভাঙন রোধে প্রকল্প রূপায়নের জন্য শিলান্যাস করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ দিন বিকেলে নয়াগ্রাম ব্লকের বড়নিগুই পঞ্চায়েতের নিগুই গ্রামে একটি সরকারি মডেল স্কুলের দ্বারোদ্ঘাটন করেন সেচমন্ত্রী। পরে নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখার ভাঙন কবলিত ডাহি এলাকা পরিদর্শন করেন রাজীববাবু। দু’টি অনুষ্ঠানেই ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, জেলা পরিষদের কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ প্রমুখ।

—নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.